আল্লাহ শেখ হাসিনার বিচার করেছেন: জামায়াত আমির
Published: 1st, February 2025 GMT
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারককে তো আপনারা কলাপাতায় ঘুমাতে দেখেছেন। তার বিছানার অভাব ছিল না। তার সৎ সাহসের, সততার, মানবতাবোধ, স্বচ্ছতার অভাব ছিল। সুবিচার দেওয়ার অভাব থাকায় তাকে বনে-জঙ্গলে কলাপাতায় ঘুমাতে হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অন্যদিকে সাড়ে ১৫ বছর দারুণভাবে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন একজন। মাঝে মধ্যে তিনি বিনা টিকিট ও ভিসায় আমাদের বিদেশে পাঠিয়ে দিতেন। আল্লাহ তার বিচার করেছেন। তারা আমাদের জন্য যা পছন্দ করেছিলেন, আল্লাহ তাদের জন্য তাই পছন্দ করেছেন। এখন তাদের অনেকে বিনা ভিসা ও টিকেটে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
শনিবার দুপুরে সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে সুনামগঞ্জ জেলা জামায়াতের কর্মীসভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
জামায়াতের আমির বলেন, জাতির নেতৃত্বের জায়গায় যারা থাকেন, তাদের সুনির্দিষ্ট কমিটমেন্ট, মিশন ও ভিশন থাকতে হবে। রাজনীতিতে ধোঁকাবাজি ও মিথ্যাচার দেখতে দেখতে দেশের জনগণ এখন ক্লান্ত-বিরক্ত। ধোঁকাবাজদের দিয়ে রাজনীতির আমূল পরিবর্তন সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, আমরা গুম-খুনের বিচার এজন্য আগে চাই ভবিষ্যতে যাতে এভাবে কেউ মানবাধিকার লঙ্ঘন করতে না পারে। সেটি নিশ্চিত করার জন্য এর বিচার হওয়া জরুরি।
জেলা জামায়েতের সেক্রেটারি অধ্যাপক আব্দুল্লাহ ও সাবেক ছাত্রশিবির নেতা রেজাউল করিম রেজার সঞ্চালনায় কর্মী সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সুনামগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমির তোফায়েল আহমদ খান।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়েতের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, সিলেট মহানগর জামায়েতের আমির ফখরুল ইসলাম, সিলেট জেলা জামায়েতের আমির মাওলানা হাবিবুর রহমানসহ কেন্দ্রীয়, সিলেট বিভাগীয় ও সুনামগঞ্জ জেলার নেতৃবৃন্দ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন
প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।
জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।
অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।
কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।
সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।