কক্সবাজারে পর্যটকদের ঢল, উৎসবের আমেজ
Published: 7th, February 2025 GMT
শীত বিদায়ের আগে সমুদ্রের ঢেউ আর সূর্যাস্তের অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ ছুটে এসেছেন কক্সবাজারে। সপ্তাহিক ছুটির দিনে লাবণি, কলাতলী ও সুগন্ধা পয়েন্ট পরিণত হয়েছে পর্যটকদের মিলনমেলায়। সৈকতের বালুচরে গাঁ ভাসিয়ে, গলা সমান পানিতে সাগরের উত্তাল ঢেউ উপভোগ করে কিংবা বিচ বাইক ও ঘোড়ায় চড়ে আনন্দে মেতে উঠেছেন ভ্রমণপ্রেমীরা।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকেই সৈকতের প্রধান তিনটি পয়েন্টে দেখা যায় উপচে পড়া ভিড়। কেউ সমুদ্রের নোনাজলে ডুব দিয়ে হারিয়ে যাচ্ছেন প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে, কেউবা বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে বসে ছবি তুলে ধরে রাখতে চাইছেন স্মৃতির পাতায়। বিচ বাইক, ওয়াটার বাইক আর ঘোড়ার পিঠে চড়ে উত্তেজনার রোমাঞ্চ উপভোগ করছেন তরুণরা। শিশুদের কোলাহল, ঢেউয়ের গর্জন আর পর্যটকদের হাস্যরসে মুখরিত হয়ে উঠেছে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত।
সুনামগঞ্জ থেকে আসা তৌফিক হাসান বলেন, “প্রথমবারের মতো পরিবার নিয়ে কক্সবাজার এসেছি। সৈকতের এমন মনোমুগ্ধকর পরিবেশ দেখে সত্যিই মুগ্ধ। কক্সবাজারের সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে অবশ্যই এখানে আসতে হবে।”
আরো পড়ুন:
সেন্টমার্টিনে পর্যটক বন্ধের সিদ্ধান্তে ব্যবসায়ীদের হতাশা
সাজেকে গাড়ি উল্টে ৬ পর্যটক আহত
নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমনা পারভীন বলেন, “আমি ও আমার বন্ধুরা প্রতিবছর কক্সবাজারে ঘুরতে আসি। শীতের আমেজে সৈকতের ভিড় দেখে আমাদের খুব ভালো লাগে। বিচ বাইকে চড়ার অভিজ্ঞতাটা দারুণ ছিল। যানজট ও ব্যস্ততার শহর ভুলে এখানে এসে একেবারে ফ্রেশ লাগছে।”
শেরপুরের ব্যবসায়ী মোস্তফা কামাল বলেন, “সাগরের ঢেউয়ে গা ভাসানোর অনুভূতি সবসময়ই অন্যরকম। আমি জীবনে পরিবার নিয়ে অনেকবার কক্সবাজার এসেছি, কিন্তু প্রতিবারই নতুন কিছু পাওয়ার অনুভূতি হয়। সৈকত ছাড়াও পাহাড় এবং দীর্ঘ মেরিনড্রাইভের সৌন্দর্য উপভোগ করেছি।”
গলা সমান পানিতে সাগরের উত্তাল ঢেউ উপভোগ করছেন ভ্রমণপ্রেমীরা
এদিকে, আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বিচকর্মী, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও লাইফগার্ড সদস্যরা দিনভর সৈকতে কাজ করছেন। তারা পর্যটকদের সুবিধার্থে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
বিচকর্মীদের সহকারী সুপারভাইজার বেলাল হোসেন ও আবুল কালাম বলেন, “দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে রাতদিন দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। কোনো পর্যটক হয়রানি হচ্ছে কি-না এবং গভীর পানিতে যাতে না নামেন সে ব্যাপারে খেয়াল রাখি। পর্যটকের সন্তুষ্টিই আমাদের লক্ষ্য।”
এদিকে, পর্যটকের এই বাড়তি ভিড়ে খুশি পর্যটন ব্যবসায়ীরা। হোটেল-মোটেল, রেস্টুরেন্ট ও সমুদ্রসৈকত সংলগ্ন দোকানগুলোতে দেখা গেছে বাড়তি ব্যস্ততা।
হোটেল-মোটেল গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার বলেন, “আশা করছি বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেও এই পর্যটনপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে, যা কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পকে আরো সমৃদ্ধ করবে।”
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (পর্যটন সেল) মো.
ঢাকা/তারেকুর/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপক ল স কত র ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
কানে ‘আলী’, দায়িত্ব নিলো সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়
বিশ্ব চলচ্চিত্রের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ আসর কান চলচ্চিত্র উৎসবের ৭৮তম আসরে আনুষ্ঠানিকভাবে জড়িয়ে গেল বাংলাদেশের নাম। উৎসবের স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা বিভাগে লড়তে যাচ্ছে দেশের সিনেমা ‘আলী’।
কানের অফিসিয়াল সিলেকশনের স্বল্পদৈর্ঘ্য বিভাগে দেশের কোনো সিনেমার তালিকাবদ্ধ হওয়া এটাই প্রথম। পৃথিবীর বিভিন্ন সিনেমার সঙ্গে ‘আলী’ লড়বে পাম দ’র বা স্বর্ণপামের জন্য। গত ২৫ এপ্রিল এমনটাই জানিয়েছে কান-কর্তৃপক্ষ।
তবে এবার আরো একটি চমকপ্রদ খবর পেল ‘আলী’ টিম। এই স্বল্পদৈর্ঘ্যর কানের দায়িত্ব নিলো সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়! এমন দুর্দান্ত একটি অর্জনের জন্য ‘আলী’ টিমকে ধন্যবাদ জানান সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। সেই সঙ্গে ‘আলী’র কান যাত্রার জন্য দেন বিশেষ ঘোষণা।
আরো পড়ুন:
‘তাণ্ডব’ করছেন শাকিব খান, সঙ্গী সাবিলা নূর
অতীত জেনে মাধুরীকে বিয়ে করিনি: শ্রীরাম নেনে
তিনি বলেন, “পৃথিবীর অনেক দেশেই, ধরা যাক সাউথ-ইস্ট এশিয়ার একটি দেশ (নাম উল্লেখ করেননি) যাদের একটি শর্ট-ফিল্ম কানের অফিসিয়াল সিলেকশনে আছে, তাদের ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন সেখানে একটি ডেলিগেশন পাঠায়। ডেলিগেশন সেখানে সিনেমার টিমের জন্য লাঞ্চ, ডিনার বা অন্যান্য পার্টি হোস্ট করে। কিন্তু আমরা এই কাজগুলো তেমন একটা করতে পারিনি। এখন থেকে এটা শুরু করতে চাই। আলী’কে দিয়েই এটা শুরু হল।”
এরপর ফারুকী বলেন, “কান উৎসবে ‘আলী’ টিমের থাকা-খাওয়া, যাওয়া-আসার ব্যবস্থা করবে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। সেইসঙ্গে এই সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্র আল আমিনের প্যারিস যাওয়ার এয়ার টিকিটের ব্যবস্থা করা হবে বেসরকারি উদ্যোগে।”
খানিকটা ব্যাখ্যা করে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, “কানের প্রধান প্রতিযোগিতায় ‘আলী’ নির্বাচিত হয়েছে বলেই যে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এই উদ্যোগ নিচ্ছে তা নয়। আমরা মনে করি যে, বাংলাদেশের সংস্কৃতি সেটি যে ফিল্ডেই হোক, আমাদের ইমেজ নির্ভর করে এমন যেকোনো বিষয়ে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় পাশে থাকবে। শুধু সিনেমা, গান, নাচ, থিয়েটার নয়, স্থাপত্যেও কেউ যদি দারুণ কিছু অর্জন করে সেখানেও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় পাশে থাকবে।”
‘আলী’ সিনেমার নির্মাতা স্বভাবতই এই ঘোষণায় দারুণ খুশি। এ বিষয়ে আদনান আল রাজিব বলেন, “সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের এমন উদ্যোগের জন্য আমি অশেষ ধন্যবাদ জানাই।”
বলা প্রয়োজন, স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন আদনান আল রাজীব। এর প্রযোজনায় আছেন দেশের তানভীর হোসেন এবং ফিলিপাইনের ক্রিস্টিন ডি লিওন। সিনেমাটির লাইন প্রোডাকশন কোম্পানি বাংলাদেশের রানআউট ফিল্মস।
ভূ-মধ্যসাগরের তীরে দক্ষিণ ফরাসি উপকূলে ১৩ মে এবারের কান চলচ্চিত্র উৎসব শুরু হবে, চলবে ২৪ মে পর্যন্ত।
বলা দরকার, এর আগে কান চলচ্চিত্র উৎসবের প্রতিযোগিতা বিভাগে স্থান পেয়েছিল বাংলাদেশের পূর্ণদৈর্ঘ্য ‘মাটির ময়না’ ও ‘রেহানা মরিয়ম নূর’।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত