শেখ হাসিনাকে যেকোনো মূল্যে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে হবে—এমন চেষ্টা থেকেই গণ-অভ্যুত্থানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল। সেই সময় সংঘটিত সব অপরাধের ‘নিউক্লিয়াস’ ছিলেন তিনি। একই সঙ্গে শেখ হাসিনা ছিলেন সব অপরাধীরও ‘প্রাণভোমরা’।

গণ–অভ্যুত্থানের প্রায় ১০ মাস পর এই প্রথম কোনো মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করা হলো আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। গতকাল রোববার দুপুরে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল করার সময় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনা মানবতাবিরোধী অপরাধের সুনির্দিষ্ট বিবরণ তুলে ধরেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি ট্রাইব্যুনালকে বলেন, শেখ হাসিনার অধীন অন্য অপরাধীরা বিশ্বাস করতেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় টিকে থাকলে তাঁরাও টিকে থাকবেন এবং শত অপরাধ করা সত্ত্বেও তাঁরা নিরাপদে থাকবেন। আনুগত্যের জন্য পুরস্কৃতও হবেন। এই অপরাধীদের প্রাণভোমরা তিনি।

আনুষ্ঠানিক অভিযোগে শেখ হাসিনার পাশাপাশি আসামি করা হয়েছে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও পুলিশের তৎকালীন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে।

শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট ৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র ২ হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি ৪ হাজার ৫ পৃষ্ঠার এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ ২ হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার রয়েছে। আনুষ্ঠানিক অভিযোগে সাক্ষী হিসেবে রাখা হয়েছে ৮১ জনকে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের (২০২৪ সালে) পর পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে প্রথমে মিস কেস বা বিবিধ মামলা করা হয়। গতকাল আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করার পর এটি ট্রাইব্যুনালের মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হলো। এ মামলায় শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে ‘জয়েন্ট ক্রিমিনাল এন্টারপ্রাইজ এবং কমান্ড রেসপনসিবিলিটির’ অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার তিন আসামির মধ্যে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন গ্রেপ্তারের পর এখন কারাবন্দী। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক থাকায় তাঁদের বিরুদ্ধে গতকাল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন ট্রাইব্যুনাল। বিচারপতি মো.

গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ পরোয়ানা জারি করেন। ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

গতকাল দুপুরে এ মামলার শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, তিন আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। তাঁদের বিরুদ্ধে নতুন করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। ১৬ জুন আসামিদের হাজির করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। ওই দিন যদি আসামিরা উপস্থিত হন, তাহলে সেদিন থেকে বিচারের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হবে। যদি আসামিদের কেউ অনুপস্থিত থাকেন, আইন অনুযায়ী তাঁদের অনুপস্থিত ঘোষণা করার একটা ব্যাপার থাকবে।

ট্রাইব্যুনালের শুনানিতে চিফ প্রসিকিউটরের পাশাপাশি আনুষ্ঠানিক অভিযোগের উল্লেখযোগ্য অংশ উপস্থাপন করেন প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম ও মো. আব্দুস সোবহান তরফদার। ট্রাইব্যুনালের বিচার কার্যক্রমের পুরোটাই গতকাল প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

শুনানিতে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, শেখ হাসিনা ছিলেন বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী তথা নির্বাহী বিভাগের প্রধান, আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং ১৪–দলীয় জোটপ্রধান। তিনি ছিলেন সব ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের সর্বোচ্চ কেন্দ্রবিন্দু। একজন ‘ফ্যাসিস্ট শাসক’ হিসেবে সব সিদ্ধান্ত তিনি এককভাবে গ্রহণ করতেন। তাঁর সব রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন এবং সমর্থনের মাধ্যমে অধীনেরা তাঁকে সন্তুষ্ট করে তাঁর কৃপাদৃষ্টি লাভ করার জন্য সর্বদা সচেষ্ট থাকতেন।

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, জুলাই বিপ্লব চলাকালে আন্দোলন দমনে শেখ হাসিনার নেওয়া সব পদক্ষেপ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হতো তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের নেতৃত্বাধীন ‘কোর কমিটির’ বৈঠকে। আসাদুজ্জামানের ধানমন্ডির বাসায় এসব বৈঠক হতো। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রক ছিলেন তিনি। চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন পুলিশপ্রধান হিসেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্যতম নিয়ন্ত্রক এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সহযোগী ছিলেন।

পাঁচটি অভিযোগ

শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রথম অভিযোগ, গত বছরের ১৪ জুলাই গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আসাদুজ্জামান খান ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনসহ তৎকালীন সরকারের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্ররোচনা, সহায়তা ও সম্পৃক্ততায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও সশস্ত্র আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ব্যাপক মাত্রায় ও পদ্ধতিগতভাবে নিরীহ–নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর আক্রমণ করে। এতে হত্যা, হত্যাচেষ্টা, নির্যাতন ও অন্যান্য অমানবিক আচরণের ঘটনা ঘটে।

দ্বিতীয় অভিযোগ, হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের নির্মূল করার নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপি তাঁদের নিয়ন্ত্রণাধীন ও অধীন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে সেই নির্দেশ কার্যকর করেন।

তৃতীয় অভিযোগ, রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করার ঘটনায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপিকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

চতুর্থ অভিযোগ, রাজধানীর চানখাঁরপুলে আন্দোলনরত নিরীহ–নিরস্ত্র ছয়জনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

পঞ্চম অভিযোগ, আশুলিয়ায় নিরীহ নিরস্ত্র ছয়জনকে আগুনে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।

আনুষ্ঠানিক অভিযোগের সঙ্গে সাক্ষ্যপ্রমাণ হিসেবে প্রত্যক্ষদর্শী ও জীবিত ভুক্তভোগীদের সাক্ষ্য, অপরাধ সংঘটনের সময় ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজ, ড্রোন ও সিসিটিভি ফুটেজ, আসামিদের টেলিফোন সংলাপের অডিও ক্লিপ, ডিজিটাল সাক্ষ্যপ্রমাণের ফরেনসিক প্রতিবেদন, আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত তথ্য, ছবি ও ভিডিও, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদন এবং বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সংস্থা থেকে পাওয়া দাপ্তরিক নথিপত্র ইত্যাদি ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হয়েছে।

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ট্রাইব্যুনালে এখন পর্যন্ত তিনটি মিস কেস বা বিবিধ মামলা হয়েছে। এর মধ্যে গণ–অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত বিবিধ মামলায় গত ১২ মে চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। সেই তদন্ত প্রতিবেদন যাচাই–বাছাই ও পর্যালোচনার পর গতকাল তা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আকারে দাখিল করা হয়েছে।

এ ছাড়া শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ শাসনামলের সাড়ে ১৫ বছরে গুম-খুনের ঘটনায় একটি এবং ২০১৩ সালে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আরেকটি বিবিধ মামলা আছে ট্রাইব্যুনালে।

‘এই বিচার কেবল অতীতের প্রতিশোধ নয়’

ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ উপস্থাপনের আগে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, এ বিচার কেবল অতীতের প্রতিশোধ নয়। এটি ভবিষ্যতের জন্য প্রতিজ্ঞা।

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘আমরা প্রমাণ করতে চাই একটি সভ্য সমাজ, যেখানে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন থাকবে, সেখানে গণহত্যা কিংবা মানবতাবিরোধী অপরাধ সহ্য করা হবে না। যে দেশে বিচার থাকবে, সেখানে কেউ আইনের ঊর্ধ্বে থাকতে পারে না, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে থাকবে না।’

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের নারকীয় বীভৎসতা বাংলাদেশ ও বিশ্ববিবেককে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার উদগ্র বাসনায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার চূড়ান্ত অপব্যবহার করে ব্যাপকভিত্তিক ও পদ্ধতিগতভাবে আক্রমণের মাধ্যমে সংঘটিত নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞ ও সহিংসতা বাংলাদেশকে পরিণত করেছিল ৫৬ হাজার বর্গমাইল বিস্তৃত একটি বধ্যভূমিতে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আবদ ল ল হ আল ম ম ন আস দ জ জ ম ন খ ন ও ম নবত ব র ধ আস ম দ র দ খ ল কর রক ষ ক র অপর ধ র র ঘটন য় ল ইসল ম র বল ন র জন য সদস য ক ষমত উপস থ গতক ল প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

সাবেক মন্ত্রী ফরহাদ, প্রতিমন্ত্রী তাজুল, সাংবাদিক মুন্নী সাহার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা

সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও তাঁর স্ত্রী সৈয়দা মোনালিসা ইসলামের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। আর ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলামসহ তাঁর পরিবারের পাঁচজনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।

এ ছাড়া ফেনী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী ও সাবেক নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দিন আহমেদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।

পাশাপাশি সাবেক সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদারের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্র অকার্যকর করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া সাংবাদিক মুন্নী সাহা, তাঁর স্বামী কবির হোসেন, মা আপেল রানীসহ পাঁচজনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।

দুদক লিখিতভাবে আদালতকে বলেছে, সাবেক মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের বিরুদ্ধে নিজ এলাকায় কৃষিজমি, ফ্ল্যাট-প্লট ক্রয় এবং তাঁর নামে বিপুল পরিমাণ অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। তাঁরা সম্পত্তি হস্তান্তর করার চেষ্টা করছেন। এ জন্য তাঁদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজন। শুনানি নিয়ে আদালত ফরহাদ হোসেন ও তাঁর স্ত্রীর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন।

সাবেক প্রতিমন্ত্রী এ বি তাজুল ইসলামের বিষয়ে দুদক আদালতকে লিখিতভাবে জানিয়েছে, রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে অর্থনৈতিক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থেকে বিপুল পরিমাণ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। দুদকের তথ্য অনুযায়ী, তাজুল, তাঁর স্ত্রী হাসু ইসলাম, ছেলে ধানাদ ইসলাম, মেয়ে ফারাহ ইসলাম ও শামা ইসলামের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।

সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীর ব্যাপারে দুদক আদালতকে বলেছে, তাঁর বিরুদ্ধে মালয়েশিয়াতে শ্রমিক পাঠানোর নামে প্রতারণা করে বিপুল অঙ্কের অর্থ লেনদেন করার অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। তিনি বিদেশি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলে দুদক আদালতকে লিখিতভাবে জানিয়েছে। শুনানি নিয়ে আদালত তাঁর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন।

সাবেক নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দিনের ব্যাপারে দুদক আদালতকে জানিয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে ঘুষ ও ক্ষমতার অপব্যবহারসহ বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে ৫৫ হাজার ৩১০ জন রোহিঙ্গা নাগরিককে ভোটার বানানোর অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য তাঁর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজন। শুনানি নিয়ে আদালত তাঁর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন।

এ ছাড়া সাবেক সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদারের ব্যাপারে দুদক আদালতকে লিখিতভাবে জানিয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। তিনি বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। আদালত শাহীন চাকলাদারের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন।

সাংবাদিক মুন্নী সাহা ও তাঁর পরিবারের ব্যাপারে দুদক আদালতকে বলেছে, সাংবাদিক মুন্নী সাহা ও তাঁর স্বামী কবির হোসেনের বিরুদ্ধে অবৈধ উপায় অর্থ উপার্জন এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। তাঁরা দেশ ছেড়ে বিদেশে পলায়ন করতে পারেন বলে দুদক জানতে পেরেছে। দুদকের তথ্য অনুযায়ী, মুন্নী সাহা, তাঁর স্বামী কবির হোসেন, মুন্নী সাহার মা আপেল রানী সাহা, ভাই প্রণব কুমার সাহা এবং তপন কুমার সাহার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ