বিশ্বজুড়ে দিন দিন বেড়ে চলেছে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের ঘনত্ব। এর প্রভাব পড়ছে মানবস্বাস্থ্য ও পরিবেশে। এ সমস্যার সমাধানে প্রতি বছর নানা উদ্যোগ নিচ্ছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। এরই মধ্যে আশার আলো দেখিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক।

তারা দেশীয় শৈবাল ব্যবহার করে উদ্ভাবন করেছেন ‘লিকুইড ট্রি’- যা কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষণ করে অক্সিজেন উৎপাদনে সক্ষম।

আরো পড়ুন:

বাকৃবি শিক্ষার্থীদের কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিকে আত্মঘাতী বলছেন শিক্ষকরা

ভালো বন্ধু হতে পারে ভালো অভিভাবক: যবিপ্রবি উপাচার্য

বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োরিসোর্সেস টেকনোলজি অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল বায়োটেকনোলজি ল্যাব, গবেষণা উদ্ভাবন কেন্দ্রের (আরআইসি) তত্ত্বাবধানে এবং সরকারের ইডিজিই প্রকল্পের অর্থায়নে তৈরি হয়েছে এ প্রোটোটাইপ।

গবেষকদের দাবি, এই প্রযুক্তি ইনডোর ও আউটডোর উভয় পরিবেশেই সমান কার্যকর।

‘লিকুইড ট্রি’ এক ধরনের ফোটোবায়োরিঅ্যাক্টর, যেখানে মাইক্রোঅ্যালগি সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাজ করে। বাইরে স্থাপিত মডেল সূর্যালোক ব্যবহার করে। আর ঘরের ভেতরে ব্যবহৃত মডেলটি কৃত্রিম আলোতে সালোকসংশ্লেষণ চালায়। ফলে এটি প্রাকৃতিক গাছের মতোই কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষণ ও অক্সিজেন নিঃসরণ করতে সক্ষম।

গবেষক দলের তথ্য অনুযায়ী, তারা দুই ধরনের লিকুইড ট্রি তৈরি করেছেন, একটি ঘরের ভেতরে ব্যবহারের জন্য, আরেকটি উন্মুক্ত পরিবেশের জন্য। প্রতিটি ইউনিট তৈরিতে প্রাথমিকভাবে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তবে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হলে ব্যয় অনেকটা কমে আসবে বলে আশা করছেন তারা।

এই গবেষণা প্রকল্পের পরিচালক বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড.

গোলাম মঈনুদ্দিন বলেন, “এটিতে দেশীয় শৈবাল ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতিটি লিকুইড ট্রি ৮ থেকে ৯ মাস কার্যকর থাকে, এরপর শৈবাল পরিবর্তন করতে হয়। ব্যবহার শেষে অ্যালগি সার হিসেবে কাজে লাগানো যায়। প্রতি পরিবর্তনে ২ থেকে ৩ হাজার টাকার মতো খরচ হবে। আমাদের দেশে শতাধিক প্রজাতির শৈবাল রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী কার্যকারিতা যার বেশি হবে, সেটিই ব্যবহার করা হবে।”

তিনি আরো বলেন, “এ প্রযুক্তির কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। প্রাথমিক বিনিয়োগ বেশি, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন। তবে এর সম্ভাবনা অনেক বেশি। স্থানীয় অ্যালগি প্রজাতি উন্নয়ন, বায়োফুয়েল ও জৈবসার উৎপাদন, এমনকি নগর পরিকল্পনায় একীভূত করার সুযোগ আছে। এটি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি সবুজ অর্থনীতির বিকাশে ভূমিকা রাখবে।”

গবেষকরা বিশ্বাস করেন, দ্রুত নগরায়ণের দেশে লিকুইড ট্রি প্রতীকী উদ্ভাবনের চেয়ে বাস্তবসম্মত সমাধান হয়ে উঠতে পারে। বিশেষ করে ইনডোর মডেলের কারণে বাংলাদেশ বৈশ্বিক পর্যায়ে পথ প্রদর্শক হতে পারে। শিল্পপ্রতিষ্ঠান বা শিক্ষা-গবেষণা প্রতিষ্ঠানে জিরো কার্বন এমিশন নিশ্চিত করার জন্যও এ প্রযুক্তি কার্যকর হবে।

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবহ র কর ক র বন

এছাড়াও পড়ুন:

ঝিনাইদহে গাছ থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু 

ঝিনাইদহের শৈলকূপায় গাছ থেকে পড়ে খায়রুল ইসলাম (৫৫) নামে এক কাঠ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (৩ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার দুধসর গ্রামে দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি। খায়রুল একই উপজেলার খন্দকবাড়িয়া গ্রামের মুকাদ্দেস আলীর ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, খায়রুল আজ সকালে গাছ কাটার জন্য দুধসর গ্রামের হাজরাতলায় যান। বেলা ১১টার দিকে একটি গাছের ডাল কাটার সময় পা পিছলে তিনি নিচে পড়ে যান। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসক খায়রুলকে মৃত ঘোষণা করেন।

আরো পড়ুন:

বরিশালে অপসো ফার্মার ৫০০ শ্রমিক ছাঁটাইয়ের অভিযোগ

আশুগঞ্জ সার কারখানায় গ্যাস সংযোগের দাবিতে সমাবেশ

দুধসর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রহিম জানান, হাজরাতলায় একটি রেইনট্রি গাছ কাটার সময় খায়রুল নামে এক শ্রমিক গাছ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুত্ব আহত হন। সবাই মিলে তাকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

শৈলকূপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুম খান জানান, গাছ থেকে পড়ে এক কাঠ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। পরিবারে কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।

ঢাকা/শাহরিয়ার/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ