জান্নাত আরা হেনরী এবার দুদকের মামলায় গ্রেপ্তার
Published: 13th, January 2025 GMT
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় সিরাজগঞ্জ-২ আসনের (সদর-কামারখন্দ) সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন আজ সোমবার এ আদেশ দেন।
ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে আজ এ আবেদন করেন দুদকের উপপরিচালক (ডিডি) জাহাঙ্গীর আলম।
আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত ২৩ ডিসেম্বর সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরীর বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। সেই মামলায় তাঁকে আজ সোমবার গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এর আগে তাঁকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।
দুদকের একটি মামলায় গতকাল জান্নাত আরা হেনরীর স্থাবর সম্পদ ক্রোকের (জব্দ) আদেশ দেন আদালত। সংস্থাটির তথ্য বলছে, সাবেক এই সংসদ সদস্যের জমি, ফ্ল্যাটসহ ৪৫টি স্থাবর সম্পত্তি, ১৬টি গাড়ি, ১৯টি ব্যাংক হিসাবে থাকা প্রায় ৫৭ কোটি টাকা এবং যৌথ মালিকানাধীন ৪ কোম্পানির ১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ নভেম্বর জান্নাত আরা হেনরী, তাঁর স্বামী শামীম তালুকদার ও মেয়ে মুনতাহা রিদায়ীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। এর আগে ৩০ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হন তিনি। বর্তমানে তিনি ও তাঁর স্বামী কারাগারে আছেন।
এদিকে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছে দুদক। এতে বলা হয়েছে, আনিসুল হকের বিরুদ্ধে ১৪৬ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া গেছে। এ ছাড়া তাঁর ২৯টি ব্যাংক হিসাবে ৩৪৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা জমা হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুনসিরাজগঞ্জের সাবেক সংসদ সদস্য হেনরীর সম্পদ ক্রোকের আদেশ১২ জানুয়ারি ২০২৫জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত ১ জানুয়ারি আনিসুল হকের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের সমন্বিত কার্যালয় ঢাকা–১–এর উপপরিচালক মো.
৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আট দিন পর ১৩ আগস্ট ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে আনিসুল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আরও পড়ুনসাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরী ও তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা২৩ ডিসেম্বর ২০২৪উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোতে হঠাৎ দুদকের অভিযান
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রধান কার্যালয়ে আজ রোববার হঠাৎ অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ইপিবির আয়োজনে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন মেলায় অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে ডলারে ঘুষ নিয়েছেন সংস্থাটির এক উপপরিচালক, এমন অভিযোগে ২০২৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোয় ‘ডলারে ঘুষ নেন ইপিবির এক কর্মকর্তা’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ঘটনা তদন্ত করতে এরপর তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে ইপিবি। কমিটির প্রতিবেদনে অভিযোগের সত্যতা ওঠে আসে।
তবে এক বছরের বেশি সময় পার হলেও এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি ইপিবি। দুদক সম্প্রতি এ বিষয়ে অনুসন্ধান করার জন্য একটি দল গঠন করে এবং ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ আমলে নিয়েই দুদক আজ অভিযান পরিচালনা করেছে বলে জানা গেছে।
জানতে চাইলে ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের এক উপপরিচালকের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ ছিল। এ অভিযোগ খতিয়ে দেখতেই দুদকের তিন সদস্যের একটি দল আমাদের কার্যালয়ে আসে। আমরা তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহায়তা করেছি। বিষয়টি অনুসন্ধান পর্যায়ে আছে।’
ইপিবি গঠিত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ইপিবির অনুমোদন ছাড়া ১৪টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে জামানত বাবদ ১৫০ ডলার করে নেওয়া ঠিক হয়নি।’ আরও বলা হয়, চীনের কুনমিংয়ে ২০২৩ সালের আগস্টে অনুষ্ঠিত একটি মেলায় অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে জামানত নেওয়া হয়েছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া।
দুদকের সূত্রগুলো বলছে, ২০১৭ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন পরিমাণের পে–অর্ডার দিয়েছেন মেলায় অংশগ্রহণকারীরা, ইপিবির এক উপপরিচালক আত্মসাতের উদ্দেশ্যে এত দিন সেগুলো নিজের জিম্মায় রেখে দিয়েছিলেন। দুদক সরেজমিন ইপিবি কার্যালয়ে এসে পে-অর্ডারগুলো উদ্ধারের চেষ্টা করেছে, তবে কিছু উদ্ধার হয়েছে কি না, তা জানা যায়নি।