আষাঢ়ের টানা বৃষ্টিতে ডুবলো খুলনা। সোমবার থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টির পানিতে নগরীর অধিকাংশ সড়ক, নিম্নাঞ্চলের অলিগলি ও ঘর-বাড়িতে পানি উঠেছে। অধিকাংশ বাড়ি ও দোকানপাটের নিচতলা এখন পানির নিচে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে নগরবাসী। 

সোমবার(১৬ জুন) সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খুলনাতে ৫৩ মিলিমিটার এবং মঙ্গলবার (১৭ জুন) ৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। খুলনায় মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। বুধবার (১৮ জুন) সকাল থেকেও হালকা বৃষ্টিপাত অব্যহত রয়েছে।

খুলনা আবহাওয়া অফিস থেকে আবহাওয়াবিদ মো.

মিজানুর রহমান বলেন, সোমবার দুপুর ১২টা থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খুলনায় ৮৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এটা এ বছরের সর্বোচ্চ বৃষ্টি। যা আরো দুই একদিন অব্যহত থাকতে পারে।

এদিকে নগরবাসীর অভিযোগ, নগরীর সড়ক, ড্রেনেজ ও সুয়ারেজসহ উন্নয়ন কাজের ধীরগতির ফলে তারা জিম্মি হয়ে পড়েছে। ফলে অল্প বৃষ্টি হলেই অনেক এলাকা তলিয়ে যায়।

টানা বৃষ্টিতে নগরীর অধিকাংশ রাস্তাঘাটের ড্রেন উপচে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে রয়্যাল মোড়, দোলখোলা মোড়, বাইতিপাড়া মোড়, খানজাহান আলী সড়ক, শামসুর রহমান রোড, আহসান আহমেদ রোড, বাস্তুহারা, চানমারী, লবণচরা, টুটপাড়া, মিস্ত্রিপাড়া, ইকবালনগর, বাগমারা, বানিয়খামার, মিস্ত্রিপাড়া, নতুন বাজার, সোনাডাঙ্গা আবাসিকসহ বেশ কিছু নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। 

নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ বিশেষ করে কর্মজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। এছাড়া, নগরীর সোনাডাঙ্গা, খালিশপুর, দৌলতপুর, খানজাহান আলী,  আড়ংঘাটা ও ফুলবাড়ি গেট খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাও প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

বানিয়াখামার এলাকার নূরুল হুদা বলেন, “সিটি করপোরেশন হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সড়ক উঁচু ও ড্রেন তৈরি করছে। কিন্তু সামান্য বৃষ্টিতে সব তলিয়ে যাচ্ছে। কোন কাজ শুরু হলে আর শেষ হয় না। ড্রেনগুলো বন্ধ হয়ে আছে। তাই বৃষ্টির পানি বাড়িঘরে প্রবেশ করছে। এতে নগরবাসীর চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।”

দোলখোলার বাসিন্দা আব্দুল্লাহ বলেন, “ওয়াসা দিনের পর দিন স্যুয়ারেজ লাইন বসাচ্ছে। ৩-৪ মাস ধরে কাজ চলছে তো চলছেই। রাস্তাঘাট বেহাল অবস্থা। স্বাভাবিক সময়ে হাঁটার অবস্থা নেই। বৃষ্টিতে আরো খারাপ অবস্থা।”

খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার জানান, রাস্তা উঁচু, ড্রেন নির্মাণ ও স্যুয়ারেজ কাজে খুলনায় হাজার কোটি টাকা ব্যয় করছে। কিন্তু নাগরিকরা কোনো সুফল পাচ্ছে না। বৃষ্টি হলেই পানি জমে যাচ্ছে। মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। কোনো কাজ শুরু হলে আর শেষ হতে চায় না। নগরবাসী এ অবস্থা থেকে বাঁচতে চান।

খুলনা সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা আনিুসুর রহমান জানান, করপোরেশন জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করছে। উন্নয়ন কাজগুলো শেষ হলে নগরবাসী সুফল পাবেন বলে আশা করছি।

ঢাকা/নুরুজ্জামান/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর নগরব স নগর র অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামে আষাঢ়ের বৃষ্টি, বিপাকে নগরবাসী

২ / ১০বৃষ্টির মধ্যে রেইনকোট পরে মোটরসাইকেল চালাচ্ছেন এক ব্যক্তি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ