জামায়াতের কাছ থেকে হাতবদল হয়ে বগুড়া পরিবহন মালিক সমিতির নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে বিএনপি নেতাদের কাছে। এ নিয়ে দু’পক্ষ পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিয়েছে। এক পক্ষ সংবাদ সম্মেলন করে কমিটিকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। অন্য পক্ষ বলছে, নিয়ম মেনেই কমিটি করা হয়েছে। 

৫ আগস্টের পর থেকে জেলার বড় আর্থিক সংগঠন বগুড়া পরিবহন মালিক সমিতির দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সংগঠনটি পরিচালনা করে আসছিলেন  জামায়াত নেতা এরশাদুল বারী এরশাদ। ১০ মাস পর ভোট ছাড়াই নির্বাচন পরিচালনা কমিটি ২৫ সদস্যের কমিটির তালিকা ঘোষণা করে। সভাপতি করা হয়েছে জেলা বিএনপির সহসভাপতি তৌহিদুর রহমান মামুন ও সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে বগুড়া শহর বিএনপির সভাপতি হামিদুল হক চৌধুরী হিরুকে। গত মঙ্গলবার কমিটিকে অবৈধ দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেন জামায়াত নেতা এরশাদ। 

অভিযোগে বলা হয়, সদস্যরা ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠনের দাবি করে আসছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে শ্রম দপ্তর রাজশাহীর পরিচালক ২৪ মে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করেন। এর আগে ১২ মার্চ ৫ সদস্যের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করে দেন। চেয়ারম্যান করা হয় সিনিয়র সদস্য ফজলুর রহমান তালুকদারকে। ২৩ মে জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনের কারণে মোটর মালিক সমিতির নির্বাচন পিছিয়ে ১৪ জুন করা হয়। এদিকে চেয়ারম্যান একটি পক্ষকে খুশি করতে পাঁয়তারা করতে থাকেন। এতে ক্ষুব্ধ হন বেশির ভাগ সদস্য। আলফাজ হোসেন নামে একজন পরিবহন মালিক রিট করলে আদালত নির্বাচনের ওপর দুই মাসের স্থগিতাদেশ দেন। এরপর কমিটির চেয়ারম্যান সদস্যদের না জানিয়ে স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেন। ৩ জুন স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেন আদালত। স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের পর নতুন করে তপশিল ঘোষণা না করে চেয়ারম্যান আগের ঘোষিত তপশিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র বিতরণ করেন; যা নিয়মবহির্ভূত। নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব জুয়েল হাসান বিষয়টি শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালককে অবহিত করেন। এরপরও চেয়ারম্যান ১৪ জুন ২৫ সদস্যের তালিকা প্রকাশ করেন। 

নবগঠিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক হামিদুল হক চৌধুরী হিরু বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী মনোনয়নপত্র তুলে জমা দিয়েছিলাম। কোনো প্রার্থী না থাকায় পরিচালনা কমিটি আমাকে নির্বাচিত ঘোষণা করেছেন।’ 

নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনের ওপর উচ্চ আদালত স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেছেন। এরপর নিয়মানুযায়ী নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। একাধিক প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। যারা কমিটি অবৈধ দাবি করছেন তারা ভুল বলছেন।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কম ট র সদস য ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

লাকসামে অস্ত্রের মুখে এতিমখানার ৫ গরু লুট, আহত ৮

কুমিল্লার লাকসামে একটি এতিমখানার খামার থেকে গত শুক্রবার পাঁচটি গরু লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাত দল। এ সময় তাদের হামলায় মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ আটজন আহত হন। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ থানায় মামলা করেছে।

গত শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) ভোরে উপজেলার আজগরা ইউনিয়নের বড়বাম আল-জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদরাসা ও এর সংলগ্ন এতিমখানার খামারে ঘটনাটি ঘটে। তিন মাস আগেও এই খামারের সাতটি গরু লুট করেছিল ডাকাতরা।

আরো পড়ুন:

খুলনায় বিএনপি নেতার অফিসে বোমা-গুলি, শিক্ষক নিহত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিপক্ষের হামলা: গুলিবিদ্ধ যুবকের মৃত্যু

সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে ঘটনাটি জানাজানি হয়।

এলাকাবাসী জানান, মাদরাসার আয় এই খামারের মাধ্যমে হয়। তিন মাসের ব্যবধানে দুই দফা ডাকাতি হওয়ায় শিক্ষক ও ছাত্রদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। খামারের বড় গরুগুলো লুট হয়ে যাওয়ায় এক পাশ ফাঁকা পড়ে আছে। বর্তমানে খামারে ১১টি গরু অবশিষ্ট রয়েছে।

খামারের সামনে পড়ে আছে ডাকাত দলের ব্যবহৃত তুষের বস্তা, যা দিয়ে গরুগুলো পিকআপ ভ্যানে তোলে তারা। গরু উদ্ধার এবং ডাকাত দলের সদস্যদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

মামলার বাদী এবং মাদরাসার শিক্ষক ইমরান হোসাইন জানান, গত শুক্রবার ভোরে একদল ডাকাত দুটি পিকআপ ভ্যান নিয়ে এসে অস্ত্রের মুখে মাদরাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে। শিক্ষকদের মারধর করে তাদের মোবাইল ফোন নিয়ে যায় ডাকাতরা। তারা খামারে ঢুকে কেয়ারটেকার উৎসব হোসেনকে বেঁধে একে একে পাঁচটি গরু পিকআপ ভ্যানে তুলে নেয়। শিক্ষক ও ছাত্রদের চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে আসলে ডাকাতরা পালিয়ে যায়।

মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা শরীফুল আলম খন্দকার জানান, খামারের আয়ের ওপর ভিত্তি করে মাদরাসার কার্যক্রম চলে। তিন মাস আগেও এই খামারের সাতটি গরু নিয়ে যায় ডাকাতরা।

লাকসাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজনীন সুলতানা বলেন, “লুট হওয়া গরু উদ্ধার এবং ডাকাতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। মাদরাসার শিক্ষক ইমরান হোসাইন বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন।”

ঢাকা/রুবেল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ