২০১৪ সালে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে এক বিএনপি কর্মী হত্যার অভিযোগে সিরাজগঞ্জ-২ (সদর-কামারখন্দ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্নাসহ আওয়ামী লীগের ৪৭ নেতাকর্মীর নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সকালে বাদীপক্ষের আইনজীবী ও সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এম নাজমুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি বলেন, “চলতি বছরের (২৬ জানুয়ারি) নিহত জাহাঙ্গীর হোসেনের স্ত্রী রোজিনা খাতুন বাদী হয়ে ৪২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জনকে আসামি করে কামারখন্দ থানা আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে কামারখন্দ থানাকে এজাহারভুক্ত করে তদন্তপূর্বক আদালতে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।” 

নিহত বিএনপি কর্মী জাহাঙ্গীর হোসেন সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের তেতুলিয়া গ্রামের মৃত দেলোয়ার হোসেনের ছেলে। 

মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা.

হাবিবে মিল্লাত মুন্না, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন, সিরাজগঞ্জ পৌরসভার মেয়র সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম শফি, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বদরুল আলম, অর্থবিষয়ক সম্পাদক আজিজল তালুকদার, সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল হাকিম ও সয়দাবাদ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নবীদুল ইসলাম। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বিএনপি কর্মী জাহাঙ্গীর হোসেনের সাথে আসামিদের রাজনৈতিক ও সামাজিক দ্বন্দ্ব ছিল। 

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বদরুল আলম ও সয়দাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইদুল ইসলাম রাজা বিএনপি কর্মী জাহাঙ্গীর হোসেনের কাছে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তারা জাহাঙ্গীর হোসেনকে মারধর, হত্যা ও গুম করার পরিকল্পনা করতে থাকেন। এ অবস্থায় ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে জাহাঙ্গীর হোসেনকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান আসামিরা। ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি ইউপি চেয়ারম্যান নবীদুল ইসলাম বাদীকে ফোন করে জাহাঙ্গীরকে অপহরণের কথা জানান এবং তার মুক্তিপণ হিসেবে ১৫ লাখ টাকা দাবি করেন। 

এক সপ্তাহ পর ৭ ও ৯ ফেব্রুয়ারি দুই দফায় নবীদুল ইসলামকে ১০ লাখ টাকা দেন বাদী। এরপরও জাহাঙ্গীরকে মুক্ত করে দেওয়া হয়নি। ২০১৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি কামারখন্দ উপজেলার ঝাঐল ওভারব্রিজের নিচে জাহাঙ্গীরের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় একইদিন ঝাঐল ইউপির দফাদার শচীন চন্দ্র দাস বাদী হয়ে কামারখন্দ থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। 

পুলিশি তদন্ত শেষে আসামি শনাক্ত না করেই আদালতে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। ঘটনার পরই বাদী মামলা দায়ের করতে চাইলে আসামিরা তাকেও হত্যার হুমকি দেওয়ায় ওই সময় মামলা দায়ের করতে পারেননি বলে এজাহারে উল্লেখ করেছেন বাদী।

ঢাকা/রাসেল/ইমন

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ ল ইসল ম স র জগঞ জ দ য় র কর কর ছ ন আওয় ম ব এনপ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

মানুষ চিন্তা করতে পারেনি, তারা মনের কথা নির্বিঘ্নে প্রকাশ করতে পারবে: জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘আমাদের সন্তানেরা জীবন বাজি রেখে রাস্তায় নেমেছিল, আমরাও তাদের সঙ্গে ছিলাম। তারা ফ্যাসিবাদকে বিদায় করেছে। এক বছর আগেও মানুষ চিন্তা করতে পারেনি যে তারা মনের কথা নির্বিঘ্নে প্রকাশ করতে পারবে। কিন্তু আজ সারা দেশের জনগণ নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনই সর্বময় ক্ষমতার মালিক। তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা দেন এবং ইচ্ছেমতো কেড়েও নেন। তা আমরা জুলাই বিপ্লবে সরাসরি প্রত্যক্ষ করেছি।’

আজ সোমবার সন্ধ্যায় খুলনার খানজাহান আলী থানা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত ‘সহযোগী সদস্য সংগ্রহ অভিযান-২০২৫’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মিয়া গোলাম পরওয়ার এ কথাগুলো বলেন।

২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের সংসদ নির্বাচন নিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘২০১৪ সালে তারা ষড়যন্ত্র করে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন করেছিল। কেউ নির্বাচনে যায়নি। ২০১৮ সালের নির্বাচন ছিল ইতিহাসের আরেক কালো অধ্যায়। যেখানে রাতেই ভোট হয়ে গিয়েছিল। আর এসব নির্বাচনে হাসিনাকে সঙ্গ দিয়েছে জাতীয় পার্টি। আমরা একটা কালো যুগ পার করেছি। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার মানুষের সব অধিকার হরণ করেছিল। মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি। মানুষকে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে দেয়নি। তারা মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে দেয়নি।’ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘যারা হাত-পা হারিয়েছে, যারা নির্যাতিত হয়েছে, তারা কখনোই এসব খুনিকে ক্ষমা করবে না। খুনিদের বিচার করতে হবে এবং সব স্তরে সংস্কার করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে, যেখানে কালোটাকা ও পেশিশক্তির প্রভাব থাকবে না। নির্বাচন জনগণের অধিকার। জনগণই তাঁদের পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন। যাঁরা নির্বাচনে কালোটাকা ও পেশিশক্তির ব্যবহার করতে চাইবেন, জনগণ তাঁদের প্রতিহত করবেন।’

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতার দম্ভে মানুষের ওপর লাগামহীন জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিক ও আদর্শিকভাবে মোকাবিলা না করে হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, জেল-জুলম, গুপ্তহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। তারা মনে করেছিল যে তাদের এমন অপশাসন ও দুঃশাসন কিয়ামত পর্যন্ত স্থায়ী হবে। কিন্তু আল্লাহ জালিমদের ছাড় দিলেও ছেড়ে দেন না।’

ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের প্রসঙ্গে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে ন্যায়বিচার থাকবে, বেকারত্ব ও চাঁদাবাজি থাকবে না। যেখানে মা-বোনেরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে না। আমরা সাম্যের ও মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চাই।’

খানজাহান আলী থানা জামায়াতের আমির সৈয়দ হাসান মাহমুদের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি গাজী মোর্শেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মিয়া গোলাম কুদ্দুস ও বায়তুল মাল সেক্রেটারি হাফেজ আমিনুল ইসলাম। গণসংযোগের সময় স্থানীয় মার্কেটের ব্যবসায়ী, পথচারী, স্থানীয় বাসিন্দা, গাড়িচালকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে দাওয়াত দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ২ মে ঢাকায় এনসিপির বিক্ষোভ, প্রচারপত্রে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ৭ অপরাধ
  • মানুষ চিন্তা করতে পারেনি, তারা মনের কথা নির্বিঘ্নে প্রকাশ করতে পারবে: জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল