যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ ইরানের জন্য কঠিন সময় যাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। তাঁরা বলছেন, সময়টা পাশ্চাত্যের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে দেশটির জন্য নানা ফল বয়ে আনতে পারে।

ইসরায়েলের নেতাদের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের নেতারাও ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামো/স্থাপনা, বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং তেল ও পেট্রোকেমিক্যাল অবকাঠামোর ওপর সামরিক হামলা চালানোর বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করছেন।

অবশ্য ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিসহ দেশটির অন্যান্য নেতা এসব হুমকিতে ভয় পাচ্ছেন না। দেশটির ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি) সম্প্রতি বড় পরিসরে সামরিক মহড়া চালিয়েছে। স্পর্শকাতর স্থাপনাগুলোর প্রতিরক্ষার কথা মাথায় রেখেই এসব মহড়া চালানো হয়েছে।

পালাবদল, কিন্তু কোন দিকে?

দুই দশকের বেশি সময় ধরে পাশ্চাত্যের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক প্রধানত দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচির বিকাশকে ঘিরে আবর্তিত হচ্ছে। এ সময় দেশটিকে পারমাণবিক বোমা বানানো থেকে বিরত রাখতে চেষ্টা চালানো হয়েছে। তেহরান ধারাবাহিকভাবে বলে আসছে, তারা গণবিধ্বংসী কোনো অস্ত্র বানাতে চায় না।

নিরাপত্তার হুমকি বৃদ্ধি পাওয়ায় ইরানের শীর্ষ রাজনৈতিক ও সামরিক কর্তৃপক্ষ পারমাণবিক বোমা না বানানোর বিষয়ে তেহরানের যে ঘোষিত নীতি রয়েছে, তাতে পরিবর্তন আনার সম্ভাবনা নিয়ে সম্প্রতি আলোচনা করছে।

ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ