যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল রোববার বলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে খুব শিগগির তাঁর দেখা হতে পারে। ট্রাম্পের বিশ্বাস, পুতিন সত্যিই ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ করতে চান।

রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টায় সৌদি আরবের রিয়াদে রাশিয়ার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মার্কিন প্রতিনিধিদলের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও অবশ্য এক সাক্ষাৎকারে এ বৈঠক নিয়ে প্রত্যাশার কথা কম করেই ব্যক্ত করেছেন। সিবিএসকে রুবিও সাক্ষাৎকার দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মাথায় ট্রাম্প সাংবাদিকদের কাছে পুতিনের সঙ্গে দ্রুত দেখা হওয়ার আশা প্রকাশ করেন। ট্রাম্প বলেন, দিন-তারিখ ঠিক হয়নি, তবে খুব শিগগির এটা হতে পারে।

এয়ারফোর্স ওয়ান উড়োজাহাজে বসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে নিযুক্ত মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফসহ তাঁর প্রতিনিধিরা আন্তরিকভাবে আলোচনা করছেন। উইটকফ সম্প্রতি প্রায় তিন ঘণ্টা পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

পুতিন সম্পর্কে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি, তিনি লড়াই বন্ধ করতে চান।’

পুতিন পুরো ইউক্রেনের দখল নিতে চান বলে ট্রাম্প মনে করেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এটা তাঁর কাছে আমারও প্রশ্ন। তিনি যদি এমনটা করেন, তবে আমি অনেক বড় সমস্যার মধ্যে পড়ে যাব। আমি মনে করি, তিনি এর অবসান চান এবং তাঁরা দ্রুতই এটা শেষ করতে চান। তাঁরা দুজনই এটা চান।’

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ইতিমধ্যে গতকাল বলেন, রাশিয়া দুর্বল ন্যাটোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। এ অবস্থায় ন্যাটোকে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন দেওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন।

অবশ্য ট্রাম্প বলেন, ইউক্রেনীয় নেতার বার্তা সম্পর্কে তিনি বিন্দুমাত্র উদ্বিগ্ন নন।

মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের ফাঁকে সিবিএসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের এই শীর্ষ কূটনীতিক বলেন, ‘শান্তিপ্রক্রিয়ার বিষয়টি এক বৈঠকেই হয়ে যাওয়ার মতো কিছু নয়।’

রিয়াদে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে মার্কিন প্রতিনিধিদলকে নেতৃত্ব দেবেন রুবিও। তবে সেখানে ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। রুবিও বলেছেন, মস্কো কাদের পাঠাচ্ছে, সে ব্যাপারেও তিনি নিশ্চিত নন।

কোনো কিছুই এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি বলে উল্লেখ করেছেন রুবিও।

স্টিভ উইটকফ ও যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ওয়াল্টজ—দুজনই আলোচনায় অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

গত বুধবার ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে দীর্ঘ সময় ধরে ফোনালাপ হয়েছে। সেখানে তাঁরা অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি আলোচনা শুরু করতে সম্মত হন।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেনকে ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে, তা মেনে নেবেন না।

গত শনিবার রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে ফোনে রুবিওর কথা হয়েছে। রুবিও বলেন, ‘একটি ফোনালাপ শান্তি প্রতিষ্ঠা করে না।’

গতকাল এনবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেন, পুতিন সারাক্ষণ মিথ্যা কথা বলেন। আলোচনার শরিক হিসেবে তাঁকে বিশ্বাস করা যায় না।

রুবিও বলেন, তিনি মনে করেন, ভূরাজনীতির ক্ষেত্রে কারওরই কাউকে বিশ্বাস করা উচিত নয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ট র ম প বল ন ইউক র ন র

এছাড়াও পড়ুন:

না-দেখা প্রেমের সুন্দরতার মতন

স্বপ্নের রং

বিকালের ঘুম স্বপ্নময়।
স্বপ্নে তোমার সাথে দেখা।
স্বপ্নের রং সবুজ। তারপর হালকা গোলাপি।
তোমার পরনের শাড়ির মতন। সুন্দর।
তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছিল।
তুমি বসে ছিলে। পাশ দিয়ে চলে যাবার সময় আমরা দেখেছিলাম পরস্পর।
তোমাকে ঘেঁষে আমি দাঁড়িয়েছিলাম। তোমাকে দেখছিলাম। না-দেখা প্রেমের সুন্দরতার মতন।
তুমি স্বপ্ন। স্বপ্ন দেখার অনেক সমস্যা।
স্বপ্নের কোনো রং থাকে না।
তোমাকে ভালোবাসবার রং সবুজ ও গোলাপি।

বায়ুর সিংহাসন

তুমিও শিকার। আমি তার লব্ধ কারিগর।
তোমাকে তুলে এনে বাগানে রেখেছি।
প্রাকৃতিক। মায়ের শাল দুধের মতন নতুন।
অভিজ্ঞতাময়। শিহরিত অমূল্য রত্নধন।
আমি সুস্বাস্থ্যে তোমারে চেয়েছি, আপন।
পাই নাই রূপ, নিজের অরূপ কেমনে মেলে ধরি
তুমি এমন কারিগর, নিরুদ্দেশে, আজব শিকারি!
বসে থাকো, অরূপ ছায়া ধরে, ভাণ্ডে-ব্রহ্মাণ্ডে গোপন
নিরাকারে, তোমাকে আমায় দেখি, বায়ুর সিংহাসন।

ঘুম

একা একটা আকাশ মাথা বেয়ে পুকুরে এসে পড়েছিল। আমি দেখিনি! তার তীরে কিছুক্ষণ গল্পগুজব শেষে পাতা দেখছিলাম, গাছ দেখছিলাম। নৈবেদ্যসহ মায়াদেবীর মন খারাপ করা হাঁটুমোড়া ছায়া ছিল দেখছিলাম! সারা রাত কাল ছায়ারা ঘুরেছে একা। না দেখার তৃপ্তি আছে, দেখার আনন্দের চেয়েও। আমরা গাছ দেখি, পাতা দেখি—গাছের কষ্ট দেখি না। শিকড়ের আর্তনাদ দেখি না। পাতার শিরায় যেসব দুঃখরেখা সেসব দেখি না। এমনকি ভাবিও না তাদের অবহেলা ও উপেক্ষার কথা। আমরা সবাই ফুটফুটে বাচ্চার মুখের হাসির মতো আমাদের মুখ দেখতে চাই। আমরা জানি না, বেদনার শতমুখ আমাদের মুখে বসে কেমন মাতম করছে! কাল রাতে ছায়ারা জেগেছিল। তোমাকে ঘুমাতে না দেওয়ার অজুহাতে। তুমি ছিলে মাটির নিচে শিকড়ের নীরবতার মতো গহন ও বিস্তৃত ঘুমে।

ইচ্ছা

কবিতাও শাওয়ারে যাইতে চায়, তোমারে শাওয়ারে দেখতে ইচ্ছা করে। সন্ধ্যার শাওয়ার নরম হয় কি না। কত কিছু ইচ্ছা হয় হাওয়ামুখর সন্ধ্যায়। বেল ফল হিসেবে অনেক ভালো, সুস্বাদু, পরোপকারী; তারে চামড়াসহ খাইতে কত শখ, আজও মেটে নাই। তোমারে দেখার কত বাসনা! মিঠাপুকুর কেন যাওয়া হয়নি, আজও তারও কোনো কারণ নাই; অথচ দিল্লি, লরা দত্ত, আফ্রিকা, গ্রেভসের কালো কালো উত্তাপ, রাজ্য ও রাষ্ট্রে কত শাদা প্রেম রাষ্ট্র হয় জানা হয় নাই। এত কিছু না হওয়ার সাথে তোমারে দেখতে চাওয়ার যেসব মিল, তারাও পরাবাস্তব, উড়ালপ্রিয় বৃষ্টির আগে-পরে। আগে পরে কত প্লেন ওঠানামা করে, কত মন ক্ষয় হয় পূর্ণ বিষাদে, কতজন প্রিয়াঙ্গনে জড়ায়া ঘুমাতে যায়। আর তোমারে, বিউটি লাক্স, দুরন্ত কসমেটিকস, উড়ন্ত বডি স্প্রে, খয়েরি লিপস্টিক, মাশকারার আনন্দ আর কত রকমের জেল, প্রিয় রেভলনসামগ্রী, আহা জেলিফিশ, কত ভাব লয়া ঘনিষ্ঠভাবে কত উপচারে দেখে দেখে খুশিতে ক্লান্ত হয়! এই সব সুগন্ধে তাজা ভাব জাগে, মনকাড়া কবিতাও টাওয়ারে উঠে শাওয়ারে যাইতে চায়;—এই চাওয়া নিরপরাধ, ঘনিষ্ঠ, আপনায়- তোমারে শাওয়ারে চায়। অথচ আমি কোনো দিন একটাও ধরি নাই চড়াই, শালিকের লেজ। আর তোমার উত্তেজে দ্বিত্ব সত্তায় পরাবাস্তব শরীরের দিকে হেলে পড়ি, সমুদ্রজলের উচ্ছ্বাসের সমান তোলপাড়, পাড়ে পাড়ে ফেনার সমান মনে তোমার শাওয়ার আমারে ভাসায়া ডুবায়া কই থিকা কই লয়া যায়! আমার আর কিচ্ছু ইচ্ছা করে না তোমারে শাওয়ারে ছাড়া।

লীলা

আমি লীলা পরাই ছন্দে ছন্দে ভাব; আমি মরি মরি হেসে। পরাই ছন্দে হাসি, নৃত্যে ছড়াই গান সন্ধ্যাভাব বিলাসে। আমি লীলা আমার পায়ে পায়ে মদ, মত্ত চোখের উন্মাদনা আমার কণ্ঠে উথাল ঢেউ, গন্ধে বর্ণ ভাসাই অভিলাষে। আমি লীলা আনীলা পরানসখি, জড়াই বায়ু দেহে, সস্নেহে বিষ পুড়াই অন্তর, ভাব অভিনব, ওড়াই অনায়াসে। আমি লীলা দুর্লভ সংকেতে রেখে যাই সবুজ চিহ্ন, আগুন, আন্ধার, আলোর তিয়াসে। আমি লীলা সর্বনামে আপনায় আপন মদে, আপনার মাঝে আমি অরূপে রূপরে সাজাই সকাশে। আমি লীলা করি। হাসি। ভাসিয়া বেড়াই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ