কুষ্টিয়ায় যাত্রীবাহী একটি বাস ও ট্রাকের সংঘর্ষে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। আজ সোমবার ভোর পাঁচটার দিকে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের সদর উপজেলার বিত্তিপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত শিক্ষার্থীর নাম রাশেদুল ইসলাম (২৩)। তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর পরীক্ষা শেষ করেছেন। তাঁর বাড়ি জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলায়।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঈদের ছুটি শেষে রাশেদুল জয়পুরহাট থেকে ট্রেনে করে কুষ্টিয়ার পোড়াদহ রেল জংশনে নামেন। সেখান থেকে শ্যামলী পরিবহনের একটি বাসে করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফিরছিলেন। বাসটি বিত্তিপাড়া এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে বাসটি রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যায়। দুর্ঘটনায় রাশেদুল মাথায় গুরুতর আঘাত পান। আহত হন আরও তিন থেকে চারজন। স্থানীয় এক ভ্যানচালক রাশেদুলকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শাহীনুজ্জামান বলেন, রাশেদুল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে থাকা তাঁর প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিতে এসেছিলেন। সেগুলো নিয়ে ঢাকায় তাঁর বাসায় ফেরার কথা ছিল। কিন্তু ক্যাম্পাসে ফেরার পথেই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। তাঁর লাশ গোসল ও কাফনের পর শহরের একটি মসজিদে জানাজা শেষে ফ্রিজিং অ্যাম্বুলেন্সে গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) হোসেন ইমাম বলেন, মাথায় আঘাত পাওয়ায় প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে এতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

চৌড়হাস হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আল মামুন বলেন, ভোরে বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে বাসটি খাদে পড়ে যায়। পুলিশ গিয়ে দুই নারীকে জীবিত উদ্ধার করে। বাসের যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিহত রাশেদুল সম্ভবত বাসের ভেতরে ছিলেন না। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। বাস ও ট্রাক জব্দ করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

ইসির ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠন করার নির্দেশ

বিতর্কিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার ও সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে এ-সংক্রান্ত আলোচনা শেষে এমন নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ।

এই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, সফররাজ হোসেন ও মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে যে অতীতের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনে কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্ত করা এবং তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনা প্রয়োজন।

জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই সনদ

বৈঠকে কমিশন সদস্যরা জুলাই সনদ তৈরির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, বেশ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। শিগগিরই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘সবাই জুলাই সনদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আশা করি, আগামী জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এটি জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারব।’

‘প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে’

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির যাঁদের সঙ্গেই দেখা হয়েছে, তাঁরা সংস্কার নিয়ে জানতে চেয়েছেন। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহী। তাঁরা বিস্তারিতভাবে ঐকমত্য কমিশনের কাজ নিয়ে তাঁর (প্রধান উপদেষ্টা) সঙ্গে আলোচনা করেছেন, মতামত দিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যেখানেই গিয়েছি, সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, “আমরা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারব তো?” আমাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। পোস্টাল ব্যালট এবং আর কী কী অপশন আছে, সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ