পবিত্র ঈদুল আজহা আগামী ৭ জুন। ঈদ উদযাপন করতে রাজধানী ছাড়ছেন অসংখ্য মানুষ। ট্রেন, বাস, নৌযান- যে যেভাবে পারছেন ছুটছেন প্রিয়জনের টানে।

বুধবার (৪ জুন) রাজধানীর ফুলবাড়িয়া ও গুলিস্তানের বাস কাউন্টারগুলোতে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে স্বস্তির এই যাত্রাপথে বড় এক যন্ত্রণার নাম বাড়তি ভাড়া।

ঈদ উপলক্ষে আগামীকাল ৫ জুন থেকে শুরু হচ্ছে সরকারি ছুটি। বুধবার শেষ কর্মদিবস হওয়ায় এদিন বেলা ১১টা থেকে রাজধানীর বাস কাউন্টারগুলোতে যাত্রীর চাপ বাড়ে। তবে এই চাপের ফাঁকে অনেক পরিবহন কর্তৃপক্ষ আদায় করছে অতিরিক্ত ভাড়া, যা মধ্য ও নিম্নবিত্ত যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।

আরো পড়ুন:

অলিগলিতে উঠেছে কোরবানির পশু, খামারে বিক্রি কেজি দরে

জমে উঠেছে রাজধানীর পশুর হাট: ছোট ও মাঝারি গরুর বিক্রি বেশি

গুলিস্তান-কেরানীগঞ্জ রুটের লেগুনা চালান মো.

জানে আলম জনি। তিনি বরগুনা যাচ্ছেন আনন্দ লোকাল পরিবহনে।

জানে আলম বলছেন, “সারা বছর ৫০০ টাকা ভাড়া দিয়ে যাওয়া যায়। এখন ৮০০ টাকা চাচ্ছে। আমরা যারা নিম্নআয়ের মানুষ, ভালো পরিবহন ধরতে পারি না। লোকাল ধরেই যেতে হয়। এখন এই বাসগুলোও ভালো পরিবহনের মতো ভাড়া চায়। আমরা কীভাবে পরিবার নিয়ে বাড়ি যাবো? সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য থেকে মুক্তি চাই।”

ফরিদপুরের ভাঙ্গা যাচ্ছেন কামাল আহমেদ। তার ভাষায়, লোকাল বাসে ভাড়া ২৫০ টাকা ছিল, এখন চাচ্ছে ৫০০ টাকা। গরিবের তো আর ঈদ থাকে না। শুধু সিন্ডিকেটের ঈদ হয়। সরকারের কাছে অনুরোধ, এসব ভাড়া-সিন্ডিকেট ভেঙে দিন।

মীর সাব্বির নামে আরেক যাত্রী জানালেন, “আমি ফরিদপুর যাবো। আগে ৩০০ টাকা দিতাম, এখন চাচ্ছে ৫০০ টাকা। জ্বালানির দাম কমলেও ভাড়া কমে না, বরং বাড়ে। সাধারণ মানুষের কষ্ট কেউ বোঝে না।”

তবে চালক-হেলপাররা দিচ্ছেন ভিন্ন যুক্তি। আনন্দ লোকাল পরিবহনের চালক বশির হোসেন বলেন, “আমরা সিন্ডিকেটে না। যাত্রী নিচ্ছি, কিন্তু ফেরার পথে খালি আসতে হয়। তাই কিছুটা বেশি ভাড়া নিতে হয়। তবে আমরা জোর করে নিচ্ছি না, যাত্রীরাও খুশি হয়ে বেশি দেন।”

আন্তঃনগর পরিবহনে কিছুটা স্বস্তি রয়েছে। আগেই টিকিট কেটে রাখা যাত্রীরা নির্ধারিত ভাড়ায়ই চলাচল করছেন। ইমাদ পরিবহনের চালক আহমেদ বলেন, “আমরা অতিরিক্ত যাত্রী নেই না, ভাড়াও বাড়াই না। ঈদের দিন পর্যন্ত নিরাপদে চলবে যাত্রা।”

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৭ জুন দেশে উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। সরকারি ছুটি শুরু ৫ জুন থেকে, চলবে ১৪ জুন পর্যন্ত। এই টানা ১০ দিনের ছুটিতে প্রায় কোটি মানুষ গ্রামের পথে ছুটবে। কিন্তু সেই যাত্রায় যদি থেকেই যায় এমন ভাড়া বৈষম্য ও সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য, তবে ঈদের আনন্দ অনেকের জন্যই ফিকে হয়ে যাবে।

ঢাকা/এএএম/রাসেল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর বহন

এছাড়াও পড়ুন:

চিকিৎসার অভাবে শ্রমিক মৃত্যুর অভিযোগ, বন্দরে মহাসড়ক অবরোধ

অসুস্থ শ্রমিককে ছুটি না দেওয়া, চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণের প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জের বন্দরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের অবরোধ করেন শ্রমিকরা। এতে মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে যানজটের সৃষ্টি হয়। সোমবার (৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মহাসড়কের মদনপুর অংশে তারা এ অবরোধ করে। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিচারের আশ্বাসে এগারোটায় মহাসড়ক থেকে সরে যায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। 

শ্রমিকরা জানান, 'লারিস ফ্যাশন' নামে একটি রপ্তানিমুখি গার্মেন্টসের নারী শ্রমিক রিনা (৩০) অসুস্থ অবস্থায় ডিউটি করে যাচ্ছিলেন। গতকাল তিনি অসুস্থতা বোধ করলে কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটির আবেদন করেন। তবে কর্তৃপক্ষ তার আবেদনে কোনো সাড়া না দিয়ে কাজ করে যেতে বাধ্য করেন। পরে অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে সহকর্মীরা তাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহত শ্রমিক রিনা কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানার দুলালের মেয়ে। অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ এ মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। 

বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ লিয়াকত আলী জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সড়িয়ে দেন। সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক ও পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ