চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে তানজিদের থেকে লিটনের চাওয়া
Published: 13th, January 2025 GMT
শফিউল ইসলামের লেন্থ বল স্ট্রেইট ড্রাইভে চার লিটন দাসের ব্যাট থেকে। ডানহাতি এই পেসারের শর্ট বল স্কয়ার কাট করে তানজিদ হাসান তামিমের চার। পৃথক দুই ওভারে দুই চার। দুই বাউন্ডারিতে লিটন ও তানজিদ আষ্টেপৃষ্ঠে নিজেদের জড়িয়ে নিলেন রেকর্ড বুকে।
বাংলাদেশে এর আগে স্বীকৃত কোনো টি-টোয়েন্টি ম্যাচে দুই ওপেনার একই ইনিংসে জোড়া সেঞ্চুরি পাননি। রোববার বিপিএলের ম্যাচে ঢাকা ক্যাপিটালসের দুই ওপেনার লিটন ও তানজিদ যথাক্রমে করেন ১২৫ ও ১০৮ রান। দুজন উদ্বোধনী জুটিতে ২৪১ রান জমা করেন। যা বিপিএলে যেকোনো উইকেটে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ। তাদের ব্যাটে ভর করে ঢাকা ১ উইকেটে ২৫৪ রান করে। এটাও বিপিএলে সর্বোচ্চ দলীয় রান। পরবর্তীতে ১৪৯ রানে তারা হারায় দুর্বার রাজশাহীকে। এটাও বিপিএলে সর্বোচ্চ রান ব্যবধানে জয়।
লিটন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি পেয়েছেন। তানজিদ দ্বিতীয়। লিটন অফফর্ম কাটিয়ে উঠে রানে ফিরেছেন। তানজিদ রান পাচ্ছিলেন। কিন্তু বড় ইনিংস আসছিল না। দুজন এই ম্যাচে প্রাপ্তির স্রোতে ভেসেছেন। চার-ছক্কা পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন তারা। তানজিদ ৬৪ বলে ৬ চার ও ৮ ছক্কায় ১০৮ রানের ইনিংসটি সাজান। লিটন ৫৫ বলে ১০ চার ও ৯ ছক্কায় ক্যারিয়ার সেরা ১২৫ রানের ইনিংসটি খেলেন।
দিনের শেষে লিটনের মুখে হাসি ফুটলেও সারাদিন যা হয়েছে তাতে বিষন্ন হলেও হতে পারেন। অফফর্মের কারণে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে তাকে রাখা হয়নি। তার সতীর্থ তানজিদ অবশ্য জায়গা করে নিয়েছেন। দুবাই ও পাকিস্তানে উড়াল দেওয়ার আগে বাঁহাতি ওপেনারের এমন ইনিংস বেশ আত্মবিশ্বাস জোগাবে বলেই বিশ্বাস করেন লিটন।
সতীর্থর কাছে দাবিও করে রেখেছেন। সেটা কী? সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন সেই কথা, ‘‘চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে তামিম দলে সুযোগ পেয়েছেন। এজন্য তাকে অভিনন্দন। চাইবো যেন এই পারফরম্যান্সটা ওখানেও শো করে। শুধু তামিম নয়, যেহেতু আমি বাংলাদেশ দলে খেলি, আমার সতীর্থ যারা আছে। চাইবো বাংলাদেশ যেন ভালো ফল করে।’’
নিজেদের গতকালের ব্যাটিং নিয়ে লিটন বলেছেন, ‘‘দেখেন ওর ইনিংস…… যখনই একটা মানুষ সেঞ্চুরি করে, বড় ইনিংস খেলে তার সাথে সতীর্থর ভূমিকাটা গুরুত্বপূর্ণ। কিছু ওভার দেখবেন আমি অ্যাটাক করেছি, কিছু ওভার দেখবেন ও অ্যাক্ট করেছে। যে কারণে মাঝের ওভারে বাড়তি চাপ আসেনি। সহজে কয়েকটা ওভার সিঙ্গেল খেলতে পেরেছি। আমার মনে হয় দুইজনই আমরা ভালো ব্যাটিং করেছি, দুইজনই ডোমিনেটিং ইনিংস খেলেছি।’’
ঢাকা/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?