বাংলাদেশ ও নেদারল‌্যান্ডস জাতীয় ক্রিকেট দল প্রথমবার বাংলাদেশের মাটিতে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলতে মাঠে নাবে আজ। সন্ধ‌্যা ৬টায় সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুই দলের তিন ম‌্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটি শুরু হবে। 

এর আগে দুইবার বাংলাদেশে এসে খেলেছে নেদারল‌্যান্ডস। কিন্তু কখনোই বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলা হয়নি তাদের। ভারতের বিপক্ষে সিরিজ পিছিয়ে যাওয়ার পর ফাঁকা স্লট ছিল বাংলাদেশের। নেদারল‌্যান্ডসকে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানালে তারাও সুযোগটি লুফে নেয়। 

 নেদারল‌্যান্ডসের জন‌্য এই সিরিজটা কতোটা বড় তা তাদের কোচ রায়ান কুকের কণ্ঠে টের পাওয়া গেল, ‘‘আমরা বিশ্বাস করি, ভালো ক্রিকেট খেলতে পারলে যে কোনো দলকে আমরা হারাতে পারি। আমরা দেখিয়েছি যে আমরা তা পারি।’’ 

অকপট, আত্মবিশ্বাসী হওয়ার বড় কারণ, শেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ নেদারল‌্যান্ডসের কাছে হেরেছি। বাংলাদেশের সাবেক ফিল্ডিং কোচ সেই কথাটাই মনে করিয়ে দিয়ে আরেকবার হুমকিও দিয়ে রাখলেন, “গত বিশ্বকাপে আমরা ওদেরকে হারিয়েছি। আবার একই গ্রুপে পড়লে (বিশ্বকাপে) আবারও চেষ্টা করব হারাতে।” 

নিজেদের ক্রিকেট, নিজেদের আত্মবিশ্বাস, নিজেদের খেলার ধরনে গর্ব খুঁজে পান রায়ান কুক, ‘‘ এবারও বিশ্বাস আছে। কিছু ক্রিকেটারকে এগিয়ে আসতে হবে এবং পারফর্ম করতে হবে অবশ্যই। তবে ছেলেরা কঠোর পরিশ্রম করছে, শুধু এখন নয়, গত তিন বছর ধরেই। সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে আমরা ক্রমেই উন্নতির পথে হাঁটছি। অনেকবারই বিশ্বকাপে খেলেছি। এবার টানা চতুর্থবার হচ্ছে (ষষ্ঠবার)। এই দলগুলির সঙ্গে খেলতে ও তাদেরকে হারাতে যা করা প্রয়োজন, সেসবের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে উঠছি আমরা।” 

মাসখানেকের বিরতির পর আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরছে বাংলাদেশ। নেদারল‌্যান্ডসের বিপক্ষে খেলার পরপরই বাংলাদেশ এশিয়া কাপ খেলতে সংযুক্ত আরব আমিরাত যাবে। নেদারল‌্যান্ডসের বিপক্ষে সিরিজটা বাংলাদেশের জন‌্য অনেকটাই প্রস্তুতির মঞ্চ। যদিও ডাচদের নিয়েও বেশ সিরিয়াস বাংলাদেশ শিবির। 

অন্তত কোচ ফিল সিমন্সের কথাতে তাই মনে হলো, ‘‘আমরা তিনটি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলছি এখানে। যখন আপনি বলবেন আন্তর্জাতিক, সেটার মানে হচ্ছে আন্তর্জাতিক দলের বিপক্ষে খেলবেন। তারা শেষ দুটি বিশ্বকাপে খেলেছে,  ভালোও করেছে।  বিশ্ব ক্রিকেটে কাউকে আন্ডাররেট করার সুযোগ আমি দেখি না। সবারই জয়ের সুযোগ আছে। আমি এশিয়া কাপ নিয়ে ভাবছি না। এশিয়া কাপ এই সিরিজের পর হবে। এটা আন্তর্জাতিক একটা দলের বিপক্ষে সিরিজ। আমাদের নজরটাও এখানেই।’’ 

বাংলাদেশ সিরিজে ভালো করে জিতে গেলে প্রাপ্তির ঝুলিতে খুব বেশি কিছু যোগ হবে না তবে হারলে সমালোচনায় বিদ্ধ হবে। সিমন্স খুব ভালো করেই তা জানেন। তবে ছেলেদের পাশেই তিনি আছেন তা বোঝা গেল, ‘‘আমরা যদি অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারি, তখনো সমালোচনা হবে। র‍্যাংঙ্কিংয়ে নিচে থাকা দলের কাছে হারও তাই খারাপ কিছু নয়। কারণ আমরা যদি ভালো না খেলি নির্দিষ্ট দিনে, আমাদের সমালোচনাটা প্রাপ্য। যদি ভালো খেলার পরও তারা আমাদের হারায়, তাহলে যোগ্য হিসেবেই হারাবে।’’ 

বাংলাদেশকে আত্মবিশ্বাসী করতে পারে পরিসংখ‌্যান। নেদারল‌্যান্ডসের সঙ্গে বাংলাদেশ ৫টি-টোয়েন্টি খেলেছে। ৪টিতে বাংলাদেশ জিতেছে। নেদারল‌্যান্ডসের জয় ১টিতে। 

ঢাকা/ইয়াসিন

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব শ বক প

এছাড়াও পড়ুন:

ইসিকে নিশানা করে ‘অ্যাটম বোমা’ ফাটালেন রাহুল গান্ধী, এখনো বাকি ‘হাইড্রোজেন বোমা’

ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটচুরির অভিযোগ এনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, এটা ‘অ্যাটম বোমা’। তবে আরও ভয়ংকর তথ্য তিনি পরে আনবেন, যা ‘হাইড্রোজেন বোমার সমতুল্য’।

আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আবার বিস্ফোরক অভিযোগ এনে রাহুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের মদদে কিছু লোক, সংস্থা ও কল সেন্টার সংগঠিতভাবে কেন্দ্রে কেন্দ্রে বেছে বেছে কংগ্রেস, দলিত, আদিবাসী ভোটারদের নাম বাদ দিচ্ছে।

আজ সংবাদ সম্মেলন করে রাহুল বলেন, নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে নকল আবেদন করে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।

‘অ্যাটম বোমা’ ফাটানোর দিন রাহুল কর্ণাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রের ‘ভোট চুরির’ নমুনা পেশ করেছিলেন। আজ তিনি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন কর্ণাটকেরই আলন্দ কেন্দ্রকে।

রাহুলের অভিযোগ, নকল আবেদনের মাধ্যমে ওই কেন্দ্রের ৬ হাজার ১৮ জন ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। যেসব কেন্দ্রে কংগ্রেস শক্তিশালী, বেছে বেছে সেসব কেন্দ্রকেই নিশানা করা হয়েছে। ভুয়া ভোটারের নাম তোলার পাশাপাশি বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। এটা সংগঠিতভাবে করা হচ্ছে। কর্ণাটক পুলিশ সেই বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলেও নির্বাচন কমিশন কোনো তথ্য দিচ্ছে না।

রাহুলের অভিযোগ, যাঁদের নামে আবেদন জানানো হচ্ছে এবং যাঁদের নাম মোছার আরজি জানানো হচ্ছে, তাঁদের কেউ–ই তা জানতে পারছেন না। সংবাদ সম্মেলনে এই ধরনের কিছু মানুষকে রাহুল হাজিরও করান।

কিছু নম্বরও দাখিল করে রাহুল বলেন, এসব নম্বর থেকে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। তাঁর প্রশ্ন, ওই নম্বরগুলোয় ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ‘ওটিপি’ কীভাবে গেল?

কংগ্রেস নেতা বলেন, নির্দিষ্ট কিছু ঠিকানা থেকে নির্দিষ্ট ‘আইপি’ অ্যাড্রেস ব্যবহার করে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হচ্ছে। অভিযোগ তদন্ত করে দেখতে কর্ণাটক পুলিশের গোয়েন্দারা ইসির কাছে কিছু তথ্য চেয়েছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জ্ঞানেশ কুমার কোনো তথ্যই দেননি। এতেই বোঝা যাচ্ছে, ইসি ভোটচোরদের আড়াল করছে।

রাহুল বলেন, কর্ণাটক সিআইডি ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়ে ইসিকে ১৮ বার চিঠি লিখেছে। অথচ একটি চিঠিরও জবাব ইসি দেয়নি। ইসিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাহুল বলেন, কমিশন স্বচ্ছ হলে এক সপ্তাহের মধ্যে কর্ণাটক সিআইডিকে যাবতীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করুক।

রাহুল মহারাষ্ট্রের রাজুরা বিধানসভা আসনের ভোটার তালিকা তুলে ধরে বলেন, সেখানে অনলাইনে ৬ হাজার ৮৫০ জনের নাম অবৈধভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন রাজ্যে ভোটার তালিকায় এভাবে সংযোজন–বিয়োজন চলছে।

এর আগেও রাহুল নিশানা করেছিলেন সিইসি জ্ঞানেশ কুমারকে। আজও তিনি তাঁকে কাঠগড়ায় তোলেন। রাহুল বলেন, নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ করার বদলে তিনি পক্ষপাতমূলক আচরণ করেই চলেছেন। ভোট চুরি করাচ্ছেন। ভোটচোরদের রক্ষাও করছেন।

রাহুলের অভিযোগ এবারও খারিজ করে দিয়েছে ইসি। রাহুলের ডাকা সংবাদ সম্মেলনের পর আজ ইসি এক বিবৃতি দেয়। তাতে রাহুলের অভিযোগ ‘অসত্য ও ভিত্তিহীন’ জানিয়ে বলা হয়, অনলাইনে কেউ কোনো ভোটারের নাম বাদ দিতে পারেন না। নাম বাদ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য শোনা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ