ঢাকায় প্রকৌশলী শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) বিক্ষোভ, অবস্থান কর্মসূচি ও গায়েবানা জানাযা পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর থেকে কর্মসূচি শুরু হয়ে প্রধান ফটকে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে শিক্ষার্থীরা অন্তর্বর্তী সরকারের গায়েবানা জানাযা কর্মসূচি পালন করেন।

আরো পড়ুন:

পুলিশি হামলার প্রতিবাদে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

বুয়েট শিক্ষার্থীকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে শাবিতে বিক্ষোভ

এর আগে, বুধবার রাজধানীতে পূর্বঘোষিত ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে অংশ নিতে গেলে প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় পুলিশের বাধা, লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড হামলার শিকার হন। এতে শাবিপ্রবির পলাশ বখতিয়ার ও হাসিবসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন।

বিক্ষোভে কেমিকৌশল ও পলিমার বিজ্ঞান বিভাগের আবরার বিন রশিদ বলেন, “চলতি ইন্টেরিম সরকার পূর্বের মতোই পুলিশকে ব্যবহার করে আমাদের আন্দোলনে হামলা চালিয়েছে। আমাদের তিনটি দাবি ছিল সম্পূর্ণ যৌক্তিক। দেশের প্রকৌশল খাতে ডিপ্লোমাধারীরা ৮০-৯০ শতাংশ পদ দখল করে আছে, যা প্রকৃত ইঞ্জিনিয়ারদের অবমূল্যায়ন করে। আমরা চাই, মেধার ভিত্তিতে চাকরি নিশ্চিত করা হোক।”

পেট্রোলিয়াম ও খনিপ্রকৌশল বিভাগের ইব্রাহিম বিন ইসলাম বলেন, “নৌবাহিনী কিংবা বিসিএস ক্যাডারদের মতো কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নবম গ্রেডে প্রবেশ করতে হয়। অথচ ডিপ্লোমাধারীদের সরাসরি ওই গ্রেডে চাকরি দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এভাবে মেধাবীরা দেশে ফিরবে কীভাবে?”

কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা হাতে লেখা নানা প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। এর মধ্যে ছিল— ‘কোটা যদি দেশ খায়, ধ্বংস তার দোরগোড়ায়’, ‘চাকরিতে বৈষম্য, মানি না মানবো না’, ‘বৈষম্যের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি।

আন্দোলনকারীরা পুলিশি হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিন দফা দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন। দাবিগুলো হলো— ইঞ্জিনিয়ারিং এবং নবম গ্রেড (সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদ) এ প্রবেশের জন্য সবাইকে মেধাক্রমে উত্তীর্ণ হতে হবে ও বিএসসি ডিগ্রি থাকতে হবে, কোটার মাধ্যমে কোনো পদোন্নতি দেওয়া যাবে না, এমনকি অন্য নামে সমমান পদ সৃষ্টি করেও নয়; টেকনিক্যাল দশম গ্রেড (উপ-সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদ) পূরণের ক্ষেত্রে উন্নতির সুযোগ দিতে হবে, ডিপ্লোমা ও বিএসসি উভয় ডিগ্রিধারীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ থাকতে হবে, বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি ছাড়া কেউ প্রকৌশলী পদবি ব্যবহার করলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

ঢাকা/ইকবাল/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ব প রব

এছাড়াও পড়ুন:

চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে

জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।

বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।

এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ