কয়েক দশকের ছায়া যুদ্ধ থেকে এবার প্রকাশ্য সংঘাতে ইসরায়েল ও ইরান
Published: 13th, June 2025 GMT
ইসরায়েল আজ শুক্রবার ভোররাতে ইরানে বিমান হামলা চালিয়েছে। তেহরানের ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ওমানে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আয়োজিত একটি বৈঠকের একদিন আগেই এ হামলার ঘটনা ঘটল।
২০২৩ সালে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর কয়েকবার ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল। তেহরানে ইসরায়েলের সবশেষ এই হামলার ফলে দুই দেশের মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধ বেঁধে যাওয়ার আশঙ্কা তীব্র হচ্ছে।
ইসরায়েল ও ইরানের শত্রুতা নতুন কিছু নয়। কয়েক দশক ধরে দুই দেশ স্থল, সমুদ্র, আকাশ এবং সাইবার হামলাসহ একে অপরের বিরুদ্ধে চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে আসছে। এসব সংঘাত তাদের সম্পর্ককে বৈরিতার দিকে ঠেলে দিয়েছে, যা এখন ধীরে ধীরে প্রকাশ্য যুদ্ধে রূপ নিচ্ছে।
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে গত কয়েক দশকে হওয়া প্রধান প্রধান উত্তেজনাপূর্ণ কিছু ঘটনা এখানে তুলে ধরা হলো—
১৯৭৯: ইরানে বিপ্লব
ইরানের পশ্চিমাপন্থী নেতা মোহাম্মদ রেজা শাহ ইসরায়েলকে মিত্র দেশ হিসেবে বিবেচনা করতেন। ১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের ফলে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হন। এই বিপ্লবের ফলে ইরানে শিয়াপন্থী ধর্মতন্ত্রভিত্তিক একটি নতুন শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়। এই শাসনব্যবস্থার আদর্শগত নীতির অন্যতম ভিত্তি ছিল ইসরায়েলবিরোধিতা।
১৯৮২: হিজবুল্লাহ প্রতিষ্ঠা
এ বছর ইসরায়েল লেবাননে আক্রমণ চালায়। এর প্রতিক্রিয়ায় দেশটির শিয়া মুসলিম নেতারা সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ গড়ে তোলে। সংগঠনটি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি)। পরবর্তী সময়ে এই আধাসামরিক সংগঠনটি সীমান্তে ইসরায়েলের সবচেয়ে ভয়ংকর শত্রু হিসেবে আবির্ভূত হয়।
১৯৮৩: লেবাননে ইসরায়েলি সেনাঘাঁটিতে হামলা
লেবানন থেকে পশ্চিমা ও ইসরায়েলি বাহিনীকে বিতাড়িত করতে ইরান–সমর্থিত হিজবুল্লাহ আত্মঘাতী বোমা হামলার কৌশল গ্রহণ করে। এ বছরের নভেম্বর মাসে বিস্ফোরক ভর্তি একটি গাড়ি লেবাননে ইসরায়েলের সামরিক সদর দপ্তরে ঢুকে হামলা চালায়। এরপর ইসরায়েল লেবাননের বেশির ভাগ এলাকা থেকে সরে আসে।
১৯৯২-৯৪: আর্জেন্টিনায় হামলা
আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস এইরেসে ১৯৯২ সালে ইসরায়েলি দূতাবাস এবং একটি জুইশ সেন্টারে আত্মঘাতী হামলার ঘটনা ঘটে। এতে বহু মানুষ নিহত হন। আর্জেন্টিনা ও ইসরায়েল এ হামলার পরিকল্পনাকারী হিসেবে ইরান ও হিজবুল্লাহকে দায়ী করে। তবে ইরান ও হিজবুল্লাহ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম ক্ষমতাধর ব্যক্তি ও ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডসের বিদেশি শাখা কুদস ফোর্সের প্রধান কাসেম সোলাইমানির হত্যাকাণ্ডকে স্বাগত জানায় ইসরায়েল। ইরাকের বাগদাদে একটি মার্কিন ড্রোন হামলায় তিনি নিহত হয়েছিলেন। এ হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরাকে বিভিন্ন মার্কিন সেনা ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করে ইরান। এসব হামলায় প্রায় ১০০ মার্কিন সামরিক সদস্য আহত হন।ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ি। তেহরান, ইরান, ১৩ জুন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র ও ইসর য় ল ল ব নন
এছাড়াও পড়ুন:
কয়েক দশকের ছায়া যুদ্ধ থেকে এবার প্রকাশ্য সংঘাতে ইসরায়েল ও ইরান
ইসরায়েল আজ শুক্রবার ভোররাতে ইরানে বিমান হামলা চালিয়েছে। তেহরানের ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ওমানে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আয়োজিত একটি বৈঠকের একদিন আগেই এ হামলার ঘটনা ঘটল।
২০২৩ সালে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর কয়েকবার ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল। তেহরানে ইসরায়েলের সবশেষ এই হামলার ফলে দুই দেশের মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধ বেঁধে যাওয়ার আশঙ্কা তীব্র হচ্ছে।
ইসরায়েল ও ইরানের শত্রুতা নতুন কিছু নয়। কয়েক দশক ধরে দুই দেশ স্থল, সমুদ্র, আকাশ এবং সাইবার হামলাসহ একে অপরের বিরুদ্ধে চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে আসছে। এসব সংঘাত তাদের সম্পর্ককে বৈরিতার দিকে ঠেলে দিয়েছে, যা এখন ধীরে ধীরে প্রকাশ্য যুদ্ধে রূপ নিচ্ছে।
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে গত কয়েক দশকে হওয়া প্রধান প্রধান উত্তেজনাপূর্ণ কিছু ঘটনা এখানে তুলে ধরা হলো—
১৯৭৯: ইরানে বিপ্লব
ইরানের পশ্চিমাপন্থী নেতা মোহাম্মদ রেজা শাহ ইসরায়েলকে মিত্র দেশ হিসেবে বিবেচনা করতেন। ১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের ফলে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হন। এই বিপ্লবের ফলে ইরানে শিয়াপন্থী ধর্মতন্ত্রভিত্তিক একটি নতুন শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়। এই শাসনব্যবস্থার আদর্শগত নীতির অন্যতম ভিত্তি ছিল ইসরায়েলবিরোধিতা।
১৯৮২: হিজবুল্লাহ প্রতিষ্ঠা
এ বছর ইসরায়েল লেবাননে আক্রমণ চালায়। এর প্রতিক্রিয়ায় দেশটির শিয়া মুসলিম নেতারা সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ গড়ে তোলে। সংগঠনটি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি)। পরবর্তী সময়ে এই আধাসামরিক সংগঠনটি সীমান্তে ইসরায়েলের সবচেয়ে ভয়ংকর শত্রু হিসেবে আবির্ভূত হয়।
১৯৮৩: লেবাননে ইসরায়েলি সেনাঘাঁটিতে হামলা
লেবানন থেকে পশ্চিমা ও ইসরায়েলি বাহিনীকে বিতাড়িত করতে ইরান–সমর্থিত হিজবুল্লাহ আত্মঘাতী বোমা হামলার কৌশল গ্রহণ করে। এ বছরের নভেম্বর মাসে বিস্ফোরক ভর্তি একটি গাড়ি লেবাননে ইসরায়েলের সামরিক সদর দপ্তরে ঢুকে হামলা চালায়। এরপর ইসরায়েল লেবাননের বেশির ভাগ এলাকা থেকে সরে আসে।
১৯৯২-৯৪: আর্জেন্টিনায় হামলা
আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস এইরেসে ১৯৯২ সালে ইসরায়েলি দূতাবাস এবং একটি জুইশ সেন্টারে আত্মঘাতী হামলার ঘটনা ঘটে। এতে বহু মানুষ নিহত হন। আর্জেন্টিনা ও ইসরায়েল এ হামলার পরিকল্পনাকারী হিসেবে ইরান ও হিজবুল্লাহকে দায়ী করে। তবে ইরান ও হিজবুল্লাহ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম ক্ষমতাধর ব্যক্তি ও ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডসের বিদেশি শাখা কুদস ফোর্সের প্রধান কাসেম সোলাইমানির হত্যাকাণ্ডকে স্বাগত জানায় ইসরায়েল। ইরাকের বাগদাদে একটি মার্কিন ড্রোন হামলায় তিনি নিহত হয়েছিলেন। এ হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরাকে বিভিন্ন মার্কিন সেনা ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করে ইরান। এসব হামলায় প্রায় ১০০ মার্কিন সামরিক সদস্য আহত হন।ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ি। তেহরান, ইরান, ১৩ জুন