দীর্ঘ ১৭ বছরের অপেক্ষার অবসানের পর শিক্ষার্থীদের কন্ঠস্বর হতে যাচ্ছে ‎বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদ (ব্রাকসু)। গত ২৮ অক্টোবর কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচনের বিধিমালায় অনুমোদন দিয়ে রাষ্ট্রপতি প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করায় তৈরি হয়েছে নির্বাচনের সম্ভাবনা।

এর মধ্য দিয়ে নির্বাচনের দাবি জোরালো হলেও সাম্প্রতিক সময়ে কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীদের নির্বাচন বিধি সংশোধনের দাবিকে ঘিরে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। তবে এ দাবির যৌক্তিকতা দেখছেন না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

আরো পড়ুন:

প্রতিষ্ঠার দেড় যুগ পর ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বেরোবি

‘আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করতে চাই’

‎ সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিধি সংশোধনের নামে নির্বাচনের প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত ও বানচালের চেষ্টা চালাচ্ছে কোনো নিদিষ্ট মহল। কিছু শিক্ষার্থী হঠাৎ করেই বিধি সংশোধনের দাবি তুলেছে।

‎বিধিমালার ধারা ৩(১) এ বলা হয়েছে, হল সংসদের নির্বাচনে শিক্ষার্থী বলতে সেই পূর্ণকালীন শিক্ষার্থীদের বোঝানো হবে, যারা ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছেন এবং বর্তমানে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর কোর্সে অধ্যয়নরত। শিক্ষার্থীরা অবশ্যই কোনো হলের সঙ্গে সংযুক্ত এবং সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠদানের আওতাভুক্ত হতে হবে।

‎বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো.

শাহরিয়ার রহমান বলেন, “ব্রাকসু নির্বাচন হলে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও সমস্যা নিয়ে কথা বলার একটা বৈধ প্ল্যাটফর্ম তৈরি হবে। কিন্তু এখন যে বিধি সংশোধনের বিষয়ে কিছু শিক্ষার্থী আলোচনা করছে, তা মূলত নির্বাচন বিলম্বিত করার অজুহাত মনে হচ্ছে। আমরা দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবি জানাই।”

‎বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মো. রেজওয়ান বলেন, “আমরা ব্রাকসু নির্বাচন চাই, কিন্তু এখন কিছু নিদিষ্ট সংখ্যক শিক্ষার্থী হঠাৎ করে বিধি সংশোধনের আলোচনা তুলেছে। এটা নির্বাচনের আগ মুহূর্তে নতুন জটিলতা তৈরির একটা কৌশল বলেই মনে হচ্ছে।”

‎বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস্ বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সাকিব বলেন, “শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের প্রতিফলন। বিধি সংশোধন নির্বাচনের পরেও হতে পারে। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়ে এই বিধি সংশোধন করতে পারে। কিন্তু বিধি সংশোধনের বিষয়টি যেন নির্বাচনের পথে বাধা না হয়, সেদিকে প্রশাসনের নজর রাখা জরুরি।”

সার্বিক বিষয়ে ‎বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী বলেন, “বিধি সংশোধন নিয়ে একটা গ্রুপ বিতর্ক সৃষ্টি করছে। আর একটা গ্রুপ এটাকে সাপোর্ট করছে। তারা আবার দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন চাচ্ছে। তারা যে বিধি সংশোধন করতে বলছে, তা আমাদের পক্ষে সম্ভব না। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমরা বৈষম্য করতে পারব না।”

বিধি সংশোধন হলো সময় সাপেক্ষ এবং মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক স্বাক্ষরিত ছাড়া সম্ভব না বলেও জানান উপাচার্য।

‎ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ