ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে এক ফুটবলারকে অনুশীলন থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। জানা গেছে, অনুশীলন চলাকালে গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে সেই আন্তর্জাতিক তারকাকে ধরে নিয়ে যান ইংল্যান্ডের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এরপর ছয় ঘণ্টা ধরে সেই ফুটবলারকে জেরা করা হয় এবং তাঁর দুটি ফোনও জব্দ করা হয়।

জব্দ করা ফোনগুলোর ফুটেজ এবং ভিডিও রেকর্ডগুলোও যাচাই করে দেখেছে পুলিশ। প্রিমিয়ার লিগ তারকাকে পুলিশের তুলে নিয়ে যাওয়ার খবরটি নিশ্চিত করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য সান। তারা জানিয়েছে, পুলিশের কাছে সেই ফুটবলারের বিরুদ্ধে সম্মতি ছাড়া যৌন দৃশ্য ধারণ করার অভিযোগ ছিল।

এদিকে পুলিশের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ২০ থেকে ২৯ বছর বয়সের মধ্যে থাকা সেই ফুটবলারের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যে কারণে বিষয়টি নিয়ে আর কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
গুরুতর অভিযোগে সতীর্থকে সাদাপোশাকধারী পুলিশ তুলে নিয়ে গেলেও অন্য খেলোয়াড়েরা মনে করেছিলেন, কেউ হয়তো সেই খেলোয়াড়টির সঙ্গে মজা করছে।

আরও পড়ুনযৌন হয়রানির অভিযোগের পর সান্তোস ছাড়লেন ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি০৫ আগস্ট ২০২৩

তাঁরা কেউই ঘটনাটি বিশ্বাস করতে পারেননি। পরে অবশ্য ভুল ভাঙতে সময় লাগেনি। যদিও বড় কোনো জটিলতা ছাড়াই শেষ হয়েছে বিষয়টি এবং পরবর্তী সময়ে সেই ফুটবলার আবার অনুশীলনে ফিরেও এসেছেন।

দ্য সান জানিয়েছে, সেই ফুটবলারের বিরুদ্ধে নিষেধ করার পরও যৌন সম্পর্কের গোপন ভিডিও ধারণ করার অভিযোগ করেছিলেন এক নারী। কিন্তু সুনির্দিষ্ট তথ্য–প্রমাণ না থাকায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুননারী বিশ্বকাপে যৌন হয়রানির অভিযোগ, তদন্তের ঘোষণা ফিফার০৪ আগস্ট ২০২৩

ঘটনার আপাত পরিসমাপ্তি ঘটলেও সেই অভিযোগকারী নারী এক বন্ধুকে বলেছেন, একসঙ্গে সময় কাটানোর পর সেই ফুটবলার যখন তাঁকে চলে যেতে বলেন, তখন তিনি ‘আক্রান্ত ও অপমানিত’ বোধ করেছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ধর্ষণের অভিযোগে হাকিমির বিচার দাবি ফরাসি কৌঁসুলিদের

২০২৩ সালে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে গতকাল পিএসজি তারকা আশরাফ হাকিমির বিচার করার দাবি তুলেছেন ফরাসি কৌঁসুলিরা। মরক্কোর এই রাইটব্যাক অভিযোগটি অস্বীকার করেছেন।

নঁতের কৌঁসুলি অফিস বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, তদন্তে নিয়োজিত বিচারককে ধর্ষণের এই অভিযোগ ফৌজদারি আদালতে তোলার অনুরোধ করেছেন ফরাসি কৌঁসুলিরা। কৌঁসুলি অফিস থেকে এএফপিকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নিজের আদেশ কাঠামোর ভেতরে থেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার এখন তদন্তে নিয়োজিত ম্যাজিস্ট্রেটের ওপর।’

আরও পড়ুননিষেধাজ্ঞা মেসির পিছু ছাড়ছে না, এবার নিষিদ্ধ হলেন তাঁর দেহরক্ষী৫৭ মিনিট আগে

গত মে মাসে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে পিএসজির ৫–০ গোলের জয়ে বড় অবদান ছিল হাকিমির। পিএসজির প্রথম গোলটি ২৬ বছর বয়সী এই খেলোয়াড়ের। সর্বশেষ ২০২২ বিশ্বকাপেও প্রথম আরব দেশ হিসেবে মরক্কোর সেমিফাইনালে ওঠায় দারুণ অবদান ছিল হাকিমির। ২০২৩ সালের মার্চে ২৪ বছর বয়সী এক নারীকে ধর্ষণের দায়ে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

হাকিমির বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০২৩ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি তিনি অভিযোগকারীকে প্যারিসের উপকণ্ঠে বুলান–বিয়ানকুতে অবস্থিত নিজের বাসায় আসার খরচ দেন। তখন হাকিমির স্ত্রী ও সন্তান ছুটি কাটাতে বাইরে ছিলেন। অভিযোগকারী সেই নারী এরপর পুলিশ স্টেশনে গিয়ে হাকিমির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেন এবং তখন পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে। সেই নারী আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করতে না চাইলেও কৌঁসুলিরা হাকিমির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের সিদ্ধান্ত নেন।

পুলিশকে অভিযোগকারী নারী তখন জানিয়েছিলেন, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ইনস্টাগ্রামে হাকিমির সঙ্গে তাঁর পরিচয়। সেই রাতে ট্যাক্সি করে হাকিমির বাসায় তিনি গিয়েছিলেন এবং ভাড়াটা পিএসজি তারকাই দেন। পুলিশকে সেই নারী বলেছিলেন, হাকিমি সম্মতি ছাড়াই তাঁর শরীর স্পর্শ করেন এবং তারপর ধর্ষণ করেন। পুলিশের এক সূত্রও তখন এএফপিকে এ কথা জানায়। এক বন্ধুকে ফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়ে আসতে বলেছিলেন সেই নারী। পরে সেই বন্ধু এসে তাঁকে নিয়ে যান।

আরও পড়ুনরিয়াল মাদ্রিদ ছাড়তে চান না কোনো খেলোয়াড়, ‘বেকায়দায়’ ক্লাব কর্তৃপক্ষ২ ঘণ্টা আগে

কৌঁসুলিরা গতকাল হাকিমির বিচারের দাবি তোলার পর তাঁর আইনজীবী ফ্যানি কোলিনের সঙ্গে যোগাযোগ করে এএফপি। তাঁর মতে, কৌঁসুলিদের এ সিদ্ধান্ত, ‘মামলার উপকরণ বিচারে বোধগম্য নয় এবং অর্থহীন। আশরাফ হাকিমিসহ আমরা শান্তই আছি এবং আমরা প্রক্রিয়ার শুরুতে ছিলাম। আমরা অবশ্যই আপিলের সব রকম পথই বের করব।’ কোলিন দাবি করেন, তাঁর মক্কেল, ‘পরিকল্পিতভাবে অন্যায় দাবির শিকার’।

অভিযোগকারী নারীর আইনজীবী র‌্যাচেল–ফ্লোর প্রাদো এএফপিকে বলেছেন, ‘এই মামলার কোনো কিছুতেই অন্যায় দাবির আলামত নেই। আমার মক্কেল এ খবরে (হাকিমিকে বিচারের সন্মুখীন করা) অনেক স্বস্তি পেয়েছে।’

গত মৌসুমে পিএসজির চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল জয়ে দারুণ ভূমিকা ছিল হাকিমির

সম্পর্কিত নিবন্ধ