ইবি শিক্ষার্থী ওয়ালিউল্লাহ ও মুকাদ্দাসের সন্ধান দাবি
Published: 30th, August 2025 GMT
দীর্ঘ ১ যুগ পেরোলেও সন্ধান মেলেনি আওয়ামী শাসনামলে গুম হওয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দুই শিক্ষার্থী ওয়ালিউল্লাহ ও আল মুকাদ্দাসের। তাদের সন্ধানের দাবিতে মানববন্ধন করেছে শাখা ছাত্রশিবির।
শনিবার (৩০ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি। এ সময় ওয়ালিউল্লাহ ও আল- মুকাদ্দাসের সন্ধান, বিশ্ববিদ্যালয় ডিজিটালাইজেশন ও সাজিদ আব্দুল্লাহ’র হত্যার বিচারের দাবি জানান তারা।
আরো পড়ুন:
শিক্ষার্থীদের গবেষণা সহকারী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে: জবি উপাচার্য
নুরের ওপর হামলার প্রতিবাদে রাবি শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ
মানববন্ধনে ‘প্রশাসনের টালবাহানা, মানি না মানবো না’, ‘আমার ভাই গুম কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘আমার ভাইয়ের খোঁজ, দিতে হবে দিয়ে দাও’, ‘মুকাদ্দাস ভাই নিখোঁজ কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান, সেক্রেটারি ইউসুব আলী ও ওয়ালিউল্লাহ’র বড় ভাই অধ্যক্ষ খালিদ সাইফুল্লাহসহ শাখা ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের শতাধিক নেতাকর্মী।
গুমের শিকার শিক্ষার্থী ওয়ালিউল্লাহর বড় ভাই অধ্যক্ষ খালিদ সাইফুল্লাহ বলেন, “আমি ওয়ালি-মুকাদ্দাস দুইজনেরই বড় ভাই হিসেবে বলব, আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয় আসি তখন আমার পা চলে না, বুক কেঁপে উঠে, ক্যাম্পাসে আসার সময় আমি বাবা-মাকে বলে আসতে পারি না যে আমি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় যাচ্ছি। কেউ যদি দোষীও হয়, পদ্ধতিগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তার বিচার হোক শাস্তি পাক, কিন্তু এধরনের গুম-হত্যা একটি দেশের বড় হওয়া, সমৃদ্ধ হওয়াকে থামিয়ে দেয়।”
তিনি বলেন, “তৎকালীন প্রশাসনে যারা ছিল তাদের সহযোগিতা ছাড়া এ ধরনের কাজ কখনোই সম্ভব ছিল না। আমি এবং মুকাদ্দাসের চাচা গুমের বিষয়ে তদবির করেছিলাম মিডিয়ার ঘরে ঘরে গিয়েছিলাম, প্রশাসনের ঘরে ঘরে গিয়েছিলাম, তখন আমরা জানতে পেরেছি, তৎকালীন এখানকার স্থানীয় প্রশাসন এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যোগসাজশেই ওয়ালিউল্লাহ-মুকাদ্দাসের গতিবিধি চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছিল।”
শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, “আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে, আজকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ পতনের একটি বছর হয়ে গেল। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা ওয়ালিউল্লাহ ও আল মুকাদ্দাস ভাইয়ের সন্ধান পাইনি। সরকার গুম কমিশন তৈরি করলেও সেটার কার্যকরি পদক্ষেপ আমরা দেখতে পাইনি।”
তিনি বলেন, “আমার মনে হয় এ সরকার ঘুরিয়ে-পেচিয়ে ফ্যাসিবাদকে আশ্রয় দিচ্ছে। যেটা প্রতীয়মান হয়েছে, গতকাল নূরের উপর হামলার মাধ্যমে। যদি উপদেষ্টারা পদত্যাগ করেন তবে আপনারাও গুমের শিকার হতে পারেন। তাই আপনাদের অনুরোধ জানাই আমাদের ওয়ালিউল্লাহ-আল মুকাদ্দাস ভাইয়ের সন্ধান দিন।”
তিনি আরো বলেন, “তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বে যারা ছিলেন তাদেন ধরুন। তাহলে আমার মনে হয় অনেক কিছু বের হয়ে যাবে। আপনারা কেন ধরছেন না? কেন কুলুপ আটা আপনাদের মুখে? বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এর দায় এড়াতে পারে না। প্রশাসনকে বলতে চাই ওয়ালিউল্লাহ-মুকাদ্দাস ভাইয়ের ব্যাপারে দ্রুত কথা বলুন। নইলে বিশ্ববিদ্যালয়কে অচল করে দেওয়া হবে।”
২০১২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকা থেকে হানিফ পরিবহনের একটি বাসে কুষ্টিয়া ফিরছিলেন ওয়ালিউল্লাহ ও মুকাদ্দাস। পথিমধ্যে নবীনগর এলাকা থেকে র্যাব ও ডিবি পরিচয়ে উঠিয়ে নেওয়া হয় তাদের। এরপর থেকে তাদের আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী গুমের খবর অস্বীকার করে।
সম্প্রতি জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ বিভিন্ন সময়ে গুমের শিকার ৭৬ জনের একটি তালিকা দেয় বাংলাদেশ সরকারকে। তালিকায় ওয়ালিউল্লাহ ও মুকাদ্দাসের নাম আছে বলে জানা গেছে। তারা যথাক্রমে ইবি শাখা ছাত্রশিবিরের তৎকালীন অর্থ সম্পাদক ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক ছিলেন।
ঢাকা/তানিম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র সন ধ ন তৎক ল ন
এছাড়াও পড়ুন:
সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার ও ২১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ
সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার, নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন, দশম ওয়েজ বোর্ড গঠন, চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের পুনর্বহাল এবং পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ ২১ দফা দাবিতে শহরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১ নভেম্বর) সকাল ১১টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে সাংবাদিক ইউনিয়ন নারায়ণগঞ্জের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সাংবাদিক ইউনিয়ন নারায়ণগঞ্জের সভাপতি আবু সাউদ মাসুদের সভাপতিত্বে এবং একেএম মাহফুজুর রহমানের সঞ্চালনায় উক্ত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, নিউ নেশন পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক এ আর ফররুখ আহমেদ খসরু, ফতুল্লা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মো: মাসুম, সিনিয়র সাংবাদিক মনির হোসেন, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের রূপগঞ্জ প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম হানিফ, দৈনিক বাংলাদেশ বুলেটিন পত্রিকার সাংবাদিক উজ্জল হোসেন মাসুম, দৈনিক ইয়াদ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মেহবুব মিয়া, দৈনিক পূর্বাভাস পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদক সোনিয়া দেওয়ান প্রীতি, দৈনিক দেশ পত্রিকার সাংবাদিক মোখলেসুর রহমান তোতাসহ প্রমূখ।
এসময় বক্তারা বলেন, ‘নো ওয়েজ বোর্ড, নো মিডিয়া’ নীতি কার্য্যকর, সাংবাদিকদের বেতন সর্বনিম্ন ৩৫ হাজার টাকা নির্ধারণ, প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ায় নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন ও দশম ওয়েজ বোর্ড গঠন, সাংবাদিক সুরক্ষা নীতিমালা প্রনয়ন, সাংবাদিকদের সাপ্তাহিক ছুটি ২দিন নির্ধারণ, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনীসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার, গনমাধ্যমের স্বাধীনতা বিরোধী সকল কালাকানুন বাতিল, আইন অনুযায়ী সাংবাদিকদের ন্যায্যা পাওনা আদায়ের জন্য পৃথক শ্রম আদালত স্থাপন সহ ২১ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ আমরা মানববন্ধন করছি।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের আহ্বান অনতিবিলম্ভে আমাদের এসব দাবিগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, প্রতিদিনের বাংলাদেশ পত্রিকার নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি এম আর কালাম, নাহিদ আজাদ, বাংলাদেশ নিউজের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ইমতিয়াজ আহমেদ, নিউজ টুয়েন্টিফোর টেলিভিশনের নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি শরিফ সুমন, দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ পত্রিকার নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি মোশতাক আহমেদ, বাংলাদেশের খবর পত্রিকার নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি আল আমিন, দৈনিক ভোরের ডাক পত্রিকার নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি সাব্বির হোসেন, মানব জমিনের ফতুল্লা প্রতিনিধি আবু সাঈদ পাটুয়ারী রাসেল, মুসলিম টাইমসের নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি সাইফুল্লাহ খালিদ রাসেল, চ্যানেল এস এর সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি সাদ্দাম হোসেন মুল্লা, দৈনিক সংগ্রামের সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি ইখতিয়ার রাহয়ান, সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম আরজু, এস এম জহিরুল ইসলাম বিদ্যুৎ, সম্রাট প্রমুখ।