জাবির ছাত্রী হলের কক্ষ থেকে যুবক আটক
Published: 19th, January 2025 GMT
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের একটি কক্ষ থেকে বহিরাগত এক যুবককে আটক করেছে ওই হলের শিক্ষার্থী ও হল কর্তৃপক্ষ। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে হলের তৃতীয় তলার একটি কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি তাকে আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
অপরদিকে, এই ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ছাত্রীদের আবাসিক হলের নিরাপত্তা জোরদার করা এবং হলের শৃঙ্খলাভঙ্গের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। রাত পৌনে ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি সড়ক ঘুরে নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
আটক ওই যুবকের নাম আশরাফুল ইসলাম পারভেজ ওরফে যাযাবর পারভেজ (৩১)। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান ‘হিম উৎসবে’ ঘুরতে এসেছিলেন বলে জানিয়েছেন। তার বাড়ি চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের ডাবলমুরিং থানায়।
হল কর্তৃপক্ষ, প্রক্টরিয়াল বডি ও হলের আবাসিক ছাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫২তম ব্যাচের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের এক ছাত্রীর সঙ্গে কপালে টিপ, প্লাজু ও মুখে ঘোমটা দিয়ে হলের ভেতরে প্রবেশ করেন আশরাফুল ইসলাম পারভেজ।
এ সময় হলের তৃতীয় তলার কয়েকজন শিক্ষার্থী তার পোশাক ও হাঁটার ধরন দেখে সন্দেহ করেন। পরে এক শিক্ষার্থী হল সুপারকে সিসিটিভি ফুটেজ চেক করতে বলেন। সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে হল সুপার ওই কক্ষে গিয়ে অভিযুক্ত আশরাফুল ইসলাম পারভেজ এবং ওই শিক্ষার্থীকে একসঙ্গে পান। এ সময় শিক্ষার্থীরা ও হল কর্তৃপক্ষ আশরাফুল পারভেজ ও ওই নারী শিক্ষার্থীকে আটক করেন।
আটকের পর আশরাফুল ইসলাম পারভেজকে শাড়ি ও টিপ পরিয়ে দেন হলের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এ সময় হল কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডিকে জানালে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পরে রাত পৌনে ২টার আশরাফুল ইসলাম পারভেজকে আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
আশরাফুল ইসলাম পারভেজ বলেন, ‘‘আমরা ভালো বন্ধু (ওই নারী শিক্ষার্থী)। ফেসবুকে আমাদের সাত বছরের পরিচয়। দুজনেই লালন ভক্ত। আমি হিম উৎসবে বেড়াতে এসেছিলাম। হলে প্রবেশের সময় কপালে টিপ এবং মুখ ও শরীর চাদরে মুড়িয়ে রাখি।’’
অভিযুক্ত নারী শিক্ষার্থী বলেন, ‘‘আমি ও পারভেজ ভালো বন্ধু। সে হিম উৎসবে এসেছিল। রাতে থাকার জায়গা না থাকায় তাকে হলে নিয়ে এসেছিলাম। তবে, আমরা কেউ আপত্তিকর অবস্থায় ছিলাম না।’’
নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের হল সুপার নাদিয়া সুলতানা বলেন, ‘‘হলের মেয়েরা কক্ষে পুরুষের উপস্থিতি বুঝতে পেরে আমাকে জানালে তাৎক্ষণিক এক নারী কর্মচারীকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। দরজা খোলার পর তাকে খাটের ওপরে বসে থাকতে দেখি। পরে বিষয়টি হল প্রাধ্যক্ষকে জানানো হয়।’’
হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘‘অভিযুক্তকে প্রক্টরিয়াল বডির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হবে।’’
এদিকে, আশরাফুলকে পুলিশের কাছে হস্তান্তরের পর ছাত্রী হলের নিরাপত্তা ভঙ্গের দায়ে ওই নারী শিক্ষার্থীর বিচার চেয়েছেন হলের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এ সময় অভিযুক্ত ছাত্রীর পক্ষ নিয়ে হলের ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়ান ৪৭তম ব্যাচের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের এক শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় হলের ছাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ‘‘হল কর্তৃপক্ষের কাছে খবর পাওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রক্টরিয়াল টিমকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। পরে আটক যুবককে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর অভিযুক্ত নারী শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে শাস্তির মুখোমুখি করা হবে।’’
ঢাকা/আহসান/রাজীব
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এস ছ ল এ সময়
এছাড়াও পড়ুন:
কানাডায় নির্বাচন: মার্ক কার্নির লিবারেল সদর দপ্তরে উৎসব শুরু
কানাডায় ভোট গ্রহণ শেষে চলছে গণনা। ভোটের চূড়ান্ত ফলাফল আসতে আরও খানিকটা সময় লাগবে। তবে এরই মধ্যে দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির দল লিবারেল পার্টির সদর দপ্তরে উৎসব শুরু হয়ে গেছে। কারণ, দেশটির রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিবিসি বলেছে, এবার লিবারেল সরকার হতে চলেছে।
কানাডার ৩৪৩ আসনের হাউস অব কমন্সে লিবারেল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে, নাকি তাদের সংখ্যালঘু সরকার গঠন করতে হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে মার্ক কার্নিই যে প্রধানমন্ত্রী থাকবেন, তা অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
বিবিসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, লিবারেল ১৫৬টি আসনে এগিয়ে আগে। একক সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার গঠন করতে চাই ১৭২টি আসন। খুব একটা পিছিয়ে নেই প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টি। দলটি ১৪৭ আসনে এগিয়ে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, আমাদের নির্বাচন থেকে দূরে থাকুন। কানাডা সব সময় গর্বিত, সার্বভৌম ও স্বাধীন দেশ থাকবে এবং আমরা কখনো ৫১তম অঙ্গরাজ্য হব না।—পিয়েরে পলিয়েভর, বিরোধী কনজারভেটিভ পার্টির নেতাপুরোপুরি বদলে যাওয়া এক নির্বাচনী পরিবেশে গতকাল সোমবার ভোট দিয়েছেন কানাডার জনগণ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপ এবং কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত করার ইচ্ছা দেশটিতে নির্বাচনের আগে প্রধান আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছিল।
ট্রাম্পের এ ধরনের হুমকি কানাডায় দেশপ্রেমের জোয়ার সৃষ্টি করেছে। এমন পরিস্থিতিতে লিবারেল পার্টির প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী মার্ক কার্নির প্রতি জনসমর্থন বেড়ে যায়।
লিবারেল ১৫৬টি আসনে এগিয়ে আগে। একক সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার গঠন করতে চাই ১৭২টি আসন। খুব একটা পিছিয়ে নেই প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টি। দলটি ১৪৭ আসনে এগিয়ে।অথচ যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ ও ট্রাম্পের আক্রমণাত্মক কথাবার্তা শুরু হওয়ার আগে জরিপে প্রতিদ্বন্দ্বী পিয়েরে পলিয়েভরের কনজারভেটিভ পার্টি থেকে সামান্য পিছিয়ে ছিল কার্নির লিবারেল দল। ট্রাম্প কানাডাকে নিয়ে আক্রমণাত্মক কথা বলা শুরু করলে কানাডীয়দের মধ্যে দেশপ্রেমের জোয়ার ওঠে এবং জরিপের পূর্বাভাসে হঠাৎ বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
ভোটের দিন সকালেও ট্রাম্প কানাডাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়েছেন। ট্রাম্প লিখেছেন, কানাডা যদি যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম কাঙ্ক্ষিত অঙ্গরাজ্য হয়, তবে শূন্য শুল্কের সম্মুখীন হবে।
লিবারেল পার্টির সদর দপ্তরে সমর্থকদের উল্লাস