ইসরায়েলি হামলায় যুক্তরাষ্ট্র যোগ দিলে নরক নেমে আসবে: ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী
Published: 20th, June 2025 GMT
ইসরায়েলি হামলায় যুক্তরাষ্ট্র যোগ দিলে সমগ্র অঞ্চলের জন্য নরক নেমে আসবে। বিবিসিকে এমনটাই বলেছেন ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সাঈদ খতিবজাদে। তিনি বলেন, ‘এটা আমেরিকার যুদ্ধ নয়।’
ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যদি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই যুদ্ধে জড়ান, তাহলে তিনি ইতিহাসে চিরকাল এমন একজন প্রেসিডেন্ট হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবেন, যিনি এমন এক যুদ্ধে পা রেখেছিলেন, যা তাঁর যুদ্ধ নয়।’
যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা এ সংঘাতকে একটি জটিল ফাঁদে পরিণত করবে বলে মন্তব্য করেন সাঈদ খতিবজাদে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এতে আগ্রাসন চলতে থাকবে। নৃশংস নির্যাতনের অবসান আরও বিলম্বিত হবে।
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের দক্ষিণের সোরোকা হাসপাতাল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর সাঈদ খতিবজাদে এসব কথা বলেন।
ইরানের সরকারি গণমাধ্যম জানিয়েছে, এ হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল হাসপাতালের পাশের একটি সামরিক স্থাপনা। হামলার লক্ষ্যবস্তু হাসপাতাল ছিল না।
ইসরায়েলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সোরোকা মেডিকেল সেন্টারে ইরানের হামলার ঘটনায় ৭১ জন আহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ‘নিষ্ক্রিয়’ আরাক ভারী পানি চুল্লি ও নাতাঞ্জ পারমাণবিক স্থাপনা।
আরও পড়ুনইরান নিয়ে সিদ্ধান্ত দুই সপ্তাহের মধ্যে : ট্রাম্প৮ ঘণ্টা আগেইসরায়েলি হামলায় ইরানে কতজন হতাহত হয়েছেন, সে বিষয়ে হালনাগাদ তথ্য দেয়নি তেহরান।
গতকাল বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউস জানায়, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সিদ্ধান্ত নেবেন, যুক্তরাষ্ট্র এই সংঘাতে সরাসরি জড়াবে কি না।
বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সাঈদ খতিবজাদে জোর দিয়ে বলেন, সংকট নিরসনের ক্ষেত্রে অবশ্যই কূটনীতি তেহরানের প্রথম পছন্দ।
তবে ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথাও বলেন, ‘বোমাবর্ষণ চলতে থাকলে আমরা কোনো আলোচনা শুরু করতে পারি না।’
আরও পড়ুনট্রাম্প কেন এই সময়ে পাকিস্তানি সেনাপ্রধানকে হোয়াইট হাউসে আপ্যায়ন করলেন৯ ঘণ্টা আগেইসরায়েলে ইরানের পাল্টা হামলাকে জাতিসংঘ সনদের ৫১ অনুচ্ছেদের অধীনে ‘আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে বর্ণনা করেন সাঈদ খতিবজাদে।
ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৩ জুন যখন সংঘাত নাটকীয়ভাবে বাড়ে, সে সময় তেহরান কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্যেই ছিল।
গত শুক্রবার ইরানে নজিরবিহীন হামলা চালায় ইসরায়েল। তারা ইরানের কয়েকজন শীর্ষ জেনারেল ও পরমাণুবিজ্ঞানীকে হত্যা করে। জবাবে ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালায় ইরান। এক সপ্তাহ ধরে ইসরায়েল-ইরানের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছে।
আরও পড়ুনইরানের সরকার পরিবর্তনে যুক্তরাষ্ট্রের ৭২ বছরের আগের ভূমিকায় কি নামছেন ট্রাম্প১১ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনইরানে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য হামলা নিয়ে ট্রাম্প শিবিরেই ঘোর অসন্তোষ-বিভক্তি১৭ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় ফুটপাত দখল করে দোকানের পসরা, কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ
বগুড়া শহরের সার্কিট হাউস-কালীবাড়ি মোড় সড়কে সারি সারি ভ্যানে হরেক খাবারের পসরা। পিৎজা, বার্গার, স্যান্ডউইচ, চিকেন শর্মা, মিটবক্স—সবই মিলছে রাস্তার পাশের এসব দোকানে। ক্রেতারা মূলত কিশোর ও তরুণ-তরুণী।
দোকানগুলোতে নেই কোনো আলাদা শেফ। বিক্রেতারাই নিজের হাতে খাবার তৈরি করছেন, পরিবেশনও করছেন। কারও হাতে গ্লাভস নেই, শরীরে নেই অ্যাপ্রোন। বিকেল গড়াতেই এসব ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকানে ভিড় জমছে। কোর্ট হাউস স্ট্রিটের পাশেই আছে ‘পিজ অ্যান্ড বার্গ’, ‘পদ্মা ফুডস’ ও ‘হিলিয়াম রেস্টুরেন্ট’-এর মতো নামীদামি খাবারের দোকান। একসময় সন্ধ্যায় এসব প্রতিষ্ঠানে ক্রেতার ঢল নামত। এখন সে ভিড় চলে গেছে রাস্তার পাশে বসা দোকানগুলোর দিকে।
পদ্মা ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জলেশ্বরীতলা ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমদাদ আহমেদ বলেন, ‘অভিজাত এ এলাকায় একটি খাবারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। অন্তত ১৪টি প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিতে হয়। এসব নবায়নে প্রতিবছর মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হয়। ভবন ভাড়া, দামি শেফ ও কর্মচারীর বেতন—সব মিলিয়ে খরচ বিপুল। অথচ রাস্তার পাশে ভ্যানে বসা দোকানে বিনিয়োগ মাত্র ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। কোনো সনদ নেই, দোকানভাড়া নেই, কর্মচারীও নেই। শুধু দামে সস্তা বলে ক্রেতারা ঝুঁকছেন ওদিকে। সড়ক দখল করে দোকান বসায় যানজটও বাড়ছে। অভিযোগ করেও প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো প্রতিকার মিলছে না।
বগুড়া হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম দেলোয়ার হোসেন বলেন, জলেশ্বরীতলা অভিজাত এলাকা। এখানে দোকান দিতে বিপুল বিনিয়োগ লাগে। নামীদামি দোকানে একটি পিৎজার দাম ৫০০ টাকা হলে ভ্রাম্যমাণ দোকানে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলেও ক্রেতারা সস্তা পেয়ে সেখান থেকেই কিনছেন। এতে অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলো লোকসানে পড়ছে। এর সঙ্গে তিনি যুক্ত করেন, ‘আমরা স্ট্রিট ফুড ব্যবসার বিরোধী নই। তবে সেটা অভিজাত এলাকা থেকে সরিয়ে পৌর পার্ক, অ্যাডওয়ার্ড পার্কসংলগ্ন সড়ক কিংবা সরকারি আজিজুল হক কলেজের পাশের এলাকায় নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি।’
সড়কজুড়ে দোকান, ভোগান্তিতে শহরবাসীসম্প্রতি দেখা যায়, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে সড়কের এক পাশে ২০-২৫টি ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান বসেছে। অন্য পাশে ফলের দোকান। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আদালত প্রাঙ্গণের সামনে যানজট লেগেই থাকে।
এ ছাড়া পৌরসভা লেন, জেলা খানা মোড়, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকী সড়ক, মহিলা ক্লাব মোড়, শহীদ আবদুল জব্বার সড়ক, সাতমাথা-সার্কিট হাউস সড়কসহ শহরের নানা সড়কেই বসছে ফুচকা, চটপটি, জুস, ফাস্ট ফুড ও ফলের দোকান।
সাতমাথায় প্রতিদিন বসছে অর্ধশতাধিক দোকান। জিলা স্কুলের সামনে চটপটি ও কাবাবের দোকানগুলোর চেয়ার বসানো হয়েছে ফুটপাত দখল করে। কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, থানা মোড়, বড়গোলা, দত্তবাড়ি, কালিতলা—সবখানেই দুই পাশে দোকান।
রাস্তা দখল করে দোকান বসানোয় বেশির ভাগ সময় যানজটে থাকে শহরে। সম্প্রতি তোলা