পর্দা নামল ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের, পুরস্কার পেল যারা
Published: 19th, January 2025 GMT
ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ২৩তম আসরের পর্দা নামল। ঢাকাস্থ জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তন বিকাল ৪টায় সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে হাজির ছিলেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তিনি উৎসবে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন।
এবারের উৎসবে চিলড্রেন ফিল্ম সেকশনের বাদল রহমান অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে মিখাইল লুকাসেভিস্কি পরিচালিত রাশিয়ান সিনেমা ‘হয়্যার দ্য হোয়াইট ক্রেন্স ড্যান্স’।
স্পেশাল অডিয়েন্স অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে জসেলিতো আলটারেজোস নির্মিত ফিলিপাইনস-এর সিনেমা ‘দ্য গার্ডিয়ান অব অনার’। সৃজিত মুখার্জী পরিচালিত ভারতীয় সিনেমা ‘পদাতিক’ পেয়েছে বেস্ট অডিয়েন্স অ্যাওয়ার্ড। উইম্যান ফিল্মমেকার সেকশনে স্পেশাল মেনশন অ্যাওয়ার্ডটি পেয়েছে ক্লাভদিয়া করশুনোভা পরিচালিত ‘মলডোভা’ এবং রাশিয়ার যৌথ প্রযোজনার সিনেমা ‘নট জাস্ট অ্যানি ডে’।
একই সেকশনের বেস্ট শর্ট ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে মারিয়া ববেভা নির্মিত বুলগেরিয়ার সিনেমা ‘স্কারলেট’। বেস্ট ফিচার ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত সিনেমাটি হচ্ছে সারাহ মাল্লেগোল নির্মিত ফ্রান্সের সিনেমা ‘কুম্ভা’। বেস্ট ডিরেক্টর অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত সিনেমা হচ্ছে আর্জেন্টিনা ও জার্মানির যৌথ প্রযোজিত ‘আওয়ার ওউন স্যাডো’, এটি পরিচালনা করেছেন অগাস্টিনা জেভিয়ের।
স্পিরিচুয়াল ফিল্ম সেকশনের বেস্ট শর্ট ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডটি পায় লুইস কমপোজ পরিচালিত পর্তুগিজ সিনেমা ‘মনটে ক্লেরিগো’। উক্ত বিভাগের স্পেশাল মেনশন অ্যাওয়ার্ডটি পায় অভিলাষ শর্মা নির্মিত ভারতীয় সিনেমা ‘ইন দ্য নেম অব ফায়ার’ এবং বেস্ট ফিচার ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডটি জিতে নেয় ইভান সসনিন পরিচালিত রাশিয়ান সিনেমা ‘দ্য এলিয়েন’।
বাংলাদেশ প্যানোরামার ট্যালেন্ট সেকশনে ৩টি সিনেমা পুরস্কৃত হয়; সেকেন্ড রানারআপ সিনেমাটি মোবারক হোসাইন নির্মিত ‘পৈত্রিক ভিটা’। ফার্স্ট রানারআপ হয় আসিফ হামিদ পরিচালিত ‘ফুলেরা পোশাক পরে না’ এবং ফিফ্রেসি জুরি কর্তৃক প্রদত্ত বেস্ট ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডটি পায় মনন মুনতাকা নির্মিত ‘আ লেজি নুন’ এবং বেস্ট ফুল লেন্থ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে শঙ্খ দাসগুপ্ত পরিচালিত ‘প্রিয় মালতী’।
এশিয়ান ফিল্ম কম্পিটিশন সেকশনের বেস্ট স্ক্রিপ্টরাইটার অ্যাওয়ার্ডটি পায় তাকাতো নিশি ও নরিকো ইউয়াসা, তাদের সিনেমা ‘পারফর্মিং কাউরুস ফিউনারেল’-এর জন্য। এটি একটি জাপানিজ সিনেমা।
উক্ত সেকশনের বেস্ট সিনেমাটোগ্রাফি অ্যাওয়ার্ডটি পায় সিনেমাটোগ্রাফার দিলসাত ক্যানান। তার্কিস সিনেমা ‘হোয়েন দ্য ওয়ালনাট লিভস টার্ন ইয়োলো’এর জন্য এই পুরস্কার পান তিনি।
বেস্ট অ্যাক্ট্রেস অ্যাওয়ার্ডটি পান দিমান জানদি তার অভিনীত ইরানী এবং তাজিকিস্তান প্রযোজিত সিনেমা ‘মেলোডি’র জন্য। বেস্ট অ্যাক্টর অ্যাওয়ার্ডটি জিতে নেন রাইয়ান সার্লেক, তার অভিনীত ইরানী সিনেমা ‘সামার টাইম’-এর জন্য। সিনেমাটি পরিচালনা করেন বিখ্যাত ইরানী চলচ্চিত্র পরিচালক এবং সিনেমাটোগ্রাফার মাহমুদ কালারি।
উক্ত বিভাগে মাহমুদ কালারি বেস্ট ডিরেক্টর হিসেবে স্পেশাল মেনশন অ্যাওয়ার্ড পান ‘সামার টাইম’ নির্মাণের জন্য। এছাড়া চীনা চলচ্চিত্র পরিচালক হাউফেং জু ও জুনফেং জু বেস্ট ডিরেক্টর অ্যাওয়ার্ডটি পান তাদের সিনেমা ‘১০০ ইয়র্ডস’-এর জন্য।
এশিয়ান ফিল্ম কম্পিটিশন সেকশনের বেস্ট ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডটি জিতে নেয় শকির খলিকোভ পরিচালিত উজবেকিস্তানি সিনেমা ‘সানডে’।
এবারের উৎসবে ১০ টি ভিন্ন ভিন্ন বিভাগে ৭৫ টি দেশের ২০৩ টি চলচ্চিত্র নিয়ে ঢাকার ৫ টি ভেন্যুতে ৯ দিন ব্যাপী আয়োজিত এই উৎসবে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন ৪৪ জন বিদেশি প্রতিনিধি। চীন ও বাংলাদেশের ৫০ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্কের উদযাপন লক্ষ্যে এবার উৎসবের ওয়াইড অ্যাঙ্গেল সেকশনটি চীনা চলচ্চিত্রের জন্য উৎসর্গ করা হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স কশন র ব স ট চলচ চ ত র পর চ ল ত র উৎসব র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
কুষ্টিয়ায় এবার ২৫০টি মন্দিরে দুর্গাপূজা, বেড়েছে ২২টি মন্ডপ
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে কুষ্টিয়ার মন্ডপগুলোতে চলছে নানা প্রস্ততি। তাই ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পী ও আয়োজকেরা। গত বছরের তুলনায় এ বছর জেলায় বেড়েছে ২২টি পূজা মন্ডপ। সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে প্রশাসন। জেলায় ২৫০টি মন্দিরে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
বিভিন্ন মন্দির ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। আবার কোথাও শুরু হয়েছে রঙের কাজ। আপন মনে প্রতিমাগুলো ফুটিয়ে তুলছেন শিল্পীরা। এখন শেষ সময়ের পূজার প্রস্ততি নিচ্ছেন আয়োজকেরা। দুর্গাপূজা উপলক্ষে সনাতন ধর্মালম্বীদের মাঝে বইছে উৎসবের আমেজ। প্রতিমা শিল্পীরা ৫টি থেকে ১০টি পর্যন্ত প্রতিমা তৈরি করেছেন।
প্রতিমা শিল্পী কুমারেশ দাস ও মৃত্যুঞ্জয় কুমার পাল জানান, শেষ সময়ে প্রতিমা শিল্পীদের বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারে চাহিদাও বেশি।
এদিকে সকলের সহযোগিতায় অনাড়ম্বরভাবে দুর্গোৎসব পালন করতে চান আয়োজকরা।
হরিবাসর সার্বজনীন পূজা মন্দিরের উপদেষ্টা বিপ্রজিৎ বিশ্বাস বলেন, “আশা করছি প্রতিবছরের মতো এবছরও উৎসব মুখর পরিবেশে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রশাসনের সহযোগিতা ও আশ্বাসে আমরা আমাদের পূজার কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছি।”
মিলপাড়া সাবর্জনীন পূজা মন্দিরের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বাপ্পী বাগচী বলেন, “প্রত্যেক ধর্মকে সন্মান জানানো প্রত্যেকটি মানুষের দায়িত্ব ও কর্তব্য। আমাদের উৎসবে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে এলাকার সকলেই আমাদের পাশে থাকেন। আশাকরি এবারও তার ব্যত্যয় হবে না।”
কুষ্টিয়া মহাশ্মশান মন্দিরের পুরোহিত পলাশ চক্রবর্ত্তী বলেন, “আগামী ২১ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মধ্য দিয়ে দেবী পক্ষের সূচনা হবে। এরপর ২৮ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠী এবং ২ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শারদীয়া দুর্গোৎসবের সমাপ্তি ঘটবে। এবার পৃথিবীতে দশভূজার আগমন হবে হাতিতে চড়ে আর কৈলাশে ফিরবেন দোলায়।”
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়ার ৬ উপজেলায় ২৫০ মন্দিরে শারদীয়া দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৮১টি, খোকসা উপজেলায় ৫৯টি, কুমারখালী উপজেলায় ৫৯টি, মিরপুর উপজেলায় ২৮টি, ভেড়ামারা উপজেলায় ১১টি ও দৌলতপুর উপজেলায় ১২টি মন্ডবে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া এ বছর গত বছরের তুলনায় ২২টি মন্ডপে পূজা বেড়েছে।
কুষ্টিয়া জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জয়দেব বিশ্বাস বলেন, “গত বছরের তুলনায় এ বছর ২২টি পূজা বেশি হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশাসনের সাথে পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দের বৈঠক হয়েছে। এছাড়া ১৯টি ঝুঁকিপূর্ণ মন্ডপের তালিকা প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছে।”
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, “প্রতিটা পূজা মন্দিরে কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে পূজা মন্দিরে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনসহ পুলিশ ও আনসার মোতায়েন করা হবে।”
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন জানান, যার যার ধর্মীয় উৎসব স্বাধীনভাবে ও উৎসব মুখর পরিবেশে পালন করা তাদের অধিকার। কোন প্রোপাগান্ডা ও গুজবে কান দেওয়া যাবে না। বর্তমান সরকারের মবের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে। মব সৃষ্টি করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা/কাঞ্চন/এস