ফরিদপুরে যুবক হত্যা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার
Published: 16th, January 2025 GMT
ফরিদপুরের কানাইপুরে আলোচিত ওবায়দুর খান (২৮) হত্যা মামলায় কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ মুহাম্মদ আলতাভ হোসেনকে (৫৪) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এছাড়াও এ ঘটনায় একই ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা জাহিদ শেখ (৪০) নামে আরো একজনকেও গ্রেপ্তার করা হয়। তারা দুজনেই হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামি।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকার মিরপুর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করেন র্যাব-১০ ফরিদপুর ক্যাম্পের সদস্যরা। এ নিয়ে এ মামলায় এখন পর্যন্ত তিনজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন র্যাব-১০ ফরিদপুর ক্যাম্পের স্কট কমান্ডার (সহকারী পুলিশ সুপার) মো.
র্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, হত্যাকাণ্ডের পর গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা আত্মগোপনে চলে যান। প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়ি এলাকার একটি বাড়ি থেকে আত্মগোপন অবস্থায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে সকালে তাদের কোতোয়ালী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে গত শুক্রবার বিকালে নিহত ওবায়দুর খানকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করার অভিযোগ ওঠে ইউপি চেয়ারম্যানের ছোট ভাই খায়রুজ্জামান খাজার নেতৃত্বে ১০-১৫ জনের বিরুদ্ধে। এ সময় তার দুই চোখে পেরেক ঢুকিয়ে খোঁচানো হয় এবং রগ কেটে পা ভেঙে ফেলা হয়। পরে রাত ৯টার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পথে মারা যান।
নিহত ওবায়দুর জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের ঝাউখোলা গ্রামের বিল্লাল খানের ছোট ছেলে এবং পেশায় কৃষি ও কাঠ মিস্ত্রির কাজ করতেন। তার পাঁচ মাসের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।
এ ঘটনার পর শনিবার রাতে খায়রুজ্জামান খাজাকে প্রধান আসামি করে ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন ওবায়দুরের বাবা বিল্লাল খান। তবে এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন খাইরুজ্জামান খাজা। তার বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় হত্যা, ডাকাতি, দস্যুতাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
ঢাকা/তামিম/ইমন
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র প ত র কর
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।