পুতিনের সঙ্গে খুব শিগগির বৈঠক হতে পারে, বললেন ট্রাম্প
Published: 17th, February 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল রোববার বলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে খুব শিগগির তাঁর দেখা হতে পারে। ট্রাম্পের বিশ্বাস, পুতিন সত্যিই ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ করতে চান।
রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টায় সৌদি আরবের রিয়াদে রাশিয়ার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মার্কিন প্রতিনিধিদলের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও অবশ্য এক সাক্ষাৎকারে এ বৈঠক নিয়ে প্রত্যাশার কথা কম করেই ব্যক্ত করেছেন। সিবিএসকে রুবিও সাক্ষাৎকার দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মাথায় ট্রাম্প সাংবাদিকদের কাছে পুতিনের সঙ্গে দ্রুত দেখা হওয়ার আশা প্রকাশ করেন। ট্রাম্প বলেন, দিন-তারিখ ঠিক হয়নি, তবে খুব শিগগির এটা হতে পারে।
এয়ারফোর্স ওয়ান উড়োজাহাজে বসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে নিযুক্ত মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফসহ তাঁর প্রতিনিধিরা আন্তরিকভাবে আলোচনা করছেন। উইটকফ সম্প্রতি প্রায় তিন ঘণ্টা পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
পুতিন সম্পর্কে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি, তিনি লড়াই বন্ধ করতে চান।’
পুতিন পুরো ইউক্রেনের দখল নিতে চান বলে ট্রাম্প মনে করেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এটা তাঁর কাছে আমারও প্রশ্ন। তিনি যদি এমনটা করেন, তবে আমি অনেক বড় সমস্যার মধ্যে পড়ে যাব। আমি মনে করি, তিনি এর অবসান চান এবং তাঁরা দ্রুতই এটা শেষ করতে চান। তাঁরা দুজনই এটা চান।’
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ইতিমধ্যে গতকাল বলেন, রাশিয়া দুর্বল ন্যাটোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। এ অবস্থায় ন্যাটোকে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন দেওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন।
অবশ্য ট্রাম্প বলেন, ইউক্রেনীয় নেতার বার্তা সম্পর্কে তিনি বিন্দুমাত্র উদ্বিগ্ন নন।
মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের ফাঁকে সিবিএসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের এই শীর্ষ কূটনীতিক বলেন, ‘শান্তিপ্রক্রিয়ার বিষয়টি এক বৈঠকেই হয়ে যাওয়ার মতো কিছু নয়।’
রিয়াদে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে মার্কিন প্রতিনিধিদলকে নেতৃত্ব দেবেন রুবিও। তবে সেখানে ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। রুবিও বলেছেন, মস্কো কাদের পাঠাচ্ছে, সে ব্যাপারেও তিনি নিশ্চিত নন।
কোনো কিছুই এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি বলে উল্লেখ করেছেন রুবিও।
স্টিভ উইটকফ ও যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ওয়াল্টজ—দুজনই আলোচনায় অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
গত বুধবার ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে দীর্ঘ সময় ধরে ফোনালাপ হয়েছে। সেখানে তাঁরা অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি আলোচনা শুরু করতে সম্মত হন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেনকে ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে, তা মেনে নেবেন না।
গত শনিবার রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে ফোনে রুবিওর কথা হয়েছে। রুবিও বলেন, ‘একটি ফোনালাপ শান্তি প্রতিষ্ঠা করে না।’
গতকাল এনবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেন, পুতিন সারাক্ষণ মিথ্যা কথা বলেন। আলোচনার শরিক হিসেবে তাঁকে বিশ্বাস করা যায় না।
রুবিও বলেন, তিনি মনে করেন, ভূরাজনীতির ক্ষেত্রে কারওরই কাউকে বিশ্বাস করা উচিত নয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ট র ম প বল ন ইউক র ন র
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।