ঢাকার মহাখালী থেকে ছেলের জন্য ১৫০০ টাকায় একটি পুরোনো সাইকেল কিনেছিলেন রিকশাচালক রাজু। বিপত্তি বাধে সাইকেলটি তার গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়ার সময়। বাসে ভাড়া চাওয়া হয় দুই হাজার টাকা। কিন্তু, রাজুর পকেটে ছিল ২২০০ টাকার মতো।

এত টাকা খরচ করে বাসে গেলে পরিবারের জন্য আর কোনো টাকাই থাকবে না। বাধ্য হয়ে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) ভোরে সাইকেল চালিয়ে ঢাকা থেকে গাইবান্ধার পলাশবাড়ীর উদ্দেশে রওনা হন। প্রায় ২১ ঘণ্টা সাইকেল চালিয়ে যখন বগুড়ায় পৌঁছান তখন মধ্যরাত।

সেই সময় বগুড়া-রংপুর মহাসড়কে সেনাবাহিনীর চেকপোস্ট বসেছিল। রাজুকে থামান চেকপোস্টে দায়িত্বরত সেনা সদস্যরা। এসময় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন দায়িত্বপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট আল ফাহাদ। রাজুর মুখে ঘটনা শুনে দ্রুত তাকে খাবার দেওয়া হয়। পরে একটি ট্রাকে করে তাকে গাইবান্ধায় পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থাও করেন তিনি।

শনিবার (৭ জুন) মুঠোফোনে রাইজিংবিডির সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানান রাজু। বলেন, তিনি ঢাকার নাখালপাড়া লুকাস মোড়ে থাকেন। সেখানে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। বাড়ি গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে। বাড়িতে স্ত্রী, ছেলে ও দুই মেয়ে থাক। ছেলে একটি সাইকেলের আবদার করেছিল। দীর্ঘ দিনের প্রচেষ্টায় প্রায় এক মাস আগে ১৫০০ টাকায় লাল রঙের একটি পুরোনো সাইকেল কেনেন। ঈদে বাড়ি যাওয়ার সময় সেটি সঙ্গে নিয়ে নেন।

রাজু বলেন, ‘‘বাড়ি যাওয়ার সময় পকেটে ছিল ২২০০ টাকার মতো। বাসে চাইকেলসহ ভাড়া চেয়েছিল ২ হাজার টাকা। এত টাকা ভাড়া দিয়ে গেলে পরিবারের জন্য কিছুই থাকবে না। বাধ্য হয়ে সাইকেল চালিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওয়ানা দেই। বগুড়া পৌছানোর আগে পর্যন্ত পথে তিনবার ৫০ টাকা করে কিছুটা পথ ভ্যানে চরেছি। যমুনা সেতুতে সাইকেল নিয়ে পার হওয়ার অনুমতি পাচ্ছিলাম না। পরে একটি মিনি ট্রাকে ১০০ টাকা দিয়ে সেতু পার হই। ট্রাকটি গাইবান্ধা দিকে যাচ্ছিল, কিন্তু বেশি ভাড়া দিতে না পারায় তারা আমাকে নামিয়ে দেয়।’’

তিনি বলেন, ‘‘এত দীর্ঘ পথ সাইকেলে পাড়ি দিতে পারব ভাবিনি। আগে কখনো এমন অভিজ্ঞতা হয়নি। সেদিন বগুড়ায় পৌছার পর সেনাবাহিনী অনেক সহযোগিতা করেছে। খাবার দিয়েছে, ট্রাকে করে পলাশবাড়ীতে পৌঁছানোর ব্যবস্থাও করেছে তারা। এতে আনন্দে বাড়ি ফিরতে পেরেছি। ছেলেকে সাইকেল উপহার দিতে পেরেছি। এটি ওর পড়াশোনায় উপকারে আসবে। সাইকেল পেয়ে ওর মুখে হাসি ফুটেছে, এটাই আনন্দের।’’

ঢাকা/এনাম/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ছেলের মুখে হাসি ফোটাতে সাইকেলে ২০০ কিলোমিটার পাড়ি দিলেন বাবা

ঢাকার মহাখালী থেকে ছেলের জন্য ১৫০০ টাকায় একটি পুরোনো সাইকেল কিনেছিলেন রিকশাচালক রাজু। বিপত্তি বাধে সাইকেলটি তার গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়ার সময়। বাসে ভাড়া চাওয়া হয় দুই হাজার টাকা। কিন্তু, রাজুর পকেটে ছিল ২২০০ টাকার মতো।

এত টাকা খরচ করে বাসে গেলে পরিবারের জন্য আর কোনো টাকাই থাকবে না। বাধ্য হয়ে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) ভোরে সাইকেল চালিয়ে ঢাকা থেকে গাইবান্ধার পলাশবাড়ীর উদ্দেশে রওনা হন। প্রায় ২১ ঘণ্টা সাইকেল চালিয়ে যখন বগুড়ায় পৌঁছান তখন মধ্যরাত।

সেই সময় বগুড়া-রংপুর মহাসড়কে সেনাবাহিনীর চেকপোস্ট বসেছিল। রাজুকে থামান চেকপোস্টে দায়িত্বরত সেনা সদস্যরা। এসময় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন দায়িত্বপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট আল ফাহাদ। রাজুর মুখে ঘটনা শুনে দ্রুত তাকে খাবার দেওয়া হয়। পরে একটি ট্রাকে করে তাকে গাইবান্ধায় পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থাও করেন তিনি।

শনিবার (৭ জুন) মুঠোফোনে রাইজিংবিডির সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানান রাজু। বলেন, তিনি ঢাকার নাখালপাড়া লুকাস মোড়ে থাকেন। সেখানে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। বাড়ি গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে। বাড়িতে স্ত্রী, ছেলে ও দুই মেয়ে থাক। ছেলে একটি সাইকেলের আবদার করেছিল। দীর্ঘ দিনের প্রচেষ্টায় প্রায় এক মাস আগে ১৫০০ টাকায় লাল রঙের একটি পুরোনো সাইকেল কেনেন। ঈদে বাড়ি যাওয়ার সময় সেটি সঙ্গে নিয়ে নেন।

রাজু বলেন, ‘‘বাড়ি যাওয়ার সময় পকেটে ছিল ২২০০ টাকার মতো। বাসে চাইকেলসহ ভাড়া চেয়েছিল ২ হাজার টাকা। এত টাকা ভাড়া দিয়ে গেলে পরিবারের জন্য কিছুই থাকবে না। বাধ্য হয়ে সাইকেল চালিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওয়ানা দেই। বগুড়া পৌছানোর আগে পর্যন্ত পথে তিনবার ৫০ টাকা করে কিছুটা পথ ভ্যানে চরেছি। যমুনা সেতুতে সাইকেল নিয়ে পার হওয়ার অনুমতি পাচ্ছিলাম না। পরে একটি মিনি ট্রাকে ১০০ টাকা দিয়ে সেতু পার হই। ট্রাকটি গাইবান্ধা দিকে যাচ্ছিল, কিন্তু বেশি ভাড়া দিতে না পারায় তারা আমাকে নামিয়ে দেয়।’’

তিনি বলেন, ‘‘এত দীর্ঘ পথ সাইকেলে পাড়ি দিতে পারব ভাবিনি। আগে কখনো এমন অভিজ্ঞতা হয়নি। সেদিন বগুড়ায় পৌছার পর সেনাবাহিনী অনেক সহযোগিতা করেছে। খাবার দিয়েছে, ট্রাকে করে পলাশবাড়ীতে পৌঁছানোর ব্যবস্থাও করেছে তারা। এতে আনন্দে বাড়ি ফিরতে পেরেছি। ছেলেকে সাইকেল উপহার দিতে পেরেছি। এটি ওর পড়াশোনায় উপকারে আসবে। সাইকেল পেয়ে ওর মুখে হাসি ফুটেছে, এটাই আনন্দের।’’

ঢাকা/এনাম/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ