প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এমএম নাসির উদ্দিন বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা অনুযায়ী, আমরা ডিসেম্বরকে টার্গেট করে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছি। এ জন্য অক্টোবরের মধ্যেই মাঠ পর্যায়ের সব কাজ শেষ করার চেষ্টা করব। আশা করি, এটা শেষ হয়ে যাবে। নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে হলে অনেক স্বাধীনতা দিতে হবে এবং কিছু প্রস্তাব মানতে হবে। আমাদের সামনে একটা যুদ্ধের মাঠের নামতে হবে, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি, এজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।

আজ রোববার আগারগাঁও নির্বাচন কমিশন কার্যালয় রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি- আর এফইডি আয়োজিত মত বিনিময়সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

সিইসি বলেন, পার্লামেন্টের স্থায়ী কমিটির হাতে নির্বাচন কমিশনের কোনো কাজ গেলে ইসির স্বাধীনতা খর্ব হবে। স্থায়ী কমিটির কাছে নির্ভরশীল হতে চাই না। এ সংক্রান্ত সুপারিশ বাতিল করতে হবে। পার্লামেন্টারি স্টান্ডিং কমিটির মুখাপেক্ষী হলে ইসির ক্ষমতা খর্ব করা হবে। ভোটার হালনাগাদ এবং সীমানা নির্ধারণের জন্য ইসির বাইরে অন্য কারও হস্তক্ষেপ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য না।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, নির্বাচন কমিশনকে কুইক ফেস করা যায় না। সুষ্ঠু নির্বাচন করতে এখনই কোনো ধরনের পরিবেশ তৈরি হয়নি। রুলস অফ গেমস কিভাবে হবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। নির্বাচন কমিশন সংস্কার প্রস্তাব এখনো পূর্ণাঙ্গভাবে পাইনি। সীমানা পুনঃনির্ধারণ নিয়ে কোনো ফয়সালা হয়নি। রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন ঠিক করতে হবে। সুতরাং অনেক কিছুই আইনের কারণে আটকে আছে।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন সব সময় স্বাধীন। আমাদের চেয়ে বেশি কেউ স্বাধীন নয়। তারপরেও একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে কিছু আইন সংশোধন করতে হবে। 

এ এম নাসির উদ্দিন বলেন, অতীতে মে জুন মাসে, অর্থাৎ বর্ষাকালে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, এমনটা আমি দেখি নাই। নির্বাচন কমিশনকে অন্তত দুই মাস আগে জানাতে হবে। প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা অনুযায়ী, ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন করতে হলে অক্টোবরেই সিডিউল ঘোষণা করতে হবে। আমি চাচ্ছি সব আইনগত প্রক্রিয়া শেষ করে নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণা করতে। সেজন্য অন্তত কিছুদিন সময়ের প্রয়োজন। 

তিনি বলেন, নির্বাচন-সংক্রান্ত সংস্কার কমিশন থেকে অনেক প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এগুলো সব বাস্তবায়ন করতে হলে নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব ক্ষমতা খর্ব হবে। জাতীয় নির্বাচনের চেয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অনেক হানাহানি ও বিশৃঙ্খলা হয়। শতভাগ মানুষ সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। জনগণ সচেতন হলে সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে হানাহানি বিশৃঙ্খলা ও কাজ চুপে প্রতিরোধ করা সম্ভব। 

সিইসি বলেন, আমরা ওই দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করব, যেদিন পর্যন্ত শুধু আওয়ামী লীগ নয়, যাদের নিবন্ধন থাকবে তারাই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। কে নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিতে পারবেন বা পারবেন না, সেটা নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত নয়, এটা সরকারের সিদ্ধান্ত। 

তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা অনুযায়ী, আমরা ডিসেম্বরকে টার্গেট করে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছি। এ জন্য অক্টোবরের মধ্যেই মাঠ পর্যায়ের সব কাজ শেষ করার চেষ্টা করব। আশা করি, এটা শেষ হয়ে যাবে। নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে হলে অনেক স্বাধীনতা দিতে হবে এবং কিছু প্রস্তাব মানতে হবে। আমাদের সামনে একটা যুদ্ধের মাঠের নামতে হবে, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি, এজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন করত

এছাড়াও পড়ুন:

‘ভারতকে থামান’, জাতিসংঘকে শাহবাজ শরিফ

ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে হামলাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট উত্তেজনার মধ্যে নয়াদিল্লিকে দায়িত্বশীল আচরণ ও সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাতে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে অনুরোধ জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।

প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ জোর দিয়ে বলেছেন, ভারতের পক্ষ থেকে সিন্ধু অববাহিকার পানিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা পাকিস্তানের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।

জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে এক ফোনালাপে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। দুই নেতার এ আলাপে দক্ষিণ এশিয়ার সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহের ওপর আলোকপাত করা হয়।

গুতেরেসের সঙ্গে আলাপে শাহবাজ বলেন, ভারতের কোনো দুর্ভাগ্যজনক আচরণের জবাবে পাকিস্তান তার সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা পূর্ণ শক্তি দিয়ে রক্ষা করবে।

ভারতের কোনো দুর্ভাগ্যজনক আচরণের জবাবে পাকিস্তান তার সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা পূর্ণ শক্তি দিয়ে রক্ষা করবে।শাহবাজ শরিফ, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী

ভারত–নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে গত মঙ্গলবার থেকে উত্তেজনা বেড়ে গেছে। ঘটনার পরপরই কোনো প্রমাণ ছাড়াই ভারত ওই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে।

জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে আলাপে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের নিন্দা জানায়। বৈশ্বিক সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে পাকিস্তানের বড় ত্যাগের কথাও তুলে ধরেন তিনি।

ভারতের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে শাহবাজ বলেন, পেহেলগামের ঘটনায় পাকিস্তানকে যুক্ত করার যেকোনো চেষ্টা অগ্রহণযোগ্য। পাশাপাশি তিনি ওই ঘটনায় নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।

‘সন্ত্রাসবাদ’-এর অজুহাতে কাশ্মীরিদের স্বাধীনতা আন্দোলনকে অবমূল্যায়ন করার ‘ভারতীয় চেষ্টায়’ গভীর উদ্বেগ জানান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীরে ভারতের ‘রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত সন্ত্রাসের’ বিষয়ে তুলে ধরেন তিনি।

‘সন্ত্রাসবাদ’-এর অজুহাতে কাশ্মীরিদের স্বাধীনতা আন্দোলনকে অবমূল্যায়ন করার ‘ভারতীয় চেষ্টায়’ গভীর উদ্বেগ জানান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীরে ভারতের ‘রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত সন্ত্রাসের’ বিষয়ে তুলে ধরেন তিনি।

গুতেরেসকে শাহবাজ বলেন, সিন্ধু অববাহিকার পানিকে অস্ত্র বানানোর ভারতের প্রয়াস গ্রহণযোগ্য নয়। এ অববাহিকার পানিকে ২৪ কোটি পাকিস্তানির জীবনীশক্তি হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারত কোনো দুর্ভাগ্যজনক আচরণ দেখালে, এর জবাবে পাকিস্তান তার সার্বভৌমত্ব ও ভৌগলিক অখণ্ডতা রক্ষায় সর্বশক্তি নিয়োগ করবে।

জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রতি ভারতকে সংযত আচরণ করার পরামর্শ দেওয়ার ও নিরাপত্তা পরিষদের প্রাসঙ্গিক প্রস্তাবসমূহ অনুযায়ী কাশ্মীর সমস্যার ন্যায়সংগত সমাধানে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

শাহবাজ বলেন, পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একটি দায়িত্বশীল সদস্য ও নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য হিসেবে বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তা ত্বরান্বিত করায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

মহাসচিব গুতেরেস ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং সংঘাত এড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেন, যা দুঃখজনক পরিণতি বয়ে আনতে পারে। উত্তেজনা প্রশমনের প্রচেষ্টায় নিজের মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা রাখার প্রস্তাব দেন তিনি।স্টিফেন ডুজারিক, জাতিসংঘের মুখপাত্র

এদিকে জাতিসংঘের একজন মুখপাত্র বলেন, মহাসচিব গুতেরেস পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামানিয়াম জয়শংকরের সঙ্গে কথা বলেছেন। এসব আলাপে গুতেরেস আইনি পন্থায় ন্যায়বিচার অনুসরণের গুরুত্ব তুলে ধরেন।

আরও পড়ুনসিমলা চুক্তি স্থগিত করার পাকিস্তানের হুমকি কি যুদ্ধ ঘোষণার শামিল২০ ঘণ্টা আগে

জাতিসংঘ মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, মহাসচিব ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং সংঘাত এড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেন, যা দুঃখজনক পরিণতি বয়ে আনতে পারে। উত্তেজনা প্রশমনের প্রচেষ্টায় নিজের মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা রাখার প্রস্তাব দেন তিনি।

আরও পড়ুন৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানে ভারতের হামলার পরিকল্পনার গোয়েন্দা তথ্য আছে৭ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনভারত-পাকিস্তানের প্রতি উত্তেজনা না বাড়ানোর আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের১ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শারীরিক শাস্তি শিশুর বিকাশে বড় বাধা, বিলোপ জরুরি
  • ‘ভারতকে থামান’, জাতিসংঘকে শাহবাজ শরিফ
  • রাজনৈতিক দলের সমর্থন ছাড়া প্রক্সি ভোট বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়: সিইসি