২৩ হত্যাকাণ্ডের কোনোটিই সাম্প্রদায়িক নয়: প্রেস সচিব
Published: 3rd, February 2025 GMT
জুলাই অভ্যুত্থানের পর সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ২৩টি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের দাবিকে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ দাবি করে প্রেস উইং।
গত বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করে, গত সাড়ে চার মাসে দেশে গ্রামীণ পর্যায়ে ১৭৪টি সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এ সময়ে ২৩টি সাম্প্রদায়িক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
এ প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সচিব আজাদ মজুমদার বলেন, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের এই দাবিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নেয়। ওই তালিকা প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পুলিশের কাছে পাঠিয়ে প্রতিটি ঘটনার প্রকৃত কারণ ও গৃহীত আইনি ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে প্রতিটি ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানায়। ২৩টি ঘটনার ২২টির প্রাথমিক কারণ সম্পর্কে পুলিশ অবগত হয়েছে এবং যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তবে একটি ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। একটি ঘটনার সঙ্গেও সাম্প্রদায়িক সহিংসতার কোনো সম্পর্ক নেই।
প্রেস উইং দাবি করে- হত্যাকাণ্ডের মধ্যে সর্বোচ্চ সাতটির সঙ্গে চুরি ও দস্যুতার সম্পর্ক রয়েছে, চারটিতে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কলহের ঘটনা জড়িত, তিনটি ক্ষেত্রে জেনারেল ক্রাইম যেমন ধর্ষণ, অতিরিক্ত মদ্যপানে মৃত্যু এবং বিদ্রুপ মন্তব্য করা নিয়ে দুই পক্ষের মারামারি থেকে মৃত্যু, দুটি দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু, দুটি ব্যবসায়িক শত্রুতার জেরে মৃত্যু, একটিতে স্থানীয়দের সংঘাতে মৃত্যু, একটি জমিজমার বিরোধ সংক্রান্ত ঘটনায় মৃত্যু, একটি আত্মহত্যার ঘটনা এবং একটি মৃত্যুর প্রকৃত কারণ এখনো না জানা গেলেও এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে যে সেখানে কোনো সাম্প্রদায়িক সংঘাতের বিষয় নেই।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়- ওই তালিকায় এমন ব্যক্তিও রয়েছেন যিনি গত বছরের জানুয়ারি মাসে একটি ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ডিসেম্বরে হাসপাতালে মারা যান। আত্মহত্যা ও পানিতে ডুবে মৃত্যুর দুটি ঘটনায় পুলিশ ইতোমধ্যে তদন্ত শেষে চূড়ান্ত প্রতিবেদনও দিয়েছে। এসব ঘটনায় ৪৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং গ্রেপ্তারদের মধ্যে ১৭ জন নিজেদের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বাকি ১৭৪টি সহিংসতার ঘটনারও তদন্ত চলছে।
এ প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকে আরো দায়িত্বশীলভাবে সংবাদ প্রচারের আহ্বান জানান প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ফ্যাক্ট চেকিং করে সাংবাদিকতা করলে জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। সাংবাদিকতারও মান বাড়ে। ফ্যাক্ট চেকিং না করে মিয়ানমারে সংবাদ প্রকাশের কারণে আজ ১০ লাখ রোহিঙ্গার ভার বাংলাদেশকে বহন করতে হচ্ছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩৫ কিলোমিটারজুটে যানজট
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার নিমশার থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কিলোমিটারজুড়ে যানজট দেখা দিয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও চালকেরা। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি কাভার্ড ভ্যান উল্টে যাওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার ভোর থেকে এ যানজট দেখা দেয়।
হাইওয়ে পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার ভোরে মহাসড়কে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার নূরীতলা এলাকায় একটি কাভার্ড ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। ফেনী থেকে রেকার এনে কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধারের কাজ শুরু করে পুলিশ।
সকাল সাড়ে ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মহাসড়কে যানজট দেখা গেছে।
ঢাকাগামী রয়েল পরিবহনের চালক রমিজ উদ্দিন বলেন, সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা করে বুড়িচংয়ের নিমশার বাজারে যানজটে এক ঘণ্টা বসে থাকতে হয়েছে। ৫ মিনিট গাড়ি চললে ২০ মিনিট বসে থাকতে হয়। এভাবে ১০টা ৪০ মিনিটে চান্দিনায় পৌঁছেছি। এ সময়ে ঢাকার কাছাকাছি থাকার কথা ছিল।
নিমশার বাজারে আটকে থাকা প্রাইভেট কারের যাত্রী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ভোর থেকে যানজট অথচ সড়কে হাইওয়ে পুলিশ দেখছি না।
ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রুহুল আমিন বলেন, মহাসড়কের নূরীতলা এলাকায় উল্টে কাভার্ড ভ্যানটি আড়াআড়িভাবে পড়ে ছিল। পরে ঢাকামুখী লেনের বেশ কিছু গাড়ি উল্টো পথে ঢোকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ফেনী থেকে ক্রেন এনে গাড়িটি উদ্ধার করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।
হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিওনের পুলিশ সুপার অতিরিক্ত ডিআইজি মো. খাইরুল আলম সমকালকে বলেন, দুর্ঘটনার কারণেই যানজট দেখা দিয়েছে। দুর্ঘটনা কবলিত কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধার করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক হচ্ছে।