সচিবালয়ে কর্মচারীদের বিক্ষোভ, চলবে মঙ্গলবারও
Published: 16th, June 2025 GMT
ঈদের ছুটির পর সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ বাতিলের দাবিতে আবারও আন্দোলন শুরু করেছেন সচিবালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
সোমবার (১৬ জুন) সচিবালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। দাবি আদায়ে একজন উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি শেষে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় সচিবালয়ে বিক্ষোভ কর্মসুচী ঘোষণা করেছেন তারা।
এদিকে, আন্দোলন কর্মসূচি থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ জানিয়েছেন এ সংক্রান্ত কমিটির আহ্বায়ক আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
আরো পড়ুন:
গুম বিষয়ে আইন প্রণয়ন ও কমিশন গঠন করবে সরকার: আইন উপদেষ্টা
সচিবালয় ও যমুনার পার্শ্ববর্তী এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ
অন্যদিকে নেতারা অভিযোগ করেছেন, আধ্যাদেশ বাতিল না করে সরকার তাদের সঙ্গে সাপ লুডু খেলা খেলছে। দাবি মানা না হলে আন্দোলন কর্মসূচি আরো কঠোর হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা মাঠে থাকবে।
ঈদের ছুটির পর সোমবার (১৬ জুন) বেলা ১১টার পর সচিবালয়ের ছয় নম্বর ভবনের সামনে বাদাম তলায় কর্মচারীরা জড়ো হন। সেখান থেকে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন।
মিছিলে নেতৃত্ব দেন ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো.
তারা এ সময় ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, সচিবালয় জেগেছে’, ‘মানি না মানব না’, ‘ফ্যাসিবাদী কালো আইন’, ‘মানি না মানব না, অবৈধ কালো আইন’, ‘ফ্যাসিবাদের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’ স্লোগান ধরেন।
এরপর তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নতুন ভবনের নিচে এসে সমাবেশ করেন।
ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম বলেন, “সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ বাতিলের দাবিতে আমরা মাঠে ময়দানে ঘুরতেছি। অনেক ক্যাডার সার্ভিস থেকে অনেকেই আন্দোলনে নেমে গেছে। আমরা একটা জিনিস বুঝে গেছি সরকার আমাদের সঙ্গে সাপ-লুডু খেলা খেলছে। আমরা চাইলাম মহার্ঘ ভাতা, পদ-পদবি পরিবর্তন, সচিবালয় ভাতা। সেটা ঠেকানোর জন্য সরকার করল অভিন্ন নিয়োগবিধি। তারপর এটা নিয়ে সচিবালয়ে বিশাল হুলুস্থুল শুরু হলে সেটা আমরা থামিয়ে দিলাম।”
তিনি বলেন, “যদি আমাদের কথায় কান না দেন তাহলে আমরা বিভাগীয় পর্যায়ে সম্মেলন ডাকতে বাধ্য হব। প্রজ্ঞাপনে বলা আছে, অধ্যাদেশ জারির আগে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। এ পর্যন্ত আমরা কেউ কোনো আলোচনার প্রস্তাব পাইনি। তাহলে প্রজ্ঞাপন জারির মধ্যেও লুকোচুরি আছে। আজ আমরা রোদে পুড়ে আন্দোলন করছি, আপনারা এসিতে বসে আছেন। আমার এক বন্ধু বলেছে উপদেষ্টার দপ্তর, সচিবের দপ্তর, প্রশাসনের শাখায় খবর নেবেন তারা আমাদের মিটিংয়ে আসে কিনা। যদি না আসে আমরা তাদের আসতে বাধ্য করব। আমরা ধরে নেবে তারা ফ্যাসিস্ট সরকারের আইন প্রণেতাদের সহযোগী।”
নুরুল ইসলাম বলেন, “আমরা এগুলো দেখতে, শুনতে ও বুঝতে চাই না। আমরা শুধু দেখতে চাই এই অধ্যাদেশ বাতিল হয়েছে। আমরা সংশোধন, পরিবর্তন, পরিবর্ধন বুঝি না। আমরা শুধু বুঝি এই অধ্যাদেশ বাতিল করতে হবে। আমাদের পিছু হঠার কোনো সুযোগ নেই।”
তিনি বলেন, “মঙ্গলবার সচিবালয়ের বাদাম তলায় বেলা ১১টায় জমায়েত হব। প্রতিটি মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা আলাদা মিছিল নিয়ে আসবেন। যদি না আসেন তাহলে ধরে নেব তারা ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর। এরপর যদি আমরা আলোচনার আমন্ত্রণ না পাই, তাহলে আমাদের দাবির সঙ্গে নতুন নতুন দাবি যুক্ত হবে।”
নুরুল ইসলাম বলেন, “এই অধ্যাদেশ বাতিল করলে আমরা নীরবে ঘরে ফিরে যাব। যদি আমাদের আগুনে জ্বালিয়ে আপনারা খেলা করতে চান, তাহলে আমরা এমন খেলা খেলব আপনারা ঘরে ঢুকতে পারবেন না। আপনারা সে কাজ করতে বাধ্য করবেন না।”
এ সময় ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. বাদিউল কবির, কো-মহাসচিব নজরুল ইসলাম, নিজাম উদ্দিন আহমেদসহ অন্যান্য নেতারা বক্তব্য রাখেন।
এরপর নেতারা আধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে দুপুর পৌঁনে ১টার দিকে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানকে স্মারকলিপি দেন।
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের খসড়া বাতিলের দাবিতে গত ২৪ মে আন্দোলনে নামেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা।
আন্দোলন চলাকালে গত ৪ জুন ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ পর্যালোচনা করে সুপারিশ দিতে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কমিটি সোমবার বিকেলে প্রথম বৈঠকে বসছে। কমিটির সুপারিশ দেওয়া পর্যন্ত কর্মচারীদের আন্দোলন কর্মসূচি থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা।
এর আগে কর্মচারীদের আন্দোলনের মধ্যেই ২৫ মে রাতে এই অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। অধ্যাদেশ অনুযায়ী, চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধুমাত্র কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে।
অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে সর্বশেষ ঈদের ছুটির আগে তিন জুন পর্যন্ত সচিবালয়ে বিক্ষোভ করেন কর্মচারীরা। চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে সরকারের সাতজন উপদেষ্টাকে স্মারকলিপিও দিয়েছেন তারা। ১৫ জুনের মধ্যে চাকরি অধ্যাদেশ বাতিল না করলে ১৬ জুন থেকে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণার হুমকিও দিয়েছিলেন কর্মচারী নেতারা।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন র ল ইসল ম উপদ ষ ট আম দ র মন ত র আপন র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
মজাদার ডেজার্ট রেভানির রেসিপি
রেভানি তৈরি করতে পেরোতে হবে ৩টি ধাপ।
শিরাউপকরণ: পানি দেড় কাপ, চিনি ১ কাপ, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, গোলাপজল ও লেবুর খোসা কোরানো সামান্য।
প্রণালি: একটি পাত্রে চিনি ও পানি দিয়ে মাঝারি আঁচে ফুটতে দিন। চিনি গলে গেলে ৫-৭ মিনিট নাড়ুন। লেবুর রস ও খোসা দিন। নামিয়ে শিরা ছেঁকে এক পাশে রেখে দিন।
ক্রিমউপকরণ: দুধ ১ কেজি, কর্নফ্লাওয়ার সিকি কাপ, চিনি ৩ টেবিল চামচ, কমলার খোসা কোরানো (জেস্ট) ১ চা–চামচ, ক্রিম ১ কৌটা, মাখন কিউব কয়েকটি।
প্রণালি: একটি পাত্রে সব উপকরণ একত্রে মিশিয়ে চুলায় বসান। দ্রুত নাড়তে থাকুন। ঘন হয়ে এলে নামিয়ে তাতে মাখনের কিউবগুলো দিয়ে দ্রুত মেশাতে থাকুন। ঠান্ডা
না হওয়া পর্যন্ত ঘন ঘন নাড়তে হবে।
উপকরণ: সুজি দেড় কাপ, ময়দা ২ টেবিল চামচ, চিনি আধা কাপ, লবণ সামান্য, বেকিং পাউডার ১ টেবিল চামচ, গলানো মাখন ১ কাপ, কোরানো নারকেল আধা কাপ, ডিম ৩টি, টক দই আধা কাপ, দুধ পৌনে এক কাপ।
প্রণালি: বাসবুসার জন্য একটি পাত্রে ডিম ও চিনি ভালোভাবে বিট করুন। বিট করতে করতে ফোম হলে এতে মাখন ও দই মিশিয়ে আবার বিট করুন। সুজি, ময়দা, বেকিং পাউডার ও কমলার খোসা যোগ করে হালকা হাতে মিশিয়ে নিন। একটি বাটার মাখানো বেকিং ট্রেতে অর্ধেক ব্যাটার ঢেলে ১৮০ ডিগ্রি তাপে ২০–২২ মিনিট বেক করুন।
বাসবুসা সম্পূর্ণ ঠান্ডা হলে একটা মোটা কাবাব কাঠি দিয়ে ছিদ্র করে নিন। এবার আস্তে আস্তে অর্ধেক শিরা ঢেলে দিন, যেন তা ভালোভাবে শুষে নিতে পারে। এবার তৈরি করে রাখা ক্রিম ঢেলে দিন সমান করে। এই ক্রিমের ওপর বাকি অর্ধেকটা ব্যাটার ঢেলে দিন সমান করে। এরপর আবার ওভেনে একই তাপে ২০–২২ মিনিট বেক করুন। বেকিং শেষে ওভেনের তাপমাত্রা কিছুটা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত রেখে দিন। বের করে আগের মতো একইভাবে বাকি শিরাটুকু ঢেলে দিয়ে রেভানি ২ ঘণ্টা রেখে দিন। এরপর টুকরা টুকরা করে কেটে পরিবেশন করুন।
আরও পড়ুনচিকেন বটি মাসালার রেসিপি২ ঘণ্টা আগে