উৎসব মানে আনন্দ। সবার আনন্দ উদ্‌যাপন নিশ্চিত করতে সবচেয়ে বেশি চাপ পড়ে নারীর ওপর। নানা পদের রান্না, পরিবেশন, ঘর গোছানো, ধোয়ামোছা, আত্মীয়স্বজন সামলানোসহ দিনমান থাকে নানা কাজ। এটাই যেন নারীর ‘উৎসব’। উৎসবের ছুটিতে অনেক সময় সাহায্যকারীরাও থাকে না। তাই বাড়ির পুরো কাজের চাপ এসে পড়ে নারীর ওপর। এ থেকে হতে পারে নানা সমস্যাও।


পানিশূন্যতা

প্রচণ্ড গরমে রান্নাঘরে কাজ করতে গিয়ে ঘেমে–নেয়ে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। হতে পারে প্রস্রাবে সংক্রমণসহ নানা সমস্যা। তাই বারবার পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। পান করা যায় ডাবের পানি, ফলের রস, লেবুর শরবত, পুদিনা বা জিরা পানিও। কাজের ফাঁকে বিশ্রাম নিন। ফ্যানের নিচে বা শীতল জায়গায় জিরিয়ে নিন।

মাংস সংরক্ষণে ‘হাইজিন’

কোরবানির ঈদে কাঁচা মাংস নারীদের গোছাতে হয়। এ সময় হাইজিন (স্বাস্থ্য বা পরিচ্ছন্নতাবিধি) বজায় রাখতে হবে। কাঁচা মাংস ধরার পর ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে। নখের নিচে রক্ত ও জীবাণু লেগে থাকতে পারে। সম্ভব হলে কিচেন গ্লাভস পরে মাংস ধরা ও প্যাকেট করা উচিত। রান্নাঘরের মেঝে, বোর্ড, টাইলস, ছুরি–বঁটিও ভালো করে সাবান দিয়ে ধুয়ে জীবাণুনাশক তরল দিয়ে পরিষ্কার করে শুকিয়ে
মুছে নিতে হবে। কেবল একজনেরই কাঁচা মাংস ধরা এবং তা রান্না বা পরিবেশনের মতো কাজ করা উচিত নয়। এতে খাবারে জীবাণু মিশে যেতে পারে। সব গুছিয়ে পরিচ্ছন্ন করে তবেই রান্না ও পরিবেশন শুরু করুন।

ত্বকের সমস্যা

যেকোনো উৎসব অনুষ্ঠানে বারবার ধোয়ামোছা করতে হয় বলে হাতের ত্বকে একজিমা, ফেটে যাওয়া বা ছত্রাক সংক্রমণ হতে পারে। বারবার হাত না ভিজিয়ে একবারে কাজ শেষ করতে চেষ্টা করুন। গ্লাভস পরে ধোয়ামোছা করা ভালো। কারও ডিটারজেন্টে অ্যালার্জি থাকতে পারে। কাজ শেষে পরিষ্কার কাপড়ে হাত মুছে ময়েশ্চারাইজার বা পেট্রোলিয়াম জেলি লাগিয়ে নিন।

নিজের দিকে খেয়াল

কাজের চাপে নারীদের নিজের খাবারের সময় মেলে না প্রায়ই। এমনকি ওষুধ খেতেও ভুল হয়ে যায়। কিন্তু নিজের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। সময়মতো খাওয়া, পর্যাপ্ত ঘুম জরুরি। নইলে ক্লান্তি চেপে বসবে। সবকিছু একদিনে রান্না করে ফেলতে হবে, এটা ঠিক নয়। দীর্ঘ ছুটিতে নানা ধরনের খাবার তৈরির জন্য অনেক সময় পাওয়া যাবে। তাই একসঙ্গে বেশি কাজের চাপ নেওয়া ঠিক নয়। 

সবার সাহায্য

একজনের ওপর কাজের চাপ কমাতে পরিবারের সবার উচিত উৎসবে কাজ ভাগাভাগি করে নেওয়া। খাবার পরিবেশন, টেবিল গোছানো, ধোয়ামোছার মতো কাজে অন্যরা এগিয়ে এলে নারীর কাজের চাপ অনেকটাই কমে। মাংস প্যাকেট করা ও সংরক্ষণেও অন্যরা সাহায্য করতে পারে। 

মানসিক সুস্থতা

উৎসবে আনন্দ, বেড়ানো, স্বজন–বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো বা আড্ডা দেওয়ার ফুরসত অনেকেরই মেলে না। কিন্তু মানসিকভাবে উৎফুল্ল থাকার জন্য এসব সুন্দর সময় কাটানো জরুরি। নারীরাও যেন উৎসবে আনন্দ করতে পারেন, সেদিকে সবার নজর রাখা উচিত।

ডা.

তানজিনা হোসেন, অধ্যাপক, এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ, গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ, ঢাকা

আগামীকাল পড়ুন: কোরবানির ঈদে স্বাস্থ্যসচেতনতা

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আনন দ

এছাড়াও পড়ুন:

ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা

চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাহাড়ি প্রদেশ গুইঝৌতে প্রাচীনকাল থেকে ‘গেলাও’ জনগোষ্ঠীর বসবাস। ভিয়েতনামেও এই জনগোষ্ঠীর মানুষ বাস করেন। চীনে তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৭৭ হাজার।

কৃষিনির্ভর গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা আজও প্রাচীনকালের পুরোনো এক ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন। বছরের নির্দিষ্ট দিনে তাঁরা গাছকে খাওয়ান, যা চীনা ভাষায় ‘ওয়েই শু’ রীতি নামে পরিচিত।

এই প্রাচীন রীতি মূলত একধরনের প্রার্থনা। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস, এতে প্রকৃতি তুষ্ট হয়, ফসল ভালো হয়, পরিবারে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। প্রতিবছর দুটি উৎসবের সময় এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়—চীনা নববর্ষে, যা বসন্ত উৎসব নামে পরিচিত। আর গেলাও নববর্ষে, যা চান্দ্র পঞ্জিকার তৃতীয় মাসের তৃতীয় দিনে পালিত হয়।

অনুষ্ঠানের দিন সকালে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী পাহাড়ের ঢালে জড়ো হন। তাঁরা সঙ্গে করে চাল থেকে তৈরি মদ, শূকরের মাংস, মাছ ও লাল আঠালো চাল নিয়ে আসেন। পাহাড়ে পৌঁছে প্রথমে আতশবাজি পোড়ানো হয়। এতে করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

এর মধ্যেই একটি পুরোনো ও শক্তিশালী গাছ বাছাই করা হয়। এরপর সবাই ধূপ জ্বালিয়ে নতজানু হয়ে প্রার্থনা করেন। সবশেষে মূল পর্ব ‘গাছকে খাওয়ানো’ শুরু হয়।

একজন কুঠার বা ছুরি দিয়ে গাছে তিনটি জায়গায় ছোট করে কেটে দেন। সেই ক্ষতস্থানে চাল, মাংস ও মদ ঢেলে দেওয়া হয়, যাতে গাছ তাঁদের দেওয়া ভোগ গ্রহণ করতে পারে। পরে ওই জায়গা লাল কাগজে মুড়ে দেওয়া হয়।

এ ছাড়া গাছের গোড়া ঘিরে আগাছা পরিষ্কার করা হয়, মাটি আলগা করে দেওয়া হয়। এতে নতুন জীবনের বার্তা মেলে বলে মনে করেন গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।

যে গাছকে খাওয়ানো হয়, সেটি যদি ফলদ হয়, তাহলে ভোগ দানকারীরা একটি আশাব্যঞ্জক শ্লোক উচ্চারণ করেন। বলেন, ‘তোমায় চাল খাওয়াই, ফল দিয়ো গুচ্ছ গুচ্ছ; তোমায় মাংস খাওয়াই, ফল দিয়ো দলা দলা।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুন্দরবনে দুবলার চরে রাস উৎসব শুরু আজ, এবারও নেই মেলার আয়োজন
  • শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত
  • ‘মবের’ পিটুনিতে নিহত রূপলাল দাসের মেয়ের বিয়ে আজ
  • এবারও কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে নেই বাংলাদেশ
  • ডাইনির সাজে শাবনূর!
  • প্রার্থনার সুরে শেষ হলো ‘ফাতেমা রানীর’ তীর্থোৎসব 
  • ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা
  • টগি ফান ওয়ার্ল্ডে উদযাপিত হলো হ্যালোইন উৎসব
  • উদ্ভাবন–আনন্দে বিজ্ঞান উৎসব
  • নবীনদের নতুন চিন্তার ঝলক