দক্ষিণ ইসরায়েলের বিরসেবা শহরে মাইক্রোসফট অফিসের কাছে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। এতে কিছু আবাসিক ভবনে ক্ষতি হয়েছে। অগ্নিনির্বাপক সদস্যদের ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ চালানোর ছবি দেখা গেছে। এতে পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ইরান আবারও গ্যাভ-ইয়াম উন্নত প্রযুক্তি পার্ককে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো শুরু করেছে। 

স্থানীয় কিছু গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, একটি ক্ষেপণাস্ত্র বিরশেবা মাইক্রোসফট ভবনের কাছে আঘাত হেনেছে। এছাড়া একটি গাড়ি পুড়ে গেছে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, ইরান ইসরায়েলের ওপর এ হামলা চালিয়েছে। তবে ইরানের পক্ষ থেকে এই হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

ইসরায়েলের রেলওয়ে কর্মকর্তার বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলার কারণে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে রেলস্টেশন সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শহর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উদ্ধারকারী দল সেখানে কাজ করছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার ভোরে বিরসেবায় ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। এ সময় পুরো শহরে সতর্কসংকেত বেজে ওঠে।

ইসরায়েলের জরুরি উদ্ধারকারী দল মেগান ডেভিড অ্যাডম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ছবি প্রকাশ করেছে। 

এর আগে বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের তেল আবিবসহ তিন জায়গায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। ইসরায়েলের হোলোন, তেল আবিব ও রামাতগনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান।  ইসরায়েলি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় হোলোন শহরে তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। রামাতগন এলাকায় প্রায় ২০ জন হালকা আঘাত পেয়েছেন বলে জানানো হয়েছে। তেল আবিবও হামলার শিকার হয়েছে।

ইসরায়েলের সাহায্য সংস্থাগুলো বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, ইরানি হামলায় মোট আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫ জনে। ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এটি ছিল ‌‘ইরানি সশস্ত্র বাহিনীর ১৪তম শক্তিশালী সমন্বিত হামলা’ যা তারা বিভিন্ন কৌশলগত স্থাপনার ওপর চালিয়েছে। তবে এর চেয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি তারা।

ইসরায়েলি পুলিশ সাধারণ মানুষকে অনুরোধ করেছে, তারা যেন ক্ষেপণাস্ত্র আঘাতপ্রাপ্ত হাসপাতালে না যান। কারণ তারা সেখানে ‘বিপজ্জনক পদার্থ’ থাকার আশঙ্কা করছেন। সম্ভবত গত কয়েক দিনের মধ্যে এটি ইসরায়েলে সবচেয়ে বড় ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা। যেখানে ইসরায়েলের একজন সামরিক কর্মকর্তা বলেছেন, বহু ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে।

ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বিরশেবায় অবস্থিত সোরোকা হাসপাতাল ইরানের বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কবলে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গিয়েছে ধোঁয়ার বড় বড় কুণ্ডুলি, ভাঙা জানালা ও মানুষকে দেখা গিয়েছে চিৎকার করে করিডোর দিয়ে ছুটতে।

এক মুখপাত্র বলেছেন, হাসপাতালটি ‘ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত’ হয়েছে। এখন মানুষদের এই এলাকা থেকে দূরে থাকতে বলা হচ্ছে। কারণ ‘বিপজ্জনক পদার্থের লিক’ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে পুলিশ সাধারণ মানুষকে ওই এলাকায় থেকে দূরে থাকার জন্য অনুরোধ করেছে।

ইসরায়েলের অন্যান্য স্থানে কমপক্ষে তিনটি আঘাতের খবর পাওয়া গিয়েছে। তবে তা এখনও নিশ্চিত নয়।

বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন, যখন ক্ষেপণাস্ত্রগুলো এসে পড়ছিল তখন জেরুজালেম থেকে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা গিয়েছে তা অবশ্যই কয়েক দিনের মধ্যে সবচেয়ে জোরালো ছিল। ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাতের স্থানে ব্যাপক ধ্বংসাবশেষ দেখা যাচ্ছে ইসরায়েলের রামাত গান এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত স্থানের কিছু ছবি প্রকাশ পেয়েছে।

শুধু সোরোকা হাসপাতাল নয়, ইসরায়েলের আরও অনেক জায়গায় হামলার ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখানে তেল আভিভের রামাত গান এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের ছবি ধারণ করা হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

বনানীতে গুলিবিদ্ধ সেই হাসপাতালকর্মীর মৃত্যু

রাজধানীর বনানীতে গুলিতে আহত হওয়া বক্ষব্যাধি হাসপাতালের এক সাবেক কর্মী চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মারা গেছেন। সোমবার রাত সোয়া ১০টার দিকে তিনি মারা যান।

নিহত জামান হোসেন (৪০) বক্ষব্যাধি হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ছিলেন এবং একসময় চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর সংগঠনের (অফিস ক্লাব) সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

জামান হোসেনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, সোমবার রাত সোয়া ১০টার দিকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি বনানী থানা-পুলিশকে জানানো হয়েছে।

জামানের বড় ভাই সালাউদ্দিন জানান, গত শুক্রবার রাত সোয়া আটটার দিকে বনানী থানাধীন বক্ষব্যাধি হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির অফিস ক্লাবের সামনে চা খেতে যান জামান। এ সময় হঠাৎ মুখোশধারী দুই দুর্বৃত্ত দূর থেকে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়।

জামানের ডান চোখের পাশে গুলি লাগে। পরে আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

নিহত জামান হোসেন মহাখালীর বক্ষব্যাধি হাসপাতালের স্টাফ কোয়ার্টারে থাকতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ