এবারের বাজেটে কোনো চমক থাকছে না: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
Published: 31st, May 2025 GMT
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, দুঃখজনকভাবে এবারের বাজেটও গতানুগতিক হতে যাচ্ছে। খেলাপি ঋণ আদায়, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত ও করের আওতা বাড়ানোর মতো নতুন কিছু নেই। ফলে এবারের বাজেটে নতুন কোনো চমক থাকছে না।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, বর্তমানে যে প্রকল্পগুলো সরকারের কাছে রয়েছে তা অতিমূল্যায়িত। সেগুলোর ৪০ শতাংশ ব্যয়ই ভুয়া। অতীতের যে প্রকল্পগুলো থেকে রক্তক্ষরণ হতো সেগুলো এখনো অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।
আজ শনিবার ঢাকার এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি অয়োজিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রাক্–বাজেট ছায়া সংসদে এসব কথা বলেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি। সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী।
বিগত সরকারের আমলের দুর্নীতি, ব্যাংক জালিয়াতি, করখেলাপি ও পাচার হওয়া অর্থ জব্দের পরামর্শ দেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, এসব অর্থ জব্দ করে সেগুলো বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করা গেলে তা হতে পারে এবারের বাজেটের একটি অভিনব উৎস। আমাদের বৈদেশিক খাতে কিছুটা স্থিতিশীলতা এলেও ব্যক্তি খাতে স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগের প্রবাহ এখনো আশানুরূপ নয়। তবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের বেশ কিছু কাজের প্রশংসা করেছেন তিনি।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের রেখে যাওয়া বিদেশি ঋণের চাপ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। এই (অন্তর্বর্তী) সরকারের অন্যতম সাফল্য হচ্ছে ৫০০ কোটি (৫ বিলিয়ন) ডলার পরিশোধ করে বিদেশি ঋণের চাপ কমিয়ে আনা। কারণ, বিদেশি ঋণের চাপ বছর বছর বিলিয়ন ডলার করে বাড়ছিল। সামগ্রিকভাবে এই সরকারের সাফল্যের জায়গাটা হলো বহিঃখাত, প্রবাসী আয়, রপ্তানি, দায়দেনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা, মজুত বাড়ানো ও টাকার মূল্যমান স্থিতিশীল রাখা।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী বলেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব হয় না। বিগত সরকারের আমলে দেশে মাফিয়া অর্থনীতির শাসন ছিল। গত সাড়ে ১৫ বছরে দেশের অর্থনীতিকে চৌর্যবৃত্তির ওপর দাঁড় করানো হয়। তখন একশ্রেণির রাজনীতিবিদ, আমলা ও ব্যবসায়ীদের যোগসাজশে বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। ওই সময় প্রতিটি বাজেট ব্যবহার করা হয়েছিল লুটপাটের স্বার্থে। জাতিকে এখন সেই লুটপাটের বোঝা বহন করতে হচ্ছে।
ভবিষ্যতে বিদেশি ঋণ পরিশোধের চাপ আরও বাড়বে বলে জানান হাসান আহমেদ চৌধুরী। তিনি বলেন, বিগত সরকার আমাদের ঘাড়ে ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বৈদেশিক ঋণের বোঝা চাপিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। বর্তমানে গড়ে প্রতিবছর দুই থেকে আড়াই বিলিয়ন ডলারের ঋণ পরিশোধ করতে হচ্ছে। আগামী দিনে এই ঋণ পরিশোধের হার আরও বাড়বে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) বর্তমানে যে অস্থিরতা চলছে তাতে আগামী বাজেটে অভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধি চ্যালেঞ্জে পড়তে পারে বলে মনে করেন হাসান আহমেদ চৌধুরী। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি ও সামাজিক সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো না গেলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বাজেটও নতুন মোড়কে পুরাতন গল্পই লেখা হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন হ স ন আহম দ চ ধ র সরক র র পর শ ধ
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরের দুই মহাসড়কে যাত্রীর চাপ, বৃষ্টিতে ভোগান্তি
ঈদের বাকি আর মাত্র ৪ দিন৷ প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ করতে অনেকেই গ্রামে যাচ্ছেন। গাজীপুরের দুই মহাসড়কে যাত্রীর চাপ স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেড়েছে। তবে থেমে থেমে হওয়া বৃষ্টিতে সৃষ্টি হয়েছে জলবদ্ধতা। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। বৃষ্টি বেশি হলে ও শিল্পকারখানা একসঙ্গে ছুটি হলে ঈদে তীব্র যানজটের শঙ্কা করছেন যাত্রী ও পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।
সোমবার (২ জুন) সকাল থেকেই গাজীপুরের দুই মহাসড়কে যানবাহনের চাপ রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি হওয়ায় এবং ঈদে দীর্ঘ যানজট এড়াতে অনেকেই পরিবারের অন্য সদস্যদের আগে থেকে গ্রামে পাঠাচ্ছেন। আবার ঢাকায় ঢুকছে কোরবানির পশুবাহী গাড়ি। ফলে বৃষ্টির কারণে পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে।
গত ৪ দিনের বৃষ্টির কারণে গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভোগড়া বাইপাস ও চান্দনা চৌরাস্তাসহ আশপাশের সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে যানবাহন চলাচল ধীরগতি লক্ষ্য করা গেছে। এজন্য আশঙ্কা করা হচ্ছে বৃষ্টি না কমলে এবারের ঈদযাত্রায় ভোগান্তি পোহাতে হবে ঘরমুখো মানুষদের।
এদিকে, শিল্পঅধ্যুষিত গাজীপুরে ২১৭৬টি নিবন্ধিত কলকারখানা রয়েছে। এরমধ্যে ১১৫৪টি পোশাক কারখানা। এসব কারখানায় কাজ করছেন লাখ লাখ কর্মী। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অধিকাংশ কারখানা ছুটি হবে আগামী ৪ ও ৬ জুন৷ একসঙ্গে ছুটি হওয়ায় সড়কে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হবে এবং যানজটের সৃষ্টি হতে পারে।
উত্তরবঙ্গের প্রবেশপথ খ্যাত ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা ত্রিমোড় ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভোগরা, চান্দনা চৌরাস্তা ধরেই মূলত ঢাকা ও গাজীপুরের লোকজন বাড়ি
সাত্তার নামে এক বাসচালক বলেন, “ এমন বৃষ্টি থাকলে এবারের ঈদে যানজট সৃষ্টি হবে৷ বৃষ্টি থাকলে খানাখন্দ হয় এবং গাড়িও ধীরে চালাতে হয়৷ আশা করছি ২-১ দিনের মধ্যে বৃষ্টি কমে আসবে৷ না হলে সবারই সমস্যা হবে।”
ডেনিম এশিয়ার শ্রমিক আলাউদ্দিন বলেন, “আমাদের কারখানা আগামী ৫ তারিখ ডিউটি করে ছুটি৷ ওই দিন আশপাশের সব কারখানা একসঙ্গে ছুটি দেবে৷ এজন্য পরিবারের সদস্যদের আজ গ্রামের বাড়ি নওগাঁ পাঠিয়ে দিলাম।”
সালনা হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শওকাতুল আলম বলেন, “ঈদকে সামনে রেখে আমাদের সব সময় বাড়তি নিরাপত্তা থাকে। এবারও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীও কাজ করবে।”
ঢাকা/রেজাউল/ইভা