প্রিমিয়ার লিগে অনুশীলন থেকে তুলে নিয়ে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদ, সবাই মনে করেছিল ‘দুষ্টামি’
Published: 11th, January 2025 GMT
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে এক ফুটবলারকে অনুশীলন থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। জানা গেছে, অনুশীলন চলাকালে গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে সেই আন্তর্জাতিক তারকাকে ধরে নিয়ে যান ইংল্যান্ডের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এরপর ছয় ঘণ্টা ধরে সেই ফুটবলারকে জেরা করা হয় এবং তাঁর দুটি ফোনও জব্দ করা হয়।
জব্দ করা ফোনগুলোর ফুটেজ এবং ভিডিও রেকর্ডগুলোও যাচাই করে দেখেছে পুলিশ। প্রিমিয়ার লিগ তারকাকে পুলিশের তুলে নিয়ে যাওয়ার খবরটি নিশ্চিত করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য সান। তারা জানিয়েছে, পুলিশের কাছে সেই ফুটবলারের বিরুদ্ধে সম্মতি ছাড়া যৌন দৃশ্য ধারণ করার অভিযোগ ছিল।
এদিকে পুলিশের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ২০ থেকে ২৯ বছর বয়সের মধ্যে থাকা সেই ফুটবলারের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যে কারণে বিষয়টি নিয়ে আর কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
গুরুতর অভিযোগে সতীর্থকে সাদাপোশাকধারী পুলিশ তুলে নিয়ে গেলেও অন্য খেলোয়াড়েরা মনে করেছিলেন, কেউ হয়তো সেই খেলোয়াড়টির সঙ্গে মজা করছে।
তাঁরা কেউই ঘটনাটি বিশ্বাস করতে পারেননি। পরে অবশ্য ভুল ভাঙতে সময় লাগেনি। যদিও বড় কোনো জটিলতা ছাড়াই শেষ হয়েছে বিষয়টি এবং পরবর্তী সময়ে সেই ফুটবলার আবার অনুশীলনে ফিরেও এসেছেন।
দ্য সান জানিয়েছে, সেই ফুটবলারের বিরুদ্ধে নিষেধ করার পরও যৌন সম্পর্কের গোপন ভিডিও ধারণ করার অভিযোগ করেছিলেন এক নারী। কিন্তু সুনির্দিষ্ট তথ্য–প্রমাণ না থাকায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুননারী বিশ্বকাপে যৌন হয়রানির অভিযোগ, তদন্তের ঘোষণা ফিফার০৪ আগস্ট ২০২৩ঘটনার আপাত পরিসমাপ্তি ঘটলেও সেই অভিযোগকারী নারী এক বন্ধুকে বলেছেন, একসঙ্গে সময় কাটানোর পর সেই ফুটবলার যখন তাঁকে চলে যেতে বলেন, তখন তিনি ‘আক্রান্ত ও অপমানিত’ বোধ করেছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্ব আরোপ
কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এ পরস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বুধবার দুজনকে করা এ ফোন কলে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া দুই
ফোনালাপের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় মার্কো রুবিও বলেন, তিনি পেহেলগাম হামলায় নিহতদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তবে তিনি আরও বলেন, ভারত যেন পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করার আগে সতর্ক থাকে, কারণ এখনও পর্যন্ত ভারত এই হামলায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনও প্রমাণ প্রকাশ করেনি।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমাতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার জন্য বলেছেন।
পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনালাপে রুবিও- ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।
তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, রুবিও এই অযৌক্তিক হামলার তদন্তে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ভারতের উস্কানিমূলক আচরণ শুধু উত্তেজনাই বাড়াচ্ছে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ভারতের ওপর দায়িত্বশীল আচরণ ও ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাপ প্রয়োগ করে।
এর আগে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়।
এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। বর্তমানে এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।
তাছাড়া, হামলার পরে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। সূত্র-এএফপি