রাশিয়ায় একটি যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৩০ জন। একটি সেতু (হাইওয়ে ব্রিজ) ট্রেনের লাইনের ওপর ধসে পড়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয় রুশ কর্মকর্তারা এ ঘটনাকে ‘অবৈধ অনুপ্রবেশ’ বলে উল্লেখ করেছেন।

ঘটনাটি ঘটেছে রাশিয়ার ব্রায়ানস্ক অঞ্চলে, স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার দিন শেষে। রাশিয়ার এই অঞ্চল ইউক্রেনের সঙ্গে সীমান্ত লাগোয়া।

ব্রায়ানস্কের গভর্নর আলেজান্দার বোগোমাজ টেলিগ্রাম পোস্টে বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে সাতজন মারা গেছেন।’ তিনি আরও জানান, আহত ৩০ জনের মধ্যে ২টি শিশুও রয়েছে। আহত ব্যক্তিদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। দুজনের অবস্থা গুরুতর।

রাশিয়ার সংবাদমাধ্যমগুলোর খবর, ট্রেনটির চালক নিজেও প্রাণ হারিয়েছেন। সংবাদমাধ্যম রিয়া জানায়, ট্রেনটি ক্লিমভ শহর থেকে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় যাচ্ছিল। ভায়গনিচি গ্রামের কাছে পৌঁছালে লাইনের ওপর সেতু ধসে পড়ে। জায়গাটি ইউক্রেনের সীমান্ত থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার বা ৬২ মাইল ভেতরে।

আরও পড়ুনইস্তাম্বুলে রাশিয়া-ইউক্রেন আলোচনা নিয়ে ধোঁয়াশা ৮ ঘণ্টা আগে

রাশিয়ার কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন সংস্থা রোসাভতোদর জানিয়েছে, যাত্রীবাহী ট্রেনটি যে লাইন ধরে যাচ্ছিল, সেটার ওপর সেতুটি ধসে পড়ে হতাহতের এ ঘটনা ঘটে।
রিয়ার খবর বলছে, বিধ্বস্ত হওয়া ট্রেনটির ভেতর অনেকে আটকে পড়েছেন। উদ্ধারকারী ব্যক্তিরা তাঁদের উদ্ধারে কাজ করছেন। আরও কেউ আটকে পড়ে আছেন কি না, সে জন্য অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে।

এ ঘটনার পর টেলিগ্রামে একটি পোস্ট দিয়েছে মস্কো রেলওয়ে। তাতে বলা হয়েছে, রাশিয়ার পরিবহনব্যবস্থার ওপর ‘অবৈধ হস্তক্ষেপের’ ফলে সেতুটি ধসে পড়েছে। তবে এ অভিযোগের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।

ইউক্রেনের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।

আরও পড়ুনযুদ্ধবিরতি চুক্তির পরই পুতিন-জেলেনস্কির বৈঠক সম্ভব: রাশিয়া১৭ মে ২০২৫আরও পড়ুনটানা তিন রাত ধরে ইউক্রেনে ব্যাপক হামলা রাশিয়ার২৬ মে ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন ট র নট র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ