ইউসিবি দ্বিতীয় পারপেচ্যুয়াল বন্ডের কুপন রেট ঘোষণা
Published: 4th, August 2025 GMT
পুঁজিবাজারে বন্ড খাতে তালিকাভুক্ত ইউসিবি দ্বিতীয় পারপেচ্যুয়াল বন্ডের অর্ধবার্ষিক সময়ের জন্য মুনাফা বা কুপন রেট ঘোষণা করা হয়েছে। ওই সময়ের জন্য বন্ডটির ইউনিটধারীদেরকে ১০ শতাংশ হারে মুনাফা দেওয়া হবে।
সোমবার (৪ জুলাই) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে রবিবার (৩ আগস্ট) বন্ডের ট্রাস্টি কমিটির বৈঠকে কুপনের হার অনুমোদন করা হয়।
তথ্য মতে, ইউসিবি দ্বিতীয় পারপেচ্যুয়াল বন্ডের ট্রাস্টি ২০২৫ সালের ৭ আগস্ট থেকে ২০২৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ের জন্য ১০ শতাংশ হারে অর্ধবার্ষিক কুপন রেট ঘোষণা করেছে। অর্থাৎ উল্লিখিত হারে রিটার্ন পাবেন ইউসিবি দ্বিতীয় পারপেচ্যুয়াল বন্ডের ইউনিটধারীরা।
ইউসিবি দ্বিতীয় পারপেচ্যুয়াল বন্ডের মুনাফা প্রাপ্তির যোগ্যতা নির্ধারণের লক্ষ্যে রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ৪ আগস্ট। ওই তারিখে যেসব বিনিয়োগকারীর কাছে বন্ড থাকবে তারা ঘোষিত সুদ পাবেন। কুপন রেট ঘোষণাকে কেন্দ্র করে এদিন পারপেচ্যুয়াল বন্ডটির লেনদেনে কোনো দরসীমা থাকছে না।
ঢাকা/এনটি/ইভা
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল বন ড র ইউস ব
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রদল–শিবিরসহ আলোচনায় ৪ প্যানেল
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে প্যানেল ঘোষণা করেছে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন। গতকাল বৃহস্পতিবার দিনভর সামনে আসে সাতটি প্যানেল। এর আগে ঘোষণা করা হয়েছিল দুটি। প্যানেলের ভিপি-জিএসসহ প্রার্থীদের নাম প্রকাশিত হওয়ার পর ক্যাম্পাস এখন নির্বাচনী আলোচনায় সরগরম। তবে ভোটাররা বলছেন, শীর্ষ পদে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে ছাত্রদল-ছাত্রশিবিরসহ চার প্যানেলের মধ্যে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর গত ৫৯ বছরে চাকসু নির্বাচন হয়েছে মাত্র ৬ বার। সপ্তমবারের এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১২ অক্টোবর। গতকাল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল।
নির্বাচন কমিশন সন্ধ্যা ৭টায় জানায়, ৯৩১ শিক্ষার্থী নির্বাচনে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদে ৪২৯, হল সংসদে ৩৫৬ জন।
নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব অধ্যাপক এ কে এম আরিফুল হক সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন, আগামী রোববার মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে। তারপর সোমবার খসড়া প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় রয়েছে। এ ছাড়া আগামী বৃহস্পতিবার চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে।
প্যানেল ঘোষণায় নির্বাচনী আমেজমনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর দুপুরে প্যানেল ঘোষণা করে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। এরপর বেলা আড়াইটার দিকে প্যানেল ঘোষণা করে ইসলামী ছাত্রশিবির। তাদের প্যানেলের নাম ‘সম্প্রীতি শিক্ষার্থী জোট’। বিকেল চারটায় ক্যাম্পাসের রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ১০ সংগঠন ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্যানেল ঘোষণা করে—‘বৈচিত্র্যের ঐক্য’।
বিকেল সাড়ে চারটায় ‘সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ’ নামে প্যানেল ঘোষণা করে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন। বিকেল পাঁচটায় বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমানের নেতৃত্বে ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন’ নামে প্যানেল ঘোষণা করা হয়। চাকসু নির্বাচনে সংগঠন হিসেবে অংশ নিচ্ছে না গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ। মাহফুজুর রহমান স্বতন্ত্রভাবেই নির্বাচন করছেন।
অন্যদিকে জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের সংগঠন স্টুডেন্ট অ্যালায়েন্স ফর ডেমোক্রেসি (স্যাড) ও ছাত্র ফেডারেশন সন্ধ্যা ছয়টায় প্যানেল ঘোষণা করে। তাদের প্যানেলের নাম ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী জোট’। সাড়ে ছয়টায় প্যানেল ঘোষণা করে ক্যাম্পাসের অরাজনৈতিক ২০টি ক্লাবের সম্মিলিত জোট ‘ক্লাব অ্যালায়েন্স’।
এর আগে গত রোববার সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ও ছাত্র ইউনিয়ন যৌথভাবে প্যানেলের নাম জানায়। তাদের প্যানেলের নাম ‘দ্রোহ পর্ষদ’। আগের দিন শনিবার ছাত্র অধিকার জানায়, তাদের প্যানেলের নাম ‘চাকসু ফর র্যাপিড চেঞ্জ’। অর্থাৎ এবারের কেন্দ্রীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য মোট ৯টি প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে।
প্যানেল ঘোষণার পর বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মী ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো। তাঁরা জানালেন, অনেক প্যানেল থাকলেও চাকসুর শীর্ষ তিন পদে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে চারটি প্যানেলের মধ্যে। এগুলো হলো ছাত্রদল, ছাত্রশিবিরের ‘সম্প্রীতি শিক্ষার্থী জোট’, দুই বাম সংগঠনের ‘দ্রোহ পর্ষদ’ ও ১০ সংগঠনের ‘বৈচিত্র্যের ঐক্য’। কারণ, এই চার প্যানেলের শীর্ষ সম্ভাব্য প্রার্থীরা ক্যাম্পাসে পরিচিত। বিভিন্ন আন্দোলনে তাঁরা সামনের সারিতেই ছিলেন। এমনকি ছাত্রলীগের (বর্তমানে নিষিদ্ধ) হাতেও বিভিন্ন সময়ে মারধরের শিকার হয়েছেন।
অবশ্য বাকি প্যানেলের শীর্ষ প্রার্থীদের বিষয়েও আগ্রহ রয়েছে শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রার্থীর ব্যাপারে বিস্তারিত খোঁজ নেওয়ার পর ভোট দেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন তাঁরা। এ ক্ষেত্রে হয়তো দল নয়, প্রার্থীর কার্যক্রম দেখে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন তাঁরা।
চার প্যানেলের ভিপি-জিএসগতকাল ক্যাম্পাসের বুদ্ধিজীবী চত্বরে প্যানেল ঘোষণা করেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন। ছাত্রদলের প্যানেল থেকে সহসভাপতি (ভিপি) পদে লড়বেন দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন। তিনি সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে প্রার্থী হয়েছেন ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগের মো. শাফায়াত হোসেন।
ছাত্রশিবিরের প্যানেল থেকে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন সংগঠনটির চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ও ইতিহাস বিভাগের এমফিলের শিক্ষার্থী ইব্রাহিম হোসেন। জিএস পদে লড়বেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সাহিত্য সম্পাদক ও ইতিহাস বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী সাঈদ বিন হাবিব। তাদের প্যানেল থেকে কার্যনির্বাহী সদস্যপদে লড়বেন সমাজতত্ত্ব বিভাগের তৃতীয় বর্ষের আকাশ দাশ। তিনি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী।
দুই বাম সংগঠনের ‘দ্রোহ পর্ষদ’ থেকে ভিপি পদে নির্বাচন করছেন নাট্যকলা বিভাগের ঋজু লক্ষ্মী অবরোধ। তিনি সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক। এই প্যানেল থেকে জিএস পদে লড়বেন ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের ইফাজ উদ্দিন। তিনি ছাত্র ইউনিয়নের বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক।
‘বৈচিত্র্যের ঐক্য’ প্যানেল থেকে ভিপি পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বাংলা বিভাগের ধ্রুব বড়ুয়া। তিনি গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সংগঠক। সম্প্রতি প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগসহ সাত দাবিতে তিনি অনশন করেছিলেন। এ ছাড়া এই প্যানেল থেকে জিএস পদে লড়বেন বাংলা বিভাগের সুদর্শন চাকমা। তিনি পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক।
এসব প্যানেলের ভিপি ও জিএস প্রার্থীরা বলছেন, তাঁরা ছাত্ররাজনীতির নতুন ধারা প্রবর্তন করতে চান। ছাত্ররাজনীতির নামে চাঁদাবাজি, মাদক, হলের আসন-বাণিজ্যসহ যেকোনো অনৈতিক কর্মকাণ্ড যেন না ঘটে, সে লক্ষ্যেই কাজ করবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি আবাসিক হলের ১০ শিক্ষার্থীর কাছে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ভিপি ও জিএস প্রার্থীদের কাছে চাওয়া কী? তাঁরা বলছেন, ক্যাম্পাসে এত দিন ছাত্রলীগের একক আধিপত্য ছিল। ওই সংগঠনের ১০টি পক্ষ-উপপক্ষের মধ্যে ক্যাম্পাসে সংঘর্ষ লেগেই থাকত। এতে বিঘ্নিত হতো পাঠদান কার্যক্রম। এ ছাড়া হলে জায়গা পেতে হলে ছাত্রলীগের অনুমোদন নিতে হতো। ফলে তাঁরা আগের পরিস্থিতিতে আর ফিরতে চান না।
শাহজালাল হলের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ছাত্র সংসদে এমন নেতৃত্ব চান, যাঁরা শিক্ষার্থীদের আবাসনসংকট, নিম্নমানের খাবার, পরিবহন সমস্যাসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কাজ করবেন।