ন্যাটোর মাধ্যমে ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠাতে জোটটির সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে যুক্তরাষ্ট্র। এসব অস্ত্রের পুরো খরচ বহন করবে সামরিক জোটটি। অর্থাৎ ইউক্রেনে পাঠানো অস্ত্রের খরচ ন্যাটো সদস্য দেশগুলোর ওপর চাপিয়ে দিচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ ছাড়া ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে রাজি না হওয়ায় রাশিয়া নিয়ে আগামী সোমবার গুরুত্বপূর্ণ একটি বিবৃতি দেবেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিজেই এসব তথ্য জানিয়েছেন। খবর রয়টার্স ও সিএনএনের। 

ট্রাম্পের দেওয়া তথ্যমতে, ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠানোর সব খরচ বহন করবে ন্যাটো। ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা ন্যাটোর কাছে অস্ত্র পাঠাচ্ছি। আর সেসব অস্ত্রের সম্পূর্ণ খরচ বহন করছে ন্যাটো। এসব অস্ত্রের মধ্যে থাকবে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা।’ এ বিষয়ে ন্যাটোর পক্ষ থেকে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি। 

এর আগে বৃহস্পতিবার ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে ইউক্রেনকে অস্ত্র সহায়তা নিশ্চিতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানান। ওই পোস্টে তিনি লেখেন, ইউক্রেনের জন্য আরও গোলাবারুদ ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিতে নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গেও এ বিষয়ে কথা হয়েছে। এ ছাড়া, সহযোগী দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি, যাতে ইউক্রেন প্রয়োজনীয় সহায়তা পায়। 

সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প আরও জানান, আগামী সোমবার তিনি রাশিয়া নিয়ে একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা’ দেবেন। তবে ওই ঘোষণা কেমন হতে পারে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি। 

এদিকে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে দেশটির এক জ্যেষ্ঠ গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে দিনের বেলায় প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। রাজধানীর একটি পার্কিং লটে অজ্ঞাতপরিচয় এক হামলাকারী তাঁকে একাধিকবার গুলি করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

নিহত ওই কর্মকর্তা ইউক্রেনের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা এসবিইউর সদস্য ছিলেন। যদিও সংস্থাটি তাঁর নাম প্রকাশ করেনি, তবে ইউক্রেনীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, তিনি কর্নেল ইভান ভোরোনিচ। 
এসবিইউ মূলত ইউক্রেনের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এবং গোয়েন্দা নজরদারির কাজ করে। তবে ২০২২ সালে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আক্রমণের পর থেকে এসবিইউ সীমান্ত পেরিয়ে রাশিয়ার অভ্যন্তরে গুপ্তহত্যা এবং নাশকতা চালানোর ক্ষেত্রেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র ইউক র ন ইউক র ন র

এছাড়াও পড়ুন:

একটি দল ভাবছে, চাঁদাবাজির স্বাধীনতা পেয়েছে তারা 

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আমরা জনগণের স্বাধীনতা চেয়েছি; কিন্তু একটি দল মনে করছে তারা লুটপাট, দখলদারিত্ব আর চাঁদাবাজির স্বাধীনতা পেয়েছে। এক সময় ব্যবসায়ীরা রাজনীতির ছত্রছায়ায় মাফিয়ায় পরিণত হয়েছিল। এখন সেই মাফিয়া চক্রকেই আবার সামনে আনা হচ্ছে। আমরা এই দখলদার ও দুর্নীতিবাজ রাজনীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াব।

‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’র ১১তম দিনে গতকাল শুক্রবার রাতে খুলনার শিববাড়ী মোড়ে পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি। সুন্দরবনের গুরুত্ব তুলে ধরে নাহিদ বলেন, সুন্দরবন আমাদের প্রাকৃতিক ঢাল হিসেবে সব সময় রক্ষা করছে। নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে আমাদের রক্ষা করেছে। সুন্দরবনকে আমাদের রক্ষা করতে হবে।

ছাত্র-জনতা ও শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অন্যায় ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সবাইকে রাজপথে থাকতে হবে। গণঅভ্যুত্থানের পরও জাতীয় নাগরিক পার্টি মাঠে রয়েছে, আগামীতেও থাকবে। ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে এক সময় যেমনি রাজপথে নেমেছিল জনগণ, তেমনি এখনও প্রস্তুত থাকতে হবে। প্রয়োজনে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আবারও রাজপথে নামব।

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম বলেন, এখনও প্রকাশ্যে মানুষ খুন হচ্ছে। এই কি সেই জুলাই, যার স্বপ্ন আমরা দেখেছিলাম?

দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ব্যবসায়ীরা আগে শেখ হাসিনার সিরিয়াল ধরত, এখন ধরছে লন্ডনের সিরিয়াল। বিএনপি সেই ব্যবসায়ীদের থেঁতলে দিয়েছে। মানুষ আর এই ধোঁকাবাজি মানবে না।

এর আগে বিকেলে যশোর ঈদগাহ মোড়ে পথসভায় এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, একটি রাজনৈতিক দল দাবি করে, তাদের নাকি কোটি কোটি মানুষের দল। এই কোটি কোটি মানুষ আমাদের দেখাবেন না। আমরা ফ্যাসিবাদের আমলে দেখেছি কত মানুষ ছিল আপনাদের। সেই মানুষেরা কত আন্দোলন গড়ে তুলেছিল! আমাদের ডাকে আবাবিল পাখির মতো সব মানুষ রাস্তায় এসে দাঁড়িয়েছিল। আমাদের কোটি মানুষ দেখাবেন না, ওসব আমরা দেখেছি। ইনসাফ, ন্যায় থাকলে একজন মানুষও লাখো মানুষের সমান হয়ে উঠতে পারে।

তিনি আরও বলেন, আমরা সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন একসঙ্গে চাই। বিচার আর সংস্কার ছাড়া বাংলার জনগণ নির্বাচন মেনে নেবে না। যারা বিচার ও সংস্কার ছাড়া নির্বাচন চায়, তারাই নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন সদস্য সচিব আখতার হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ প্রমুখ।
আখতার হোসেন বলেন, বাংলাদেশে প্রত্যেকবার আন্দোলন হয়, জীবন দেয় ছাত্ররা, রক্ত দেয় ছাত্ররা আর কিছু রাজনৈতিক দল ফায়দা লোটে। এসব রাজনৈতিক দল ভেবেছিল, আন্দোলনের পর আমরা ঘরে ফিরে যাব। কিন্তু বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন দেখেছিলাম, বাংলাদেশকে যে সংস্কার করার স্বপ্ন দেখেছিলাম, সেটা না করে আমরা ঘরে ফিরব না।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমরা চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কথা বলি, আর মন খারাপ করে একটি দল। আমরা নির্বাচন কমিশনের দ্বিচারিতার কথা বলি; কিন্তু মন খারাপ করে একটি দল। আমরা 
সংস্কারের পক্ষে কথা বললে গোস্সা করে একটি দল। যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী দলে আছেন তারা গোস্‌সা হবেন না।

এর আগে দুপুরে যশোর শহরের একটি হোটেলে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে এনসিপি যশোর জেলা শাখা। সভায় বক্তব্য দেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, হাসনাত আব্দুল্লাহ প্রমুখ। সভায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদ চার পরিবারের সদস্য ও আহত ১৫ জন অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ