নিরাপত্তা ও সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানের আশ্বাস পেয়ে হল ছেড়েছেন ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। গতকাল সোমবার দুপুরের পর হল ছাড়তে শুরু করেন তারা। তবে তারা দ্রুত আবাসিক হল খুলে দেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন।
এর আগে শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর রোববার রাতে অনির্দিষ্টকালের জন্য তিনটি হল বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। সোমবার সকাল ৮টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড.

মো. আমান উল্লাহ। তিন দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয় কলেজের শ্রেণি কার্যক্রম। তবে সকালে কিছু শিক্ষার্থী চলে গেলেও বেশির ভাগই হলে অবস্থান করছিলেন।
জানা গেছে, সংঘর্ষের পর হল বন্ধের ঘোষণা করলেও না ছাড়ার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। এতে সোমবার সকালে ফের উত্তেজনা দেখা দেয় ক্যাম্পাসে। পরে দ্রুত কলেজে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আশ্বাস দেয় কর্তৃপক্ষ। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এদিকে রোববারের সংঘর্ষের ঘটনায় ছাত্রদলকে অহেতুক জড়ানো হয়েছে অভিযোগ করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন সংগঠনের নেতারা। গতকাল কলেজ ফটকে সংবাদ সম্মেলন করে তারা বলেন, রোববার অধ্যক্ষের কক্ষে হলের সিট নবায়ন নিয়ে স্টিয়ারিং কমিটির সভা চলছিল। এ সময় হলের শিক্ষার্থীরা এসে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সিনিয়র শিক্ষকদের ক্ষমা চাইতে বলেন। 
বিষয়টি জানতে পেরে ছাত্রদলসহ কলেজের সব ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করেন জানিয়ে তারা বলেন, হলের শিক্ষার্থীরা হামলা করে অধ্যক্ষের কক্ষে জুতা নিক্ষেপ করেন। মূলত এর জেরেই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় শিক্ষার্থী জুবায়ের, বিজয়, মেহেদীসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
ছাত্রদল নেতারা চার দফা দাবিও জানিয়েছেন। সেগুলো হলো মেয়াদোত্তীর্ণ কোনো শিক্ষার্থী হলে থাকতে পারবেন না; অবৈধ ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীকে বের করতে হবে; হলে ৫ আগস্টের পর যারা অবৈধভাবে উঠেছেন, তাদের নবায়ন করা যাবে না এবং নবায়ন ফি ৬ হাজার ৫০০ থেকে কমিয়ে সাড়ে ৫ হাজার টাকা করতে হবে।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

জব্দ করা জাটকা এতিমখানায় বিতরণ, সেই মাছ লুট করলেন আড়তদারেরা

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় জব্দ করা ৭০ কেজি জাটকা দুটি মাদ্রাসা ও এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছিল। তবে সেই মাছ লুট করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন আড়তদারের বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার আমিরাবাদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেলে মৎস্য কার্যালয়ের উদ্যোগে পরিচালিত জাটকা রক্ষার অভিযানে আমিরাবাদ ও দশানী বাজার থেকে ৭০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। অভিযান পরিচালনা করেন মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস। পরে আমিরাবাদ এলাকায় জব্দ করা জাটকা উপজেলার হাজীপুর ও ফরাজীকান্দি মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। স্থানীয় কিছু দুস্থ মানুষকেও কিছু জাটকা দেওয়া হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই জাটকা নিয়ে ওই দুই মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কমিটির লোকজন সন্ধ্যায় আমিরাবাদের বেড়িবাঁধ এলাকায় পৌঁছান। তখন আমিরাবাদ বাজারের মাছের আড়তদার আবুল প্রধান, আরিফ গাজী, সেরু প্রধানিয়া, দেলু বেপারীসহ আরও কয়েকজন তাঁদের পথরোধ করেন এবং জাটকাগুলো লুট করে নিয়ে যান।

হাজীপুর মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ও ফরাজীকান্দি মাদ্রাসার শিক্ষক মো. আল আমিন অভিযোগ করেন, মাছের ওই আড়তদারেরা তাঁদের নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে তাঁদের কাছ থেকে জাটকা লুট করে নিয়ে যান। বাধা দিয়েও কাজ হয়নি। বিষয়টি মৎস্য কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানিয়েছেন।

এ অভিযোগের বিষয়ে আবুল প্রধান, আরিফ গাজী ও সেরু প্রধানিয়ার মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। তবে দেলু ব্যাপারী মুঠোফোনে বলেন, জাটকা লুট করা তাঁদের উচিত হয়নি। ওই জাটকা আজ (বৃহস্পতিবার) তাঁরা ফেরত দেবেন। এটি তাঁদের বড় ভুল হয়েছে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস বলেন, বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। জাটকা উদ্ধারে ব্যবস্থাপনা নেওয়া হচ্ছে।

ইউএনও মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর জাটকা উদ্ধারে তিনি থানার ওসি ও মৎস্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টির তদন্ত চলছে। এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এতিমদের জাটকা লুট হওয়ার বিষয়টি খুব দুঃখজনক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ