গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় তার দলের এক কর্মীর ওপর হামলা চালানো হয়ে দাবি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছে। সেখানে তিনি, তার দলের কর্মীকে টুঙ্গিপাড়া পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক গোলাম কিবরিয়া সাগর ও পৌর যুবদলের সভাপতি তাইজুল শেখ নেতৃত্বে ৩০-৪০ জন মারধর করেছেন বলে অভিযোগ তোলেন। তবে এ অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করেছে বিএনপি। আজ বুধবার দুপুরে টুঙ্গিপাড়ার পাটগাতী বাজারের পৌর বিএনপির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন মারধরের অভিযোগের প্রতিবাদ জানান বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা। 

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য উপস্থাপন করেন টুঙ্গিপাড়া পৌর বিএনপির সদস্য সচিব এমদাদ মোল্লা। তিনি বলেন, টুঙ্গিপাড়া গণঅধিকার পরিষদের কর্মী দাবি করা সাকিব শেখ এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের নেতৃত্ব দেন। টুঙ্গিপাড়ায় তিনি একজন ছিনতাইকারী, চুরি, চাঁদাবাজ ও মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। তিনি বিভিন্ন সময় আমাদের দলেও আসতে চেয়েছিল কিন্তু তাকে আমরা নেইনি। তাকে আওয়ামী লীগের সঙ্গেও দেখা গেছে। আর এখন তাকে গণঅধিকারের কর্মী বলা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ‘তাকে মারধরের বিষয় বিএনপি বা সহযোগী সংগঠনের নেতারা কিছু জানেন না। যখন তাকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে তখন টুঙ্গিপাড়া পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাগর শেখ ইউএনও অফিসে ছিলেন। পরে খোঁজ নিয়ে জেনেছি, মাদক ব্যবসা নিয়ে ঝামেলার কারণে সাকিবকে কে বা কারা মারধর করেছে। তাই টুঙ্গিপাড়া বিএনপির সহযোগী সংগঠনের নেতাদের জড়িয়ে সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর তার ফেসবুকে যে স্ট্যাটাস দিয়েছেন তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’ 

সংবাদ সম্মেলনে টুঙ্গিপাড়া পৌর বিএনপির আহ্বায়ক জিহাদুল ইসলাম বাবু, ডুমুরিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শেখ সিরাজুল ইসলাম, পাটগাতী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন মোল্লা, টুঙ্গিপাড়া পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক গোলাম কিবরিয়া সাগর, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক ডা.

আবু জাফর খান, ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইসমাইল খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য গত ২৭ জানুয়ারি রাতে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে লেখেন, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানীর ছোট ভাই টুঙ্গিপাড়া পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক গোলাম কিবরিয়া সাগর ও পৌর যুবদলের সভাপতি তাইজুল শেখ নেতৃত্বে ৩০-৪০ জন গণঅধিকার পরিষদের কর্মী সাকিব শেখকে (২৪) পিটিয়ে জখম ও আহত করে ডাস্টবিনের কাছে ফেলে যান।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ প লগঞ জ ব এনপ ম রধর ব এনপ র স র কর ম ম রধর

এছাড়াও পড়ুন:

গলাচিপায় ভিপি নুরকে অবরুদ্ধ করার অভিযোগ 

পটুয়াখালীর গলাচিপায় বিএনপির নেতাকর্মীরা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরকে (ভিপি নুর) অবরুদ্ধ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) রাত ১০টার দিকে গলাচিপা উপজেলার পাতাবুনিয়া বটতলা বাজারে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। রাত ১টার দিকে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ওই বাজারে গিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে থাকা গণঅধিকার পরিষদ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। 

অন্যদিকে, চর বিশ্বাস বাজারে সরকারি চান্দিনা ভিটির ডিসিআর (ডুপ্লিকেট কার্বন রিসিপ্ট বা ভূমি কর ব্যতিত অন্যান্য সরকারি পাওনা আদায়ের রশিদ) পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সম্পাদকের অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে ভিপি নুরের ভাই আমীনুল ইসলামসহ দুই পক্ষের ১০ জন আহত হন। পরে চর বিশ্বাস বাজারে ইউনিয়ন বিএনপির অফিস ভাঙচুর করেন গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা। 

নুরুল হক নুরের ছোট ভাই আমীনুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, বাজারে দুই শতাধিক দোকান আছে। ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বাকের বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান প্রতিটি দোকান থেকে ৩০ হাজার টাকা করে দাবি করেন ডিসিআর পাইয়ে দেওয়ার নামে, যা সরকারের নির্ধারিত ফি’র চেয়ে অনেক বেশি। অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীরা নুরুল হক নুরের সহযোগিতা চান। গত ১০ জুন নুর এলাকায় গেলে বিষয়টি নিয়ে দোকানিরা অভিযোগ করেন। তিনি তাদের অতিরিক্ত টাকা না দিতে বলেন এবং প্রশাসনের মাধ্যমে ডিসিআর পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন। এরপর থেকেই স্থানীয় বিএনপির নেতাদের সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের সম্পর্ক উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

অভিযোগ অস্বীকার করে চর বিশ্বাস ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান বলেছেন, “আমরা কর্মীসভা করছিলাম। সে সময় ভিপি নুরের ভাই আমীনুল ও তার লোকজন এসে আলোচনা বন্ধ করতে বলেন। আমরা আলোচনা বন্ধ করলেও অকারণে তারা আমাদের ওপর চড়াও হন এবং চেয়ার ছুড়ে মারেন। এতে আমাদের ৮–১০ জন নেতাকর্মী আহত হন। আমরা কারো কাছ থেকে টাকা নিইনি। ভিপি নুরের শ্যালক এনিম আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে মিলে টাকা তুলেছেন। এখন এর দায় আমাদের ওপর চাপানো হচ্ছে।”

নুরুল হক নুর বলেছেন, “আমি নেতাকর্মীদের নিয়ে পাতাবুনিয়া বাজারের বাদল মেম্বারের স্মরণসভায় গিয়েছিলাম। রাত পৌনে ১০টার দিকে সেই স্মরণসভা শেষে গলাচিপা বাজারে ফেরার পথে শুনতে পাই, বিএনপির নেতাকর্মীরা গাছের গুড়ি এবং দেশীয় অস্ত্র হাতে নিয়ে সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন। পরে আমাদের কয়েকজন কর্মী সেখানে বিষয়টি দেখার জন্য গেলে বিএনপি নেতা হাসান মামুনের অনুসারীরা একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেন এবং কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। এছাড়া, দশমিনার কয়েকটি অফিস তারা ভাঙচুর করেন। হাসান মামুনের সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ নেই। আমরা যখনই গণসংযোগ করি, তখনই বিএনপির নেতাকর্মীরা আমাদের নেতাকর্মীদের হুমকি দেন। আমাদের সঙ্গে ৫০০ থেকে ৭০০ নেতাকর্মী ছিলেন। আমরা এ ঘটনা মোকাবিলা করতে পারতাম। কিন্তু, এলাকায় অনাকাঙ্ক্ষিত উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্ট হোক, সেটা আমরা চাইনি।”

সার্বিক বিষয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন বিএনপি নেতা হাসান মামুন। সেখানে তিনি লিখেছেন, আওয়ামী লীগ নেতারা গণঅধিকারের ঘাড়ে পা দিয়ে বিএনপি অফিস ভাঙচুর করেছেন। হামলাকারী ও হামলার নির্দেশদাতাদের গ্রেপ্তার করতে হবে। 

পরে কয়েকটি পোস্টে তিনি ভিপি নুরকে উদ্ধারের জন্য সেনাবাহিনী ও পুলিশকে ধন্যবাদ জানান। এছাড়া, তিনি বিএনপি নেতাদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান।

গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসাদুজ্জামান বলেছেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।

ঢাকা/ইমরান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভিপি নুরের বিরুদ্ধে ছাত্রদলের বিক্ষোভ
  • গলাচিপা ও দশমিনায় ১৪৪ ধারার আদেশ অব্যাহত
  • পটুয়াখালীতে বিএনপি-জিওপির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি, ১৪৪ ধারা জারি
  • আশীর্বাদের পরিবর্তে অভিশাপের চিঠি দিয়েছে বিএনপি: ভিপি নুর
  • গলাচিপায় ১৪৪ ধারা জারি
  • গলাচিপায় ভিপি নুরকে অবরুদ্ধ করার অভিযোগ