চাকরিচ্যুত পুলিশ ও সেনা সদস্যের নেতৃত্বে উত্তরায় লুট হয় কোটি টাকা
Published: 19th, June 2025 GMT
রাজধানীর উত্তরায় নগদ কোম্পানির ডিস্ট্রিবিউটরের কাছ থেকে র্যাব পরিচয়ে ১ কোটি ৮ লাখ ১১ হাজার টাকা লুটে জড়িত চক্রটির পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এবং পুলিশের উত্তরা বিভাগ ও উত্তরা পশ্চিম থানা। অভিযানে নগদ ২২ লাখ ১০ হাজার ৭৮০ টাকা, ব্যাংকে গচ্ছিত ১২ লাখ টাকা ও হায়েস গাড়ি উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ বলছে, ছিনতাইকারী চক্রের দলনেতা মোস্তফা ওরফে শাহিন একজন চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্য এবং শেখ মো.
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- গোলাম মোস্তফা ওরফে শাহিন, শেখ মো. জালাল উদ্দিন ওরফে রবিউল, ইমদাদুল শরীফ, সাইফুল ইসলাম ওরফে শিপন ও মো. হাসান। বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এতে পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার মহিদুল ইসলাম বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় প্রথমে ঘটনায় ব্যবহৃত মাইক্রোবাস ও চালককে শনাক্ত করা হয়। এরপর বুধবার রাত ১টা ৪৫ মিনিটে খিলগাঁও থানা এলাকা থেকে মাইক্রোবাসের চালক মো. হাসানকে গ্রেপ্তার করে উত্তরা পশ্চিম থানার একটি দল। এ সময় তার কাছ থেকে নকল নেমপ্লেট ও নগদ ৮ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, হাসানের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে সবুজবাগ থানার মাদারটেক চৌরাস্তার স্বপন মিয়ার গ্যারেজ থেকে ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি জব্দ করা হয়। অন্যদিকে ডিবি উত্তরা বিভাগের একটি দল ঘটনাস্থলসহ আশপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে। পরবর্তীতে চক্রের মূলহোতা গোলাম মোস্তফা ঘরামী ওরফে শাহিনকে বুধবার রাত ১০টা ৪০ মিনিটে ঢাকার উত্তরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে লুণ্ঠিত ১৩ লাখ ৩৪ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
মহিদুল ইসলাম বলেন, শাহিনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ইমদাদুল শরীফকে রাত ১১টা ৫০মিনিটে আদাবর থানাধীন বায়তুল আমান হাউজিং এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে লুণ্ঠিত ৮ লাখ ৪ হাজার ৭৮০ টাকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার শাহিন ও শরীফের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শেখ মো. জালাল উদ্দিনকে একই দিন রাতে সবুজবাগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে নগদ ৬৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জালাল নিজেকে ক্যাপ্টেন জালাল হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেন। জালাল ঘটনার পরদিন লুণ্ঠিত ১২ লাখ টাকা ঢাকা ব্যাংকের নিজ নামীয় অ্যাকাউন্টে জমা করেন। ওই টাকা জব্দের ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
উপকমিশনার জানান, গ্রেপ্তারদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চক্রের অন্য সদস্য সাইফুল ইসলাম ওরফে শিপনকে বুধবার রাতে এয়ারপোর্ট রেলস্টেশন এলাকায় গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে র্যাব ও পুলিশের নকল আইডি কার্ড, লাঠি, সিগনাল লাইট, সেনাবাহিনীর লোগো সম্বলিত মানিব্যাগ, বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবই ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
উত্তরা পশ্চিম থানা সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ জুন সকালে নগদের ডিস্ট্রিবিউটর আব্দুল খালেক নয়ন তার উত্তরার বাসা থেকে প্রতিষ্ঠানের চারজন কর্মচারীসহ চারটি ব্যাগে ১ কোটি ৮ লাখ ১১ হাজার টাকা নিয়ে দুটি মোটরসাইকেল যোগে উত্তরার নগদের অফিসের উদ্দেশে রওনা হন। পথে উত্তরা ১২ ও ১৩ নম্বর রোডের সংযোগস্থলে একটি কালো রঙের হায়েজ মাইক্রোবাস তাদের গতিরোধ করে। মাইক্রোবাস থেকে ‘র্যাব’ লেখা কালো কোটি পরিহিত মুখে কালো কাপড় বাঁধা ৬ থেকে ৭ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি হাতে অস্ত্র নিয়ে নামেন। তাদের কাছে আসতে দেখে নগদের টাকা বহনকারী কর্মচারীরা টাকার ব্যাগ নিয়ে দৌড়ানোর চেষ্টা করেন।
তখন দুষ্কৃতকারীরা তাদের ধাওয়া করে চারটি ব্যাগে থাকা টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং তাদের তিনজনকে মাইক্রোবাসে তুলে হাত-চোখ বেঁধে মারধর করে। ঘটনাস্থল থেকে একজন কর্মচারী পালাতে সক্ষম হন। পরে ডাকাতরা তিনজনকে তুরাগ থানার ১৭ নম্বর সেক্টরের বৃন্দাবন এলাকায় ফেলে রেখে টাকা, দুটি অফিসিয়াল মোবাইল ফোন ও তিনটি ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় আব্দুর রহমানের অভিযোগের ভিত্তিতে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা হয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ল টপ ট ছ নত ই এ সময় ত র ক ছ থ ক গ র প ত র কর ল ইসল ম সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
আপনার এত সাহস হয় কী করে, সাংবাদিককে নায়িকা
ভারতীয় সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী লক্ষ্মী মাঞ্চু। তার পরবর্তী সিনেমা ‘ঢাকসা’। এ সিনেমার মুক্তি উপলক্ষে নানা ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ৪৭ বছরের এই অভিনেত্রী। কয়েক দিন আগে গ্রেট অন্ধ্রকে সাক্ষাৎকার দেন লক্ষ্মী। এ আলাপচারিতার পোশাক নিয়ে প্রশ্ন করায় লক্ষ্মী বলেন— “আপনার এত সাহস হয় কী করে!”
মুম্বাইয়ে যাওয়ার ফলে কি আপনার পোশাকের স্টাইলে কোনো প্রভাব পড়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে লক্ষ্মী বলেন, “আমি আমেরিকাতে থেকেছি। সেখান থেকে হায়দরাবাদে, এখন মুম্বাইয়ে আছি। আমি কঠোর পরিশ্রম করেছি নিজেকে এইভাবে উপস্থাপন করার জন্য। এই পরিশ্রম আমাকে আত্মবিশ্বাসী করেছে, যা আমাকে আমার মতো পোশাক পরতে উৎসাহ দেয়।”
এরপর সাংবাদিক সরাসরি লক্ষ্মীর পোশাক নিয়ে প্রশ্ন করেন, জবাবে এই অভিনেত্রী বলেন, “আপনি কি একজন পুরুষকে একই প্রশ্ন করতেন? আপনার এত সাহস হয় কী করে! আপনি কি মহেশ বাবুকে বলতেন—‘আপনার তো এখন ৫০ বছর বয়স, তাহলে আপনি কেন জামা খুলে ছবি তুলছেন?’ তাহলে একজন নারীকে কেন এই প্রশ্ন? মানুষ আপনার এই প্রশ্ন থেকে কী শিখবে? একজন সাংবাদিক হিসেবে আপনার দায়িত্বশীল হওয়া উচিত।”
পরে সাংবাদিক স্বীকার করেন যে, এই ধরনের প্রশ্ন একজন অভিনেতাকে করতেন না। প্রশ্নটি করার কারণ ব্যাখ্যা করে সাংবাদিক জানান, তার পোশাক নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা ধরনের চর্চা চলছে, যার কারণে এই প্রশ্ন সামনে নিয়ে আসা।
লক্ষ্মী মাঞ্চুর অন্য পরিচয় তিনি তেলেগু সিনেমার বরেণ্য অভিনেতা মোহন বাবুর কন্যা। ৫০ বছরের অভিনয় ক্যারিয়ারে অসংখ্য সিনেমায় অভিনয় করেছেন মোহন বাবু। ব্যক্তিগত জীবনে বিদ্যা দেবীর সঙ্গে ঘর বাঁধেন তিনি। এ সংসারে রয়েছে কন্যা লক্ষ্মী ও পুত্র বিষ্ণু মাঞ্চু। তারা দুজনেই অভিনয়শিল্পী।
তথ্যসূত্র: দ্য ফ্রি প্রেস জার্নাল
ঢাকা/শান্ত