পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে ভুয়া ডিবি পুলিশ সন্দেহে দুই ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে এলাকাবাসী।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে দেবীগঞ্জ করতোয়া সেতুর পশ্চিম পাড়ে এশিয়ান হাইওয়ে থেকে তাদের আটক করা হয়।
ডিবি পরিচয় দেওয়া আটক দুই ব্যক্তি হলেন- ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া গোপালপুর এলাকার নুর আলমের ছেলে রেজাউল ইসলাম ও দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ডাকেশ্বরী এলাকার আজিজুল হকের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম।
আরো পড়ুন:
‘আমার কাছে বালির মূল্য বেশি, মানুষের কোনো মূল্য নাই’
বরিশালে মানবপাচার চক্রের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার
ফরিদপুর থেকে ব্যবসায়িক কাজে আসা খন্দকার অহিদুর রহমান জানান, ফরিদপুর সদরের কানাইপুর বাজারে তাদের ওয়ার্কশপ আছে। যেখানে জুট মিলের পুরাতন যন্ত্রাংশ নিয়ে সেগুলো মেরামত করে পুনরায় বিক্রি করা হয়। ঠাকুরগাঁওয়ের নিরাব আলী নামে এক ব্যক্তি জুট মিলের পুরনো যন্ত্রাংশ বিক্রি হবে জানিয়ে তাকে ঠাকুরগাঁওয়ে আসতে বলেন। অহিদুর ও তার ছেলে রিফাত গত মঙ্গলবার ঠাকুরগাঁওয়ে আসেন এবং আবাসিক হোটেলে ওঠেন। তাদের বলা হয়, যিনি যন্ত্রাংশ বিক্রি করবেন তিনি ঢাকায় গেছেন। তাই শুক্রবার পর্যন্ত তাদের অপেক্ষা করতে হবে। এ কথা শুনে, হোটেলে নিজেদের জিনিসপত্র রেখে অহিদুর ও তার ছেলে রিফাত ফরিদপুরে চলে যান।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) ফরিদপুর থেকে রওনা হয়ে শুক্রবার সকাল ৭টায় ঠাকুরগাঁও এ নামেন বাবা-ছেলে। এরপর প্রথমে হোটেলে কিছুক্ষণের জন্য গিয়ে পরে নিরাব আলীর সঙ্গে বের হন পুরনো যন্ত্রাংশ দেখবেন বলে। ঠাকুরগাঁও বাইপাস সড়ক হয়ে কিছু দূর যাওয়ার পর চারজন ব্যক্তি ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তাদের পথরোধ করে। এরপর সঙ্গে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করে ৫ লাখ টাকা নেওয়ার পর বাবা-ছেলেকে হাতকড়া পরায়। তাদের দুইটি স্মার্টফোনও নিয়ে নেয় ওই ব্যক্তিরা।
হাতকড়া খুলে দুইটি মোটরসাইকেলে তাদের তুলে থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে। থানায় না নিয়ে ভিন্ন স্থানে নিয়ে বাবা-ছেলের হাতে ডলার ও ইয়াবা দিয়ে ছবি তোলে তারা। কোথাও অভিযোগ না দেওয়ার শর্তে তাদের দেবীগঞ্জে নামিয়ে দিতে আসে মোটরসাইকেলে। নামিয়ে দেওয়ার সময় অহিদুরের ছেলে রিফাত কৌশলে একটি মোটরসাইকেলের চাবি কেড়ে নিলে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এসময় দুইজন পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা এসে পুলিশ পরিচয় অপর দুইজনকে আটক করে পুলিশকে খবর দেয়।
দেবীগঞ্জ থানার ওসি সোয়েল রানা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আটককৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। যেহেতু ঠাকুরগাঁওয়ের ঘটনা তাই সেখানে মামলা হবে। আমরা কথা বলেছি ঠাতুরগাঁও থানায়। ভুক্তভোগীরা পুলিশ হেফাজতে আছে।
ঢাকা/নাঈম/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নদীতে মিলল স্কুলছাত্রের লাশ, চার সহপাঠী আটক
চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও হামিদচর এলাকায় কর্ণফুলী নদী থেকে এক স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার সকালে লাশটি উদ্ধার হয়। পুলিশ বলছে, পরিকল্পিতভাবে মারধরের পর ওই স্কুলছাত্রকে নদীতে ফেলে দেয় তার কয়েকজন সহপাঠী। এ ঘটনায় চারজনকে আটক করা হয়েছে।
নিহত স্কুলছাত্রের নাম রাহাত ইসলাম (১২)। সে নগরের চান্দগাঁও সানোয়ারা বয়েজ স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিল। সে চান্দগাঁও থানার পূর্ব ফরিদেরপাড়া এলাকার লিয়াকত আলীর ছেলে। সকালে হামিদচর এলাকায় নদীতে রাহাতের লাশ দেখতে পেয়ে বাসিন্দারা পুলিশকে খবর দেন। এরপর তার লাশ উদ্ধার হয়।
নিহত রাহাতের বাবা লিয়াকত আলী প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ছেলে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে বের হয়। এরপর তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। অনেক স্থানে সন্ধানের পরও খোঁজ না পেয়ে বিষয়টি রাতেই পুলিশকে জানানো হয়েছিল। সকালে ছেলের লাশ পাওয়া যায়। তিনি অভিযোগ করেন, পরিকল্পিতভাবে বন্ধুরা রাহাতকে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি দাবি করেন তিনি।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (উত্তর) জাহাঙ্গীর আলম আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় নিহত স্কুলছাত্রের চার সহপাঠীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।