এক সপ্তাহেও তদন্তে নেই কোনো অগ্রগতি
Published: 30th, January 2025 GMT
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অর্ণব কুমার সরকার হত্যা মামলায় এক সপ্তাহেও তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। অর্ণবের বন্ধু গোলাম রব্বানীকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেননি। সন্দেহভাজন আরও দু’জনকে আটক করা হলেও মেলেনি গুরুত্বপূর্ণ কোনো তথ্য। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ নিহতের পরিবারের সদস্যরা।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অর্ণবকে হত্যার পর ২৪ জানুয়ারি তাঁর বন্ধু গোলাম রব্বানীকে আটক করে পুলিশ। পরদিন তাঁকে এই হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তাঁকে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেননি।
গত বুধবার রাতে সন্দেহভাজন আসামি সোনাডাঙ্গা আদর্শপল্লি এলাকার রমজান শেখ ও মুন্সীপাড়া এলাকার জাহিদুল ইসলাম তুরানকে আটক করে সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ কোনো তথ্য মেলেনি।
গত ২৪ জানুয়ারি রাতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অর্ণব কুমার সরকারকে নগরীর তেঁতুলতলা এলাকায় গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। মামলার তদন্তে বড় কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ নিহতের পরিবারের সদস্যরা। অর্ণবের বাবা নীতিশ সরকার বলেন, আমার ছেলের সঙ্গে কারও কোনো বিরোধ ছিল না। তাকে কী কারণে হত্যা করা
হয়েছে তা আমরা জানি না। পুলিশও কোনো কারণ জানাতে পারেনি।
নিহতের ছোট চাচা সুকুমার সরকার বলেন, অর্ণবকে হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত কেউ এখনও গ্রেপ্তার হয়নি। থানায় যোগাযোগ করলে তারা শুধু বলছে যে, তারা চেষ্টা করছে। কিন্তু কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না। হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রও উদ্ধার হয়নি।
অর্ণবের মা লিপিকা শীল বলেন, এক সপ্তাহ পরও আমরা জানতে পারিনি কেন অর্ণবকে সন্ত্রাসীরা হত্যা করল। এটুকু জানতে পারলেও মনকে সান্ত্বনা দিতে পারতাম। আমরা চাই পুলিশ দ্রুত হত্যার কারণ উদ্ঘাটন ও হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করুক।
এ ব্যাপারে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) শেখ মনিরুজ্জামান মিঠু বলেন, অর্ণবকে হত্যার কারণ সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ঘটনাস্থলের আশপাশের কয়েকটি এলাকার ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে তা পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রেম-সংক্রান্ত বিষয়ে কারও সঙ্গে অর্ণবের বিরোধ ছিল কিনা, তার বাবার ব্যবসা নিয়ে তাঁর সঙ্গে বিরোধ ছিল কিনা তা খুঁজে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া কোনো বন্ধু কিংবা সন্ত্রাসী গ্রুপের সঙ্গে অর্ণবের দ্বন্দ্ব ছিল কিনা তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
রাশিয়ার কাছাকাছি দুটি পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ ট্রাম্পের
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভের ‘অত্যন্ত উস্কানিমূলক’ মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় দুটি পারমাণবিক সাবমেরিন ‘যথাযথ অঞ্চলে মোতায়েন’ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
শুক্রবার (১ আগস্ট) ট্রুথ সোশ্যালে একটি পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, “ওই মন্তব্য় যদি নেহাতই বোকামি ও উস্কানিমূলক বক্তব্য না হয়ে, তার থেকে বেশি কিছু হয়, তাই আমি দুটি পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছি।” খবর বিবিসির।
ট্রাম্প আরো লিখেছেন যে, “শব্দগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। এর প্রভাবও অপ্রত্যাশিত হতে পারে। তবে আশা করি এই বিবৃতি তেমন কিছু ঘটাবে না।”
আরো পড়ুন:
পুতিনকে এবার ১০ দিনের আল্টিমেটাম দিলেন ট্রাম্প
পুতিনকে এবার ১২ দিনের আল্টিমেটাম দিলেন ট্রাম্প
মার্কিন সামরিক প্রোটোকল মেনে দুটি সাবমেরিন কোথায় মোতায়েন করা হচ্ছে, তা তিনি বলেননি।
একদিন আগেই ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে মস্কোকে আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এরপরই প্রতিক্রিয়া দেন মেদভেদেভ।
পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় জানিয়ে শুক্রবার ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, “রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ, যিনি বর্তমানে রাশিয়ান ফেডারেশনের নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান, তার অত্যন্ত উস্কানিমূলক বক্তব্যের ভিত্তিতে, আমি দুটি পারমাণবিক সাবমেরিনকে উপযুক্ত অঞ্চলে মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছি।”
ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট পারমাণবিক চালিত নাকি পারমাণবিক অস্ত্রধারী সাবমেরিনের মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছেন, তা খোলাসা করেননি।
রাশিয়া এবং আমেরিকার কাছে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র আছে এবং উভয় দেশেরই পারমাণবিক সাবমেরিনের বহর রয়েছে।
শুক্রবার পরবর্তীতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্প বলেন, “একটি হুমকি দেওয়া হয়েছিল এবং আমরা এটিকে উপযুক্ত মনে করিনি। তাই আমাকে খুব সতর্ক থাকতে হবে।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, “আমি মার্কিন জনগণের নিরাপত্তার ভিত্তিতে এটি করেছি। রাশিয়ার একজন সাবেক প্রেসিডেন্ট হুমকি দিয়েছিলেন। এবং আমরা আমাদের জনগণকে রক্ষা করব।”
ক্রেমলিন এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো প্রকাশ্য মন্তব্য করেনি, তবে ট্রাম্পের বক্তব্যের পর মস্কোর শেয়ার বাজারে ধস নেমেছে।
সম্প্রতি ট্রাম্প এবং মেদভেদেভ সোশ্যাল মিডিয়ায় একে অপরের বিরুদ্ধে একাধিক ব্যক্তিগত আক্রমণে জড়িয়ে পড়েছেন।
ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার জন্য ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে দুই দফায় নতুন করে সময় বেধে দিয়েছেন, তবে যুদ্ধ থামানোর কোনো লক্ষণ পুতিন এখনও দেখাননি।
মেদভেদেভ- যিনি ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন- এই সপ্তাহের শুরুতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ‘রাশিয়ার সঙ্গে আল্টিমেটাম খেলা’ খেলার অভিযোগ করেছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে মেদভেদেভ বলেছিলেন, “প্রতিটি নতুন আল্টিমেটাম একটি হুমকি এবং যুদ্ধের দিকে একটি পদক্ষেপ।”
এর আগে, তিনি জুলাইয়ের শুরুতে তিনি ট্রাম্পের আল্টিমেটামকে ‘নাটকীয়’ বলে অভিহিত করে বলেছিলেন, “রাশিয়া এসবের পরোয়া করে না।”
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) টেলিগ্রামে একটি পোস্টে মেদভেদেভ ট্রাম্পকে রাশিয়ার ‘ডেড হ্যান্ড’ সম্পর্কে সতর্ক করেন। সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, ‘ডেড হ্যান্ড’ হলো রাশিয়ার প্রতিশোধমূলক পারমাণবিক হামলা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার কোডনাম।
এরপরই শুক্রবার ট্রাম্প মেদভেদেভের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় প্রথমবারের মতো প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি মেদভেদেভকে ‘রাশিয়ার ব্যর্থ সাবেক প্রেসিডেন্ট, নিজেকে এখনো প্রেসিডেন্ট বলে ভাবেন’ বলে কটাক্ষ করেন।
ট্রাম্প মেদভেদেভকে ‘তার কথার দিকে নজর রাখার’ বিষয়ে সতর্কও করে বলেন, “তিনি খুব বিপজ্জনক অঞ্চলে প্রবেশ করছেন!”
মেদভেদেভ ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণাঙ্গ আক্রমণকে সমর্থন করেন এবং পশ্চিমাদের একজন স্পষ্ট সমালোচক।
ঢাকা/ফিরোজ