বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য (ভিসি) এবং উপ-উপাচার্য (প্রো-ভিসি) পাল্টাপাল্টি অবস্থান নিয়েছেন। একাডেমিক অগ্রগতি নিয়ে সভা করতে বৃহস্পতিবার বিভাগীয় চেয়ারম্যানদের একটি চিঠি দেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী। তবে উপাচার্য অধ্যাপক শূচিতা শরমিন ওই আহ্বানে সাড়া না দিতে বিভাগীয় চেয়ারম্যানদের পাল্টা চিঠি দিয়েছেন। 

অধ্যাপক গোলাম রাব্বানীর নোটিশে বলা হয়, আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টায় উপ-উপাচার্যের দপ্তরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক অগ্রগতি নিয়ে একটি সভা হবে। এতে সব বিভাগের চেয়ারম্যানদের উপস্থিত থাকার আহ্বান জানানো হয়। 

তবে এরপর উপাচার্যের পক্ষে সব বিভাগের চেয়ারম্যানদের পাল্টা চিঠি দেন রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম। এতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক নির্বাহী কর্মকর্তা উপাচার্য। তাঁর নির্দেশ ও অনুমোদন ছাড়া দপ্তরপ্রধান, কর্মকর্তা বা অন্য কেউ শিক্ষক/কর্মকর্তা/কর্মচারীর উদ্দেশে কোনো পত্র পাঠাতে পারেন না। সঙ্গত কারণে উপ-উপাচার্যের পত্রটি নিয়মবহির্ভূত। চিঠিটি কোনো শিক্ষককে আমলে না নেওয়ার জন্য উপাচার্যের নিদেশে অনুরোধ করা হলো।

রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, আমি উপাচার্যের সচিব। উপাচার্য যেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন সেভাবেই  চিঠি দিয়েছি। 

এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য গোলাম রাব্বানী সাংবাদিকদের বলেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ১১ (ক) এর ২ নম্বর ধারা অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক দায়িত্ব পালন করবেন উপ-উপাচার্য। তবে তিনি যোগ দিয়ে গত ৩ মাসে মৌখিক ও লিখিতভাবে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য উপাচার্যকে অনুরোধ জানালেও তা করা হয়নি। এ পরিস্থিতিতে একাডেমিক কার্যক্রম দেখভাল এবং দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবে বিভাগীয় চেয়ারম্যানদের সঙ্গে সভা আহ্বান করেন। এর পাল্টা চিঠি বিব্রতকর।  

এ বিষয়ে জানতে উপাচার্য শূচিতা শরমিনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপ চ র য উপ উপ চ র য উপ চ র য র

এছাড়াও পড়ুন:

পুরো নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনই বাতিলের চক্রান্ত কেন

যুক্তিতর্কের বালাই না রেখে পুরো নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনই কেন বাতিল করার চক্রান্ত করা হচ্ছে, সে প্রশ্ন তুলেছেন বিভিন্ন পেশার ২২ জন গুরুত্বপূর্ণ নারী। আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, যার যার যে প্রস্তাবে আপত্তি আছে, সে প্রস্তাব নিয়ে তর্কবিতর্ক দেশের গণতন্ত্রায়ণের জন্য জরুরিও বটে।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, গবেষক ও মানবাধিকারকর্মী হানা শামস আহমেদ, নৃবিজ্ঞানী নাসরিন সিরাজ, সাংবাদিক সাদিয়া গুলরুখ, মানবাধিকার আইনজীবী তাবাস্‌সুম মেহেনাজ ও ইশরাত জাহান, শিক্ষক ও সংস্কৃতিকর্মী লায়েকা বশীর, গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলন সংগঠক সুলতানা বেগম, পরিবেশ আন্দোলনকর্মী সৈয়দা রত্না, থিয়েটারকর্মী নাজিফা তাসনিম খানম তিশাসহ অধিকারকর্মী, আইনজীবী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশায় থাকা ২২ নারী।

বিবৃতিতে এই নারীরা বলেন, ‘নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন নারীবান্ধব প্রস্তাব পেশ করবে, সেটিই প্রত্যাশা এবং সেটিই উচিত। একটি কমিশনের সব প্রস্তাব সবার কাছে সমানভাবে গ্রহণযোগ্য হবে, এমন ভাবার কোনো কারণ নেই। যার যার যে প্রস্তাবে আপত্তি আছে, সে প্রস্তাব নিয়ে তর্কবিতর্ক দেশের গণতন্ত্রায়ণের জন্য জরুরিও বটে। কিন্তু আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি, কেবল নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয় এলেই একদল যেন দিগ্বিদিকজ্ঞানশূন্য হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে।’

বিবৃতিতে প্রশ্ন রেখে বলা হয়, ‘নারী অধিকার প্রতিষ্ঠিত হলে কি তাদের খুব অসুবিধা হবে? তারা কি এই সমাজের বাইরে? যুক্তিতর্কের বালাই না রেখে তারা পুরো কমিশন বাতিল করতে চায়। এই হীন চক্রান্ত কেন?’

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা বলেন, নারীকে হেয়প্রতিপন্ন করার মাধ্যমে নারীর প্রতি তারা যে আজন্ম ঘৃণা, হিংস্রতা ও নিপীড়নের মনোভাব লালন করে; সেটি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তাদের বক্তব্যে নারীদের নোংরাভাবে উপস্থাপন করে তারা নিজেদের ব্যক্তিগত চিন্তা, চেতনা ও রাজনৈতিক সংকীর্ণতাও প্রকাশ করছে।

বিবৃতিতে বিস্ময় প্রকাশ করে বলা হয়, নারীর প্রতি এই অসম্মান নিয়েই এরা রাষ্ট্র পরিচালনার স্বপ্নও দেখে। দেশের ৫১ শতাংশ নারীকে বাদ দিয়ে অথবা পদদলিত করে সরকার গঠনের দিবাস্বপ্ন কতটা অমূলক, সেটি বোঝার বোধবুদ্ধি পর্যন্ত তারা হারিয়েছে।

আরও পড়ুননারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন ও প্রতিবেদন বাতিলের দাবি১ ঘণ্টা আগে

চিৎকার করে মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হওয়া যায় না উল্লেখ করে বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা বলেন, সৎসাহস থাকলে নারী কমিশনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে কোথায়, কেন তাদের আপত্তি; সেটি নিয়ে তারা কথা বলতে পারে। রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারণ কোনো ছেলের হাতের মোয়া নয় যে কেউ অন্যায়ভাবে হুংকার দেবে আর ভয় পেয়ে পুরো কমিশন বাদ দিয়ে দিতে হবে।

বিবৃতিতে দাবি করা হয়, চরমপন্থী হুমকির মুখেও নারীর অধিকার সংশোধন কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে—রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জনসমক্ষে এ মর্মে ঘোষণা দিতে হবে।

এ ছাড়া ঘৃণা ও হুমকি উসকে দেওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা বলেন, ‘নারী কমিশনের প্রত্যেক সদস্য দীর্ঘদিন ধরে দেশের সাধারণ নারীদের এগিয়ে নিয়ে যেতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। নেতৃস্থানীয় নারীদের অশালীন বাক্যে গালমন্দ করা আমরা কিছুতেই মেনে নেব না।’

আরও পড়ুননারীবিষয়ক কমিশন বাতিলসহ সব দাবি না মানলে দেশ অচলের হুঁশিয়ারি হেফাজতের৫ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ