বাংলাদেশ ক্রিকেট দল সর্বশেষ পাকিস্তান সফরে গিয়েছে গত বছর আগস্ট-সেপ্টেম্বরে। দুই টেস্টের সিরিজে স্বাগতিকদের ধবলধোলাই করে বাংলাদেশ। সেই সিরিজে গতির ঝড় তোলেন বাংলাদেশের তরুণ পেসার নাহিদ রানা। সে সিরিজে দুই দল মিলিয়ে বোলিংয়ে সবচেয়ে বেশি গতি তুলেছিলেন—ঘণ্টায় ১৫২ কিলোমিটার। পেসার-প্রসবা পাকিস্তানি ক্রিকেট সংগঠকদের নজর কেড়ে নিয়েছিলেন।

সেই গতির ঝড়ই সম্ভবত এবার পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) দল পাইয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের এই পেসারকে। আজ পিএসএল ড্রাফটের রাউন্ড ওয়ানে ‘গোল্ড’ ক্যাটাগরিতে নাহিদকে দলে টেনেছে পেশোয়ার জালমি।

আরও পড়ুনচ্যাম্পিয়নস ট্রফি: দলে আছেন নর্কিয়া, এবার খেলতে পারবেন তো২ ঘণ্টা আগে

লাহোরের হুজুরি বাগে অনুষ্ঠিত ড্রাফটে পাকিস্তানি অলরাউন্ডার হুসেইন তালাত ও নাহিদ রানাকে নিয়ে গোল্ড ক্যাটাগরি শেষ করে পেশোয়ার জালমি। পাকিস্তানের তারকা ব্যাটসম্যান বাবর আজম এই দলের অধিনায়ক। ওয়েস্ট ইন্ডিজের তিন সংস্করণের প্রধান কোচ ড্যারেন স্যামি এই ফ্র্যাঞ্চাইজি দলেরও প্রধান কোচের দায়িত্বে। গত নভেম্বর-ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও গতির ঝড় তুলে আলোচনায় উঠে এসেছিলেন রানা। স্যামি নিশ্চয়ই সেই সফরে তাঁকে খু্ব ভালোভাবে খেয়াল করেছেন। গতির ঝড়ে এসব মিলিয়েই হয়তো পিএসএলের দরজা খুলল নাহিদের জন্য।

এবার পিএসএলের ড্রাফটে বাংলাদেশের ২৮ ক্রিকেটারের নাম রয়েছে। প্লাটিনাম ও ডায়মন্ড ক্যাটাগরিতে রয়েছে ৮ জন—সাকিব আল হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ, রিশাদ হোসেন, তানজিম হাসান ও তাওহিদ হৃদয়। প্লাটিনাম ক্যাটাগরিতে থাকা মোস্তাফিজুর ও সাকিব প্রথম ডাকে অবিক্রীত থেকেছেন। সব ক্যাটাগরি এখনো ডাকা হয়নি। প্রথম ডাকে দল না পাওয়া ক্রিকেটারদের পরে সাপ্লিমেন্টারি ক্যাটাগরি থেকে দল পাওয়ার সুযোগ থাকবে।

আরও পড়ুনবিশ্বকাপে ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্বে বাংলাদেশের সাথিরা৩ ঘণ্টা আগে

ড্রাফটে এখন পর্যন্ত রানা সতীর্থ হিসেবে পেয়েছেন ইংল্যান্ডের উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান টম কোহলার-ক্যাডমোর, দক্ষিণ আফ্রিকার পেস অলরাউন্ডার করবিন বশকে। টমকে প্লাটিনাম ক্যাটাগরি এবং করবিনকে ডায়মন্ড ক্যাটাগরিতে নিয়েছে পেশোয়ার জালমি। ২০১৭ সালে পিএসএল জয়ের পাশাপাশি ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২১ সালে ফাইনালে উঠেছিল জালমি।

নাহিদ রানা এখন বিপিএলে খেলছেন। রংপুর রাইডার্সের হয়ে ৬ ম্যাচে এ পর্যন্ত ৯ উইকেট পেয়েছেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বারসিকের গবেষণা: রাজশাহীর ৯৯ ভাগ দোকানেই মিলছে নিষিদ্ধ কীটনাশক

রাজশাহীর ৯৯ ভাগ কীটনাশকের দোকানেই পাওয়া যাচ্ছে নিষিদ্ধ কীটনাশক ও বালাইনাশক। সরকার নিষিদ্ধ করে রাখলেও নানা নামে এসব কীটনাশক বাজারজাত করা হচ্ছে। ফলে পরিবেশ, প্রকৃতি ও জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ছে। শতকরা ৯৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ ব্যবহারকারীই জানেন না এগুলো নিষিদ্ধ এবং বিপজ্জনক।

চলতি বছর রাজশাহীতে ‘জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর কীটনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব বিষয়ক মাঠপর্যায়ে অনুসন্ধানমূলক সমীক্ষা’ শীর্ষক এক গবেষণায় এমন চিত্র উঠে এসেছে। সমীক্ষাটি করেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক। 

বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে রাজশাহী নগরের একটি হোটেলের কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলন করে গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়ক শহিদুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রাজশাহীর আটটি উপজেলার ১৯টি কৃষিপ্রধান গ্রামাঞ্চলে মাঠপর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ, ভুক্তভোগীদের কেস স্টাডি, স্থানীয় কীটনাশক ডিলার, দোকানদার, পরিবেশক এবং উপজেলা পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে সমীক্ষাটি করা হয়েছে।

সমীক্ষায় দেখা গেছে, নিষিদ্ধ কীটনাশক ব্যবহার করে শতকরা ৬৮ শতাংশ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আর কীটনাশকের ৯৯ ভাগ দোকানেই দেশে নিষিদ্ধ কীটনাশক পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন নামে। এসব নাম দেখে বোঝার উপায় নেই এটি নিষিদ্ধ, বোতলের গায়ে নিচের দিকে জেনেরিক নাম খুব ছোট করে লেখা থাকে। 

বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ যেসব কীটনাশক এখনো পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো হলো- জিরো হার্ব ২০ এসএল (প্যারাকোয়াট), ফুরাডান ৫জি (কার্বোরাইল), এরোক্সান ২০ এসএল (প্যারাকোয়াট), গ্যাস ট্যাবলেট (অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড), কার্বোফোরান ৩ জিএসিআই (কার্বোফোরান), ইঁদুর মারা বিষ (বডিফ্যাকোয়াম) ও তালাফ ২০ এসএল (প্যারাকোয়াট)। এই প্যারাকোয়াট বা ঘাস মারা বিষ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। অনেকে এগুলো আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে পান করেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে কিডনি নষ্ট হয়ে তারা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাজারে অহরহ এসব নিষিদ্ধ কীটনাশক পাওয়া যাচ্ছে, কিন্তু সরকারের কোনো তদারকি নেই। এসব নিষিদ্ধ কীটনাশক ব্যবহার করে কৃষক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে। নিষিদ্ধ কীটনাশক কীভাবে বাজারে বিক্রি হয়, কৃষি বিভাগের দায়িত্ব কী সে বিষয়েও সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রশ্ন তোলা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে নিষিদ্ধ কিছু কীটনাশকও আনা হয়। এগুলো যে দোকান থেকে কেনা হয়েছে তার রশিদও দেখানো হয়। এসব দেখিয়ে বারসিকের নির্বাহী পরিচালক পাভেল পার্থ বলেন, “এগুলো তো বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। আমরা কিনেছি। রশিদও আছে। এগুলো নিষিদ্ধ। আমরা এগুলো হাজির করতে বাধ্য হয়েছি। এই গবেষণা একটি ফৌজদারি অপরাধকে খুঁজে পেয়েছে।”

সংবাদ সম্মেলনে বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে নিষিদ্ধ কীটনাশকের ব্যবহার কঠোরভাবে বন্ধ করা,  কীটনাশক আইন ও বিধি প্রয়োগ করা, কীটনাশক সম্পর্কিত স্বাস্থ্য তথ্য নিবন্ধন করা, কীটনাশকের ফলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণের জন্য তহবিল গঠন করার সুপারিশ করা হয়।

ঢাকা/কেয়া/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বারসিকের গবেষণা: রাজশাহীর ৯৯ ভাগ দোকানেই মিলছে নিষিদ্ধ কীটনাশক