বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) নজরুল ইসলাম আজাদ বলেছেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন এরা কারা, এখানে কি ছাত্রদল ছিল না? সেই আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকায় ছিলো ছাত্রদল। কারণ ছাত্রদল হল বিএনপির ভ্যানগার্ড।

ছাত্রদল বিএনপির অঙ্গ সংগঠন। আর আপনারা জানেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন ও আহত হয়েছেন সবচেয়ে বেশি নিহত হয়েছে আমাদের বিএনপি নেতাকর্মীরা প্রাণ হারিয়েছেন। 

জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক প্রতিযোগিতা সাতগ্রাম ইউনিয়নের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরুষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথাগুলো বলেন। 

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ৩৯নং সাতগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এসময়ে নজরুল ইসলাম আজাদ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। 

তিনি আরও বলেন, আপনি যাবেন এই ১৭টি বছরে আমাদের গণতান্ত্রিক মানুষের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের রূপকার  বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বেই বিগত এই ১৭টি বছর এদেশে আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে।

আর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন হল তারই একটি পার্ট। আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা রেজাল্টটি আমাদের ঘরে আনতে পেরেছি। কিন্তু আন্দোলনটি কিন্তু ১৭ বছর ধরেই চলছে। 

তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে আজাদ বলেন, আমাদের আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। ছাত্রদেরকে অতীত ও বর্তমান সম্পর্কে জানতে হবে। দেশের সঠিক ইতিহাসকে জানতে হবে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান।

স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা কিন্তু শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সঠিক ইতিহাসটিকে মুছে দিতে চেয়েছিল। তারা কি পেরেছে, পারেনি। 

কারণ শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও জিয়াউর পরিবার মানুষের মনে প্রানে রয়েছে। যতই চেষ্টা করেছিলে কিন্তু তা মুছে ফেলতে পারেনি। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের যোগ্য উত্তরসূরী হলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নতুন করে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে নতুন করে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছে। আর খুনি শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। নতুন বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক তারেক রহমান।

সাতগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল মান্নান চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক লুৎফর রহমান আব্দুল, আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মতিউর রহমান মতিন, আড়াইহাজার উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব খোরশেদ আলম ভুইয়া, আড়াইহাজার উপজেলা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মমতাজ বেগম, উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর মমতাজ পারভেজ, সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আকরাম হোসেন সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ রহমান আতাউর মেম্বার, আড়াইহাজার উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক সাদেকুর রহমান সাদেকসহ সাতগ্রাম ইউনিয়নের বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক, অভিভাবক ও ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ছ ত র দল র রহম ন ব এনপ র ছ ত রদল আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

ডেঙ্গুতে জুনের চেয়ে জুলাইয়ে মৃত্যু ও সংক্রমণ দ্বিগুণ

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় এখন প্রায় এমন কোনো এলাকা নেই, যেখানে এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব বা ব্রুটো ইনডেক্স ২০-এর নিচে। এমন অবস্থা চট্টগ্রাম, বরগুনা, কুমিল্লা, কক্সবাজার শহরেরও। এডিস মশার লার্ভা বা শূককীটের ঘনত্ব পরিমাপের স্বীকৃত পদ্ধতি হলো ‘ব্রুটো ইনডেক্স (বিআই)’। এই মানদণ্ডে লার্ভার ঘনত্ব ২০ শতাংশের বেশি হওয়া মানে সেখানে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি হবে।

মশা নিয়ে নিয়মিত জরিপ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার। তাঁর নেতৃত্বে সম্প্রতি গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে।

দেশে এডিস মশা যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে এ মশার কামড়ে হওয়া ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, জুন মাসের তুলনায় ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা জুলাইয়ে (৩০ জুলাই পর্যন্ত) দ্বিগুণের বেশি। আর সংক্রমণের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ।

সংক্রমণ ও মৃত্যু দুই-ই বেশি

গতকাল পর্যন্ত দেশে ২০ হাজার ৭০২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। আর এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৮১ জনের। শুধু জুন মাসে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ছিল ১৯ জনের। আর চলতি মাসে মৃত্যু হয়েছে ৩৯ জনের। জুনে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৫ হাজার ৯৫১ জন। আর এ মাসে ইতিমধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজার ৪০৬ জন। চলতি মাসের সংক্রমণের এ সংখ্যা আগের ছয় মাসের বেশি। জুন থেকে জুলাই মাসে দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১০ হাজার ২৯৬ জন।

চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে যত রোগী আক্রান্ত হয়েছে, এর মধ্যে মাত্র ২১ শতাংশ ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকার। বাকি ৭৯ শতাংশ রোগীই ঢাকার বাইরের। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৮৬ রোগী ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সময় দুজনের মৃত্যু হয়েছে।

এ মাসের শুরুতে ঢাকার বাইরে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি হলেও প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে ঢাকার হাসপাতালগুলোতে রোগী ভর্তি বেড়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত বছরের চেয়ে এবার উত্তর সিটিতে রোগী ভর্তি কম। গত ২৪ ঘণ্টায় যে ৪২ জন রোগী উত্তরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন, আমরা তাঁদের প্রত্যেকের তথ্য নিয়ে দেখেছি, তাঁদের মধ্যে মাত্র ১৮ জন এই সিটির বাসিন্দা। বাকিরা বাইরের।’

মৃত্যু বেশি গতবারের চেয়ে

এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে যে ৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে, তার মধ্যে ৪৬ জন মারা গেছেন ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে। অন্যরা দেশের অন্যত্র মারা গেছেন। গত বছর (২০২৪) এ সময় ডেঙ্গুতে মারা গিয়েছিলেন ৫৬ জন।

ডেঙ্গুতে এবারের মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার পেছনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাফিলতি, স্থানীয় সরকারের সঙ্গে স্বাস্থ্য বিভাগের সমন্বয়হীনতা, পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সরঞ্জামের অভাব এবং ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে সচেতনতামূলক প্রচারের অভাবকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।

জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ বিভাগের লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক হালিমুর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাব নেই। প্রতিটি হাসপাতালকে পরিচালন বাজেট থেকে ব্যয় করতে বলা হয়েছে। মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার কারণ রোগী আসছে অনেক দেরিতে। তখন আর চিকিৎসকের কিছু করার থাকে না।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ডেঙ্গুতে রোগী ও মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার কারণ সরকারের গতানুগতিক কাজ এবং অব্যবস্থাপনা। মানুষের কাছে ডেঙ্গু শনাক্তের সুযোগ পৌঁছায়নি। নীতিনির্ধারণী স্তরে এ নিয়ে কোনো ভাবনা আছে, এমন একেবারেই মনে হয় না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ