‘দ্য প্রিন্স ইজ ব্যাক’- সান্তোসে নেইমারের রাজসিক প্রত্যাবর্তন
Published: 1st, February 2025 GMT
ব্রাজিলের ফুটবল রাজপুত্র নেইমার ফিরলেন তার শৈশবের ক্লাবে, সান্তোসে। ক্লাবটি তার প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ‘দ্য প্রিন্স ইজ ব্যাক’ বার্তায় ভেসে যাচ্ছে সান্তোসের স্টেডিয়াম। নেইমারকে বরণ করে নিতে প্রস্তুত ছিল ক্লাব ও সমর্থকরা।
আল হিলালের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের পর নেইমারের সান্তোসে ফেরা কেবল সময়ের অপেক্ষা ছিল। তার জন্য বিশেষ আয়োজনে সাজানো হয় ক্লাবের মাঠ। প্রায় ২০ হাজার সমর্থক স্টেডিয়ামে হাজির হয়েছিলেন তার স্বাগত জানাতে। বাইরেও উপচে পড়া ভিড় ছিল, সবাই এক ঝলক নেইমারকে দেখার জন্য উদগ্রীব।
সান্তোসের ঐতিহ্যবাহী সাদা জার্সি পরে মাঠে প্রবেশ করেন নেইমার। ক্লাব কর্মকর্তারা তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। শৈশবের ক্লাবে ফিরে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি। মাঠে মাথা নত করে প্রিয় ক্লাবের প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং বিখ্যাত গোল উদ্যাপন ভঙ্গিমায় হাতজোড় করে ক্লাবের লোগোতে চুমু খান। একপর্যায়ে চোখের জলও মুছতে দেখা যায় তাকে।
আবেগময় কণ্ঠে নেইমার বলেন, ‘আমি খুবই খুশি। এই ক্লাবে আমার দারুণ কিছু স্মৃতি আছে। এখানে ফিরে আসাটা স্বপ্নের মতো। এখন আমার পরবর্তী লক্ষ্য ব্রাজিল জাতীয় দলে ফেরা ও ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা।’
২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত সান্তোসের হয়ে খেলেছিলেন নেইমার। সে সময় ১১ নম্বর জার্সি গায়ে চাপালেও এবার কিংবদন্তি পেলের ১০ নম্বর জার্সি পরবেন তিনি।
পরবর্তীতে সংবাদ সম্মেলনে সান্তোসে ফেরার সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দিয়ে নেইমার বলেন, ‘কিছু সিদ্ধান্ত থাকে, যা শুধু ফুটবলের জন্য নেওয়া হয় না। আল হিলালে ভালোই ছিলাম, পরিবারও ভালো ছিল। তবে অনুশীলনে নিজেকে সুখী মনে হয়নি। ফিরতে পারার সুযোগ পেয়ে আর দ্বিতীয়বার ভাবিনি। এখানে পা রাখার পর থেকেই মনে হচ্ছে, আমি আবার ১৭ বছর বয়সে ফিরে গেছি।’
আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি বোটাফোগোর বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই সান্তোসের হয়ে দ্বিতীয় অধ্যায়ের যাত্রা শুরু করতে পারেন নেইমার।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল বুধবার দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। আজ মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ পরবর্তী ওই দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ১৮ মে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ শুনানির জন্য ১ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন। ধার্য তারিখে বিষয়টি শুনানির জন্য রিভিউ আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ১৫ জুলাই পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। আজ বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদধারীদের পদক্রম ওপরের দিকে রাখা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি জেলা জজদের পদক্রম আট ধাপ উন্নীত করে সচিবদের সমান করা হয়।
আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির পদক্রম এক ধাপ উন্নীত করে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সমান এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করে যে মুক্তিযোদ্ধারা বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন) পদক্রমে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।
ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন। রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পক্ষভুক্ত হন। পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর গত ২৭ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়।
আজ আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। রিট আবেদনকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে অংশ নেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে তা সংশোধন করা হয়।
সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। সংশোধিত এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ, সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমিকে রাখা হয়েছে—এমন উল্লেখ করে এর বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে রিট করেন।
রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (সংশোধিত) অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে করা আবেদনের ওপর শুনানি চলছে।