বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে শুধুমাত্র সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের জারি করা প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে নারায়ণগঞ্জে  মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থী,  শিক্ষক ও অভিভাবকরা। সমাবেশ শেষে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হয়।

বুধবার (৩০ জুলাই) সকাল ১১টায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদ আয়োজিত এই কর্মসুচিতে সিদ্ধিরগঞ্জের দেড় শতাধিক কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি  বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অংশ নেয়। শিক্ষার্থীদের হাতে " প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫ এ বৈষম্য কেন? শিক্ষা উপদেষ্টা জবাব চাই" সহ বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত প্লেকার্ড শোভা পায়।

সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের সভাপতি মজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা বিল্লাল হোসেন রবিন, ঢাকা কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের সভাপতি জি এইচ ফারুক, বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন পরিচালক ঐক্য পরিষদের সভাপতি মো: সামসুজ্জামান, প্রধান সমন্বয়ক মো: সাইফুল ইসলাম রুবেল, মহাসচিব মো: সাখাওয়াত হোসেন খান, সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ হোসেন ঢালী, শিক্ষক কাওসার আহমেদ, এসএম বিজয়, আল মামুন , তরিকুল ইসলাম, বাহাউদ্দিন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত ১৭ জুলাই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের জারি করা প্রজ্ঞাপনে শুধুমাত্র সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা হয়েছে। এতে দীর্ঘদিন ধরে এই পরীক্ষায় অংশ নেওয়া বেসরকারি, কিন্ডারগার্টেন ও এমপিও-বহির্ভূত বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত ও হতাশ হয়েছে।

বক্তারা আরও বলেন, “আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যৎ। অথচ কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত কোমলমতি শিশুদের বৃত্তি পরীক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে তাদের মৌলিক অধিকার হরণ করা হচ্ছে।”

তারা বলেন, দেশের প্রায় ৬০ হাজার কিন্ডারগার্টেনে প্রায় এক কোটি শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে, যাদের একটি বড় অংশ দীর্ঘ প্রস্তুতি নিয়ে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আশায় এগিয়ে এসেছে। এখন এই সিদ্ধান্ত তাদের স্বপ্ন ও শ্রমের প্রতি অবিচার।

বক্তারা অভিযোগ করেন, সরকার বৈষম্যহীন শিক্ষাব্যবস্থা গড়ার অঙ্গীকার করলেও বাস্তবে এই প্রজ্ঞাপন সেই প্রতিশ্রুতির পরিপন্থী। তারা প্রশ্ন তোলেন, “ই আই আই এন নম্বরধারী নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যদি এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হয়, তবে কেন নিবন্ধিত কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না?”

বক্তারা আরও বলেন ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন, প্রতিবাদ ও স্মারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে এই বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
সমাবেশ থেকে অবিলম্বে প্রজ্ঞাপন বাতিল করে সরকারি ও বেসরকারি সব প্রাথমিক শিক্ষার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়। অন্যথায় কঠোর আন্দোলন গড়ে তোরা হবে।

মানববন্ধন ও সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন, ১নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি নেজাম উদ্দিন শাহীন, ২নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি জাকির উল্লাহ সুজুন, ৩নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: আজহারুল ইসলাম, ৫নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: শামীম, ৬নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: জাবের হোসেন, ৮নং ওয়ার্ড  প্রতিনিধি মো: আল আমিন, ১০ নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি এড: মো: খোরশেদ আলম প্রমুখ।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ক ন ড রগ র ট ন পর ক ষ য় অ শ স দ ধ রগঞ জ ব সরক র বক ত র

এছাড়াও পড়ুন:

মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে সরকারি মতিলাল ডিগ্রি কলেজে সম্মান কোর্স চালুর দাবিতে মানববন্ধন

মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলায় সরকারি মতিলাল ডিগ্রি কলেজে স্নাতক (সম্মান) কোর্স চালুর দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী। আজ সোমবার দুপুরে কলেজের প্রধান ফটকে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।

কলেজ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭২ সালে কলেজটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে সরকারি মতিলাল ডিগ্রি কলেজে স্নাতক কোর্স চালুর দাবি জানিয়ে আসছেন উপজেলাবাসী। ২০১৪ সালের ১৯ মে কলেজ পরিচালনা কমিটির এক সভায় হিসাববিজ্ঞান ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক কোর্স খোলার সিদ্ধান্ত হয়। এর পরিপেক্ষিতে ২০১৫ সালে ২২ ডিসেম্বর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি বিধি অনুযায়ী ওই দুটি বিষয়ে প্রভাষক নিয়োগের জন্য লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

২০১৬ সালে ১ সেপ্টেম্বর নিয়োগ কমিটির সুপারিশ ও পরিচালনা পরিষদের অনুমোদনক্রমে ১৪ জন প্রভাষক নিয়োগ দেওয়া হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে স্নাতক কোর্স চালু করার অধিভুক্তির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি পরিদর্শক দল গঠন করে। তবে এরপর স্নাতক কোর্স চালুর ব্যাপারে আর কোনো অগ্রগতি নেই। কলেজে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে আদালতে মামলা চলমান।

কলেজটিতে স্নাতক কোর্স চালুর দাবিতে আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কলেজের প্রধান ফটকে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী। এতে বক্তব্য দেন কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী শেখ কায়ছার নাঈম, একাদশ শ্রেণির মারুফ হোসেন, দিশান মিয়া প্রমুখ। এ দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলা শাখার সাবেক জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক রমজান মাহমুদ, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোবারক হোসেন, স্থানীয় চকমিরপুর ইউনিয়ন যুবদলের সদস্যসচিব আবদুল হামিদ প্রমুখ।

সাইফুল ইসলাম বলেন, এ উপজেলায় প্রায় দুই লাখ লোকের বসবাস। উপজেলায় যমুনা নদীর দুর্গম এলাকায় পাঁচটি ইউনিয়ন রয়েছে। নদীভাঙন ও দুর্গম চরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেতে সরকারি মতিলাল ডিগ্রি কলেজে স্নাতক কোর্স চালুর দাবি জানিয়ে আসছেন এলাকাবাসী। তবে দীর্ঘদিনেও এই দাবি পূরণ হয়নি।

কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সত্যজিত দত্ত বলেন, প্রায় এক বছর আগে তিনি এই কলেজে যোগদান করেছেন। কলেজে স্নাতক কোর্স চালুর বিষয়ে তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। স্নাতক কোর্স না থাকায় এ উপজেলার অনেক শিক্ষার্থী জেলা সদরসহ দূরদূরান্তের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে পড়াশোনা করছেন। এতে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য বাড়তি অর্থ ব্যয় হচ্ছে। স্নাতক কোর্স চালু হলে এ উপজেলায় শিক্ষার মানোন্নয়ন পাশাপাশি এলাকায় আর্থসামাজিক উন্নয়নও ঘটবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জকসুর পথরেখা ও সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের আলটিমেটাম
  • জকসুর রোডম্যাপ ও সম্পূরক বৃত্তি দাবি শিক্ষার্থীদের
  • রূপগঞ্জে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
  • অবকাঠামো উন্নয়নের দাবিতে ববিতে মানববন্ধন
  • সিজু নিহতের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
  • মাদক ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুরে মিছিল-সমাবেশ
  • নেত্রকোনায় বাবরকে নিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর মন্তব্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন
  • মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে সরকারি মতিলাল ডিগ্রি কলেজে সম্মান কোর্স চালুর দাবিতে মানববন্ধন