বিশ্বে নানা কারণে নিয়মিত শিল্পবর্জ্য তৈরি হচ্ছে। এসব শিল্পবর্জ্য ভবিষ্যতে অপরিবর্তনীয় প্রভাব বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, ইস্পাত তৈরির প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন কঠিন বর্জ্য বা স্ল্যাগ মূলত ক্যালসিয়াম, লোহা, সিলিকন ও ম্যাগনেশিয়ামের অক্সাইড দিয়ে গঠিত। এই বর্জ্য কঠিন পাথরে পরিণত হয়। আগে ধারণা করা হতো, প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে হাজার হাজার বছর সময় প্রয়োজন হয়ে থাকে। তবে মাত্র ৩৫ বছরের মধ্যে এই শিল্পবর্জ্য কঠিন পাথরে রূপান্তরিত হয়েছে।

‘জিওলজি’ সাময়িকীতে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বর্জ্যের কঠিন পদার্থের রূপান্তরের বিষয়টি প্রকাশ করেছেন। যুক্তরাজ্যের গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব জিওগ্রাফিক্যাল অ্যান্ড আর্থ সায়েন্সেসের বিজ্ঞানী আমান্ডা ওয়েন বলেন, ‘কয়েক শ বছর ধরে আমরা শিলাচক্রকে একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া হিসেবে জানি। এই প্রক্রিয়ায় হাজার হাজার থেকে লাখ লাখ বছর সময় লাগে। আমরা দেখেছি মানবসৃষ্ট বর্জ্য প্রাকৃতিক ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। কয়েক দশকের মধ্যে লিথিফাইড শিলায় পরিণত হচ্ছে।’

বিজ্ঞানী জন ম্যাকডোনাল্ড বলেন, ‘আমরা অসাধারণ নির্ভুলতার সঙ্গে এই প্রক্রিয়াটির তারিখ নির্ধারণ করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা ১৯৩৪ সালের রাজা পঞ্চম জর্জ প্রবর্তিত মুদ্রা ও ১৯৮৯ সালের একটি অ্যালুমিনিয়াম ক্যান উভয়ই পেয়েছি, যার নকশা আমরা বুঝতে পেরেছিলাম। এই শিলা গঠনের জন্য সর্বোচ্চ ৩৫ বছর সময়সীমা দেখা যায়।’

নতুন এ গবেষণায় বলা হয়েছে, আধুনিক বিশ্বে মানুষ যে বর্জ্য পদার্থ তৈরি করছে, তা ভবিষ্যতের ওপর অপরিবর্তনীয় প্রভাব ফেলবে। এ বিষয়ে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, সবকিছুই একসময় শিলা হিসেবে অবস্থান করবে। এই প্রক্রিয়ায় আসলে কত সময় লাগবে, তা নিয়ে ধারণা কম ছিল।

সূত্র: এনডিটিভি

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ল পবর জ য প রক র য বর জ য

এছাড়াও পড়ুন:

বগুড়ায় ফুটপাত দখল করে দোকানের পসরা, কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ

বগুড়া শহরের সার্কিট হাউস-কালীবাড়ি মোড় সড়কে সারি সারি ভ্যানে হরেক খাবারের পসরা। পিৎজা, বার্গার, স্যান্ডউইচ, চিকেন শর্মা, মিটবক্স—সবই মিলছে রাস্তার পাশের এসব দোকানে। ক্রেতারা মূলত কিশোর ও তরুণ-তরুণী।

দোকানগুলোতে নেই কোনো আলাদা শেফ। বিক্রেতারাই নিজের হাতে খাবার তৈরি করছেন, পরিবেশনও করছেন। কারও হাতে গ্লাভস নেই, শরীরে নেই অ্যাপ্রোন। বিকেল গড়াতেই এসব ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকানে ভিড় জমছে। কোর্ট হাউস স্ট্রিটের পাশেই আছে ‘পিজ অ্যান্ড বার্গ’, ‘পদ্মা ফুডস’ ও ‘হিলিয়াম রেস্টুরেন্ট’-এর মতো নামীদামি খাবারের দোকান। একসময় সন্ধ্যায় এসব প্রতিষ্ঠানে ক্রেতার ঢল নামত। এখন সে ভিড় চলে গেছে রাস্তার পাশে বসা দোকানগুলোর দিকে।

পদ্মা ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জলেশ্বরীতলা ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমদাদ আহমেদ বলেন, ‘অভিজাত এ এলাকায় একটি খাবারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। অন্তত ১৪টি প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিতে হয়। এসব নবায়নে প্রতিবছর মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হয়। ভবন ভাড়া, দামি শেফ ও কর্মচারীর বেতন—সব মিলিয়ে খরচ বিপুল। অথচ রাস্তার পাশে ভ্যানে বসা দোকানে বিনিয়োগ মাত্র ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। কোনো সনদ নেই, দোকানভাড়া নেই, কর্মচারীও নেই। শুধু দামে সস্তা বলে ক্রেতারা ঝুঁকছেন ওদিকে। সড়ক দখল করে দোকান বসায় যানজটও বাড়ছে। অভিযোগ করেও প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো প্রতিকার মিলছে না।

বগুড়া হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম দেলোয়ার হোসেন বলেন, জলেশ্বরীতলা অভিজাত এলাকা। এখানে দোকান দিতে বিপুল বিনিয়োগ লাগে। নামীদামি দোকানে একটি পিৎজার দাম ৫০০ টাকা হলে ভ্রাম্যমাণ দোকানে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলেও ক্রেতারা সস্তা পেয়ে সেখান থেকেই কিনছেন। এতে অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলো লোকসানে পড়ছে। এর সঙ্গে তিনি যুক্ত করেন, ‘আমরা স্ট্রিট ফুড ব্যবসার বিরোধী নই। তবে সেটা অভিজাত এলাকা থেকে সরিয়ে পৌর পার্ক, অ্যাডওয়ার্ড পার্কসংলগ্ন সড়ক কিংবা সরকারি আজিজুল হক কলেজের পাশের এলাকায় নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি।’

সড়কজুড়ে দোকান, ভোগান্তিতে শহরবাসী

সম্প্রতি দেখা যায়, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে সড়কের এক পাশে ২০-২৫টি ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান বসেছে। অন্য পাশে ফলের দোকান। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আদালত প্রাঙ্গণের সামনে যানজট লেগেই থাকে।

এ ছাড়া পৌরসভা লেন, জেলা খানা মোড়, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকী সড়ক, মহিলা ক্লাব মোড়, শহীদ আবদুল জব্বার সড়ক, সাতমাথা-সার্কিট হাউস সড়কসহ শহরের নানা সড়কেই বসছে ফুচকা, চটপটি, জুস, ফাস্ট ফুড ও ফলের দোকান।

সাতমাথায় প্রতিদিন বসছে অর্ধশতাধিক দোকান। জিলা স্কুলের সামনে চটপটি ও কাবাবের দোকানগুলোর চেয়ার বসানো হয়েছে ফুটপাত দখল করে। কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, থানা মোড়, বড়গোলা, দত্তবাড়ি, কালিতলা—সবখানেই দুই পাশে দোকান।

রাস্তা দখল করে দোকান বসানোয় বেশির ভাগ সময় যানজটে থাকে শহরে। সম্প্রতি তোলা

সম্পর্কিত নিবন্ধ