মহাসড়কে রশি টেনে ডাকাতি, মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে যুবক নিহত
Published: 19th, September 2025 GMT
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় ডাকাত দলের বাধার মুখে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে এক আরোহী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও তিনজন। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের হাঁসেরদিঘি এলাকায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম মাহমুদুল হক (২৮)। তিনি কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালীর শিয়ালিয়াপাড়ার নুরুল আলমের ছেলে। আহত তিনজনের মধ্যে দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন এহেছানুল কাদের (২৫) ও নুর হোসেন (২৬)। দুজনই শিয়ালিয়াপাড়ার বাসিন্দা।
পুলিশ জানায়, দুটি মোটরসাইকেলে করে রাতে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম যাচ্ছিলেন ওই চার যুবক। পথে চকরিয়ার হাঁসেরদিঘির পাহাড়ি এলাকায় টর্চের আলো ফেলে তাঁদের থামার সংকেত দেয় একটি ডাকাত দল। তবে সংকেত না মেনে এগোনোর চেষ্টা করেন মোটরসাইকেলের আরোহীরা। এ সময় ডাকাত দলের সদস্যরা মহাসড়কের দুপাশ থেকে রশি টেনে ধরে তাঁদের গতিরোধ করার সময় দুটি মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়েন আরোহীরা।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, আহত অবস্থায় মহাসড়কে পড়ে থাকা মোটরসাইকেল আরোহীদের কাছ থেকে টাকা ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয় ডাকাত দল। পরে মোটরসাইকেল দুটিও ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ ঘটনাস্থলের পাশে গেলে ডাকাত দলের সদস্যরা পালিয়ে যান। আহত চারজনকে হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক একজনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আরেকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ জায়নুল আবেদীন বলেন, মাথায় গভীর ক্ষত হওয়া এবং অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে মাহমুদুল হকের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর হাতও কয়েক টুকরা হয়ে গেছে। আহত ব্যক্তিদের মধে৵ দুজনের অবস্থা গুরুতর।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল আনোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, মহাসড়কে রশি টেনে মোটরসাইকেল আরোহীদের গতিরোধের পর কয়েকটি মুঠোফোন ও টাকাপয়সা হাতিয়ে নিয়েছে ডাকাত দল। এ ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ডাকাত দলের সদস্যদের প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। শিগগিরই তাঁরা ধরা পড়বেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ড ক ত দল র চকর য়
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় ফুটপাত দখল করে দোকানের পসরা, কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ
বগুড়া শহরের সার্কিট হাউস-কালীবাড়ি মোড় সড়কে সারি সারি ভ্যানে হরেক খাবারের পসরা। পিৎজা, বার্গার, স্যান্ডউইচ, চিকেন শর্মা, মিটবক্স—সবই মিলছে রাস্তার পাশের এসব দোকানে। ক্রেতারা মূলত কিশোর ও তরুণ-তরুণী।
দোকানগুলোতে নেই কোনো আলাদা শেফ। বিক্রেতারাই নিজের হাতে খাবার তৈরি করছেন, পরিবেশনও করছেন। কারও হাতে গ্লাভস নেই, শরীরে নেই অ্যাপ্রোন। বিকেল গড়াতেই এসব ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকানে ভিড় জমছে। কোর্ট হাউস স্ট্রিটের পাশেই আছে ‘পিজ অ্যান্ড বার্গ’, ‘পদ্মা ফুডস’ ও ‘হিলিয়াম রেস্টুরেন্ট’-এর মতো নামীদামি খাবারের দোকান। একসময় সন্ধ্যায় এসব প্রতিষ্ঠানে ক্রেতার ঢল নামত। এখন সে ভিড় চলে গেছে রাস্তার পাশে বসা দোকানগুলোর দিকে।
পদ্মা ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জলেশ্বরীতলা ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমদাদ আহমেদ বলেন, ‘অভিজাত এ এলাকায় একটি খাবারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। অন্তত ১৪টি প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিতে হয়। এসব নবায়নে প্রতিবছর মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হয়। ভবন ভাড়া, দামি শেফ ও কর্মচারীর বেতন—সব মিলিয়ে খরচ বিপুল। অথচ রাস্তার পাশে ভ্যানে বসা দোকানে বিনিয়োগ মাত্র ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। কোনো সনদ নেই, দোকানভাড়া নেই, কর্মচারীও নেই। শুধু দামে সস্তা বলে ক্রেতারা ঝুঁকছেন ওদিকে। সড়ক দখল করে দোকান বসায় যানজটও বাড়ছে। অভিযোগ করেও প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো প্রতিকার মিলছে না।
বগুড়া হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম দেলোয়ার হোসেন বলেন, জলেশ্বরীতলা অভিজাত এলাকা। এখানে দোকান দিতে বিপুল বিনিয়োগ লাগে। নামীদামি দোকানে একটি পিৎজার দাম ৫০০ টাকা হলে ভ্রাম্যমাণ দোকানে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলেও ক্রেতারা সস্তা পেয়ে সেখান থেকেই কিনছেন। এতে অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলো লোকসানে পড়ছে। এর সঙ্গে তিনি যুক্ত করেন, ‘আমরা স্ট্রিট ফুড ব্যবসার বিরোধী নই। তবে সেটা অভিজাত এলাকা থেকে সরিয়ে পৌর পার্ক, অ্যাডওয়ার্ড পার্কসংলগ্ন সড়ক কিংবা সরকারি আজিজুল হক কলেজের পাশের এলাকায় নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি।’
সড়কজুড়ে দোকান, ভোগান্তিতে শহরবাসীসম্প্রতি দেখা যায়, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে সড়কের এক পাশে ২০-২৫টি ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান বসেছে। অন্য পাশে ফলের দোকান। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আদালত প্রাঙ্গণের সামনে যানজট লেগেই থাকে।
এ ছাড়া পৌরসভা লেন, জেলা খানা মোড়, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকী সড়ক, মহিলা ক্লাব মোড়, শহীদ আবদুল জব্বার সড়ক, সাতমাথা-সার্কিট হাউস সড়কসহ শহরের নানা সড়কেই বসছে ফুচকা, চটপটি, জুস, ফাস্ট ফুড ও ফলের দোকান।
সাতমাথায় প্রতিদিন বসছে অর্ধশতাধিক দোকান। জিলা স্কুলের সামনে চটপটি ও কাবাবের দোকানগুলোর চেয়ার বসানো হয়েছে ফুটপাত দখল করে। কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, থানা মোড়, বড়গোলা, দত্তবাড়ি, কালিতলা—সবখানেই দুই পাশে দোকান।
রাস্তা দখল করে দোকান বসানোয় বেশির ভাগ সময় যানজটে থাকে শহরে। সম্প্রতি তোলা