যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র জড়ালে নরক নেমে আসবে: ইরান
Published: 20th, June 2025 GMT
ইরানে হামলায় ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র যোগ দিলে তা সমগ্র অঞ্চলের জন্য নরক নেমে আসবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সাঈদ খতিবজাদে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই যুদ্ধে নিজেকে জড়িয়ে ফেললে তা হবে পঙ্কিলময়। এতেতে গোটা অঞ্চলই নরকে পরিণত হবে। বৃহস্পতিবার বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি।
সাঈদ খতিবজাদে বলেছেন, ‘এটা আমেরিকার যুদ্ধ নয়। যদি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই যুদ্ধে জড়ান তাহলে ইতিহাস তাকে মনে রাখবে এমন একজন প্রেসিডেন্ট হিসাবে যিনি একটি যুদ্ধে নাম লিখিয়েছেন, যা তারই ছিল না।’
ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা এই সংঘাতকে একটি জটিল ফাঁদে পরিণত করবে। এতে আগ্রাসন চলতে থাকবে। নৃশংস নির্যাতনের অবসান আরও বিলম্বিত হবে।
সাক্ষাৎকারে খতিবজাদেহ বলেন, ইরান কূটনীতি চায়। কিন্তু তার দেশের বিরুদ্ধে বোমাবর্ষণ অব্যাহত থাকলে কেউ আলোচনায় যেতে পারবে না। যে মুহূর্তে এই আগ্রাসন বন্ধ হবে, অবশ্যই কূটনীতিই হবে প্রথম বিকল্প। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরান পারমাণবিক চুক্তির দ্বারপ্রান্তে ছিল। কিন্তু সেই চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার আগেই নাশকতা চালিয়ে সুযাগ নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল রোববার। কিন্তু শুক্রবার রাতে ইসরায়েল ইরানে হামলা চালায়। এরপরই ইরান জানায়, ইসরায়েলের হামলার পর এই আলোচনার আর কোনও অর্থ হয় না।
এদিকে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য সামরিক হামলার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার জন্য আরও দুই সপ্তাহ সময় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সিএনএনের খবরে বলা হয়, বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন ল্যাভিট এ বিষয়ে ব্রিফিং করেন।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি বলেন, ইরানের সঙ্গে যেকোনো চুক্তির ক্ষেত্রে ‘ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ না করার বিষয়টি’ অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে। তিনি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগের অবস্থান পুনরায় তুলে ধরে বলেন, ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের সুযোগ দেওয়া যাবে না।
এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৩ জুন ইরানে ইসরায়েলের অভিযান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত রাজধানী তেহরান ও অন্যান্য শহরে নিহত হয়েছেন মোট ৫৮৫ জন। এই নিহতদের মধ্যে ১২৬ জনকে সামরিক এবং ২৩৯ জনকে বেসামরিক হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে।
ইসরায়েলের হামলা শুরুর পরের দিন ১৪ জুন নিহত ও আহতদের একটি পরিসংখ্যান জানিয়েছিল ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সেখানে বলা হয়েছিল, তেহরান ও আক্রান্ত অন্যান্য শহরে ২২৪ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১ হাজার ২৭৭ জন।
যদিও ইরান সংঘাতের ঘটনায় নিয়মিত মৃতের সংখ্যা প্রকাশ করেনি। সোমবার প্রকাশিত সর্বশেষ হালনাগাদে মৃতের সংখ্যা ২২৪ জন এবং আহতের সংখ্যা ১২৭৭ জন বলে জানানো হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র য ক তর ষ ট র র ইসর য় ল র
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় ফুটপাত দখল করে দোকানের পসরা, কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ
বগুড়া শহরের সার্কিট হাউস-কালীবাড়ি মোড় সড়কে সারি সারি ভ্যানে হরেক খাবারের পসরা। পিৎজা, বার্গার, স্যান্ডউইচ, চিকেন শর্মা, মিটবক্স—সবই মিলছে রাস্তার পাশের এসব দোকানে। ক্রেতারা মূলত কিশোর ও তরুণ-তরুণী।
দোকানগুলোতে নেই কোনো আলাদা শেফ। বিক্রেতারাই নিজের হাতে খাবার তৈরি করছেন, পরিবেশনও করছেন। কারও হাতে গ্লাভস নেই, শরীরে নেই অ্যাপ্রোন। বিকেল গড়াতেই এসব ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকানে ভিড় জমছে। কোর্ট হাউস স্ট্রিটের পাশেই আছে ‘পিজ অ্যান্ড বার্গ’, ‘পদ্মা ফুডস’ ও ‘হিলিয়াম রেস্টুরেন্ট’-এর মতো নামীদামি খাবারের দোকান। একসময় সন্ধ্যায় এসব প্রতিষ্ঠানে ক্রেতার ঢল নামত। এখন সে ভিড় চলে গেছে রাস্তার পাশে বসা দোকানগুলোর দিকে।
পদ্মা ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জলেশ্বরীতলা ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমদাদ আহমেদ বলেন, ‘অভিজাত এ এলাকায় একটি খাবারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। অন্তত ১৪টি প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিতে হয়। এসব নবায়নে প্রতিবছর মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হয়। ভবন ভাড়া, দামি শেফ ও কর্মচারীর বেতন—সব মিলিয়ে খরচ বিপুল। অথচ রাস্তার পাশে ভ্যানে বসা দোকানে বিনিয়োগ মাত্র ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। কোনো সনদ নেই, দোকানভাড়া নেই, কর্মচারীও নেই। শুধু দামে সস্তা বলে ক্রেতারা ঝুঁকছেন ওদিকে। সড়ক দখল করে দোকান বসায় যানজটও বাড়ছে। অভিযোগ করেও প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো প্রতিকার মিলছে না।
বগুড়া হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম দেলোয়ার হোসেন বলেন, জলেশ্বরীতলা অভিজাত এলাকা। এখানে দোকান দিতে বিপুল বিনিয়োগ লাগে। নামীদামি দোকানে একটি পিৎজার দাম ৫০০ টাকা হলে ভ্রাম্যমাণ দোকানে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলেও ক্রেতারা সস্তা পেয়ে সেখান থেকেই কিনছেন। এতে অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলো লোকসানে পড়ছে। এর সঙ্গে তিনি যুক্ত করেন, ‘আমরা স্ট্রিট ফুড ব্যবসার বিরোধী নই। তবে সেটা অভিজাত এলাকা থেকে সরিয়ে পৌর পার্ক, অ্যাডওয়ার্ড পার্কসংলগ্ন সড়ক কিংবা সরকারি আজিজুল হক কলেজের পাশের এলাকায় নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি।’
সড়কজুড়ে দোকান, ভোগান্তিতে শহরবাসীসম্প্রতি দেখা যায়, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে সড়কের এক পাশে ২০-২৫টি ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান বসেছে। অন্য পাশে ফলের দোকান। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আদালত প্রাঙ্গণের সামনে যানজট লেগেই থাকে।
এ ছাড়া পৌরসভা লেন, জেলা খানা মোড়, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকী সড়ক, মহিলা ক্লাব মোড়, শহীদ আবদুল জব্বার সড়ক, সাতমাথা-সার্কিট হাউস সড়কসহ শহরের নানা সড়কেই বসছে ফুচকা, চটপটি, জুস, ফাস্ট ফুড ও ফলের দোকান।
সাতমাথায় প্রতিদিন বসছে অর্ধশতাধিক দোকান। জিলা স্কুলের সামনে চটপটি ও কাবাবের দোকানগুলোর চেয়ার বসানো হয়েছে ফুটপাত দখল করে। কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, থানা মোড়, বড়গোলা, দত্তবাড়ি, কালিতলা—সবখানেই দুই পাশে দোকান।
রাস্তা দখল করে দোকান বসানোয় বেশির ভাগ সময় যানজটে থাকে শহরে। সম্প্রতি তোলা