ইয়াবা-কাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগ, কক্সবাজারের পুলিশ সুপারকে প্রত্যাহার
Published: 17th, February 2025 GMT
ইয়াবা চালান জব্দ এবং বিক্রির টাকা ভাগ-বাঁটোয়ারায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ সোমবার পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (প্রশাসন) কাজী মো. ফজলুল করিম স্বাক্ষরিত এক স্মারকে পুলিশ সুপারকে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার কাছে দায়িত্বভার অর্পণ করে আগামীকাল মঙ্গলবার পুলিশের সদর দপ্তরে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গতকাল একটি জাতীয় দৈনিকে ‘মিলেমিশে সাড়ে ৩ লাখ পিস বিক্রি-এসপির ইয়াবা কারবার’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে ১০ কোটি টাকার ইয়াবা ২ কোটি ৯ লাখ টাকায় বিক্রি করে ভাগাভাগি, সোর্স নামধারী চাকরিচ্যুত দুই কনস্টেবলকে ঘুষের ভাগ হিসেবে ১ লাখ ৩০ হাজার ইয়াবা দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৬ জানুয়ারি ভোরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) চকরিয়ার ডুলাহাজারা এলাকা থেকে ৪ লাখ ৯০ হাজার ইয়াবাসহ টয়োটা কোম্পানির ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো গাড়ি জব্দ করা হয়। এ সময় গাড়িতে থাকা চারজনকে আটক করে ওসি ডিবি জাহাঙ্গীর আলম, এসআই সমীর গুহর নেতৃত্বাধীন একটি দল। এ সময় ১ কোটি ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে আটক তিন ইয়াবা কারবারিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় এসআই সমীর গুহ বাদী হয়ে গাড়িচালক ইসমাইলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে চকরিয়া থানায় ১ লাখ ৪০ হাজার ইয়াবা জব্দের মামলা করেন। উদ্ধার ইয়াবা থেকে ৩ লাখ ৫০ হাজারটি আত্মসাৎ করা হয়।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করেও পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহ ও ডিবি পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলমের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে জেলা পুলিশের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এসপির ইয়াবা কারবারে জড়িত থাকার প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর তাঁকে (এসপিকে) পুলিশের সদর দপ্তরে তলব করা হয়েছে। ইয়াবা–কাণ্ডের ঘটনা তদন্তে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। কাল সকালে পুলিশ সুপার কক্সবাজার ত্যাগ করবেন। পুলিশের শীর্ষ পদের একজন কর্মকর্তা ইয়াবা–কাণ্ডে জড়িত থাকার ঘটনায় পুরো পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি ও সম্মানহানি ঘটেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের আরেকজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, গত ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। পরের দিন কক্সবাজারে নিয়োগ পান পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ। যোগ দেওয়ার পর থেকে তিনি গণমাধ্যম থেকে নিজেকে দূরে রাখতেন।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, ইয়াবার চালানটি টেকনাফ থেকে গাড়িতে লুকিয়ে চট্টগ্রামে পাচার করা হচ্ছিল। গ্রেপ্তার দেখানো গাড়িচালক মো.
মামলার এজাহারে বলা হয়, টেকনাফ-উখিয়া থেকে ইয়াবাগুলো সংগ্রহ করে চট্টগ্রাম ও ঢাকায় পাচার করা হচ্ছিল। মামলার তদন্তকারীর দায়িত্ব পান অভিযুক্ত ডিবি পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রাকসুতে হল সংসদ নির্বাচনে ৩৯ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) হল ছাত্র সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা ৩৯ প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। এর মধ্যে মেয়েদের ৬টি হলে ৩৬ জন এবং ছেলেদের ১টি হলে ৩ জন রয়েছেন। এছাড়া, মেয়েদের ৪টি হলে ১টি করে পদে কেউ মনোনয়ন উত্তোলন না করায় পদগুলো ফাঁকা থাকছে।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাকসুর প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রফেসর ড. মো. সেতাউর রহমান এ তথ্য জানান।
আরো পড়ুন:
রাকসু: ম্যানুয়াল ভোট গণনাসহ ১২ দাবি ছাত্রদলসহ ২ প্যানেলের
রাকসু নির্বাচন: শেষ দিনে ছাত্রদল নেতার প্রার্থিতা প্রত্যাহার
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতদের মধ্যে বিজয়-২৪ হলে ৩ জন, মন্নুজান হলে ১ জন, রোকেয়া হলে ৬ জন, তাপসী রাবেয়া হলে ৩ জন, বেগম খালেদা জিয়া হলে ১০ জন, রহমতুন্নেসা হলে ৯ জন এবং জুলাই-৩৬ হলে ৭ জন রয়েছেন।
এছাড়া, বেগম খালেদা জিয়া হলে সহকারী বিতর্ক ও সাহিত্য সম্পাদক পদে একজন এবং রোকেয়া, জুলাই-৩৬ ও রহমতুন্নেসা হলে নির্বাহী সদস্য পদে ১টি করে ৩টিসহ মোট ৪টি পদে কেউ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেননি। ফলে, পদগুলো ফাঁকা থাকবে।
পদ ফাঁকা থাকার বিষয়ে রাকসু, হল ছাত্র সংসদ ও সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রফেসর ড. মো. সেতাউর রহমান বলেন, “যে পদগুলো ফাঁকা আছে, সেগুলো ছাড়াই হল সংসদ চলবে। অন্য কোনোভাবে সেগুলো পূরণ করার উপায় নেই।”
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি ও হল সংসদ নির্বাচনে মোট ৯০৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রার্থীদের মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদে ২৪৮ জন, সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনে ৫৮ জন ও ১৭টি আবাসিক হলে ৫৯৭ জন রয়েছেন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় সংসদে সহ-সভাপতি ভিপি পদে ১৮ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ১৩ জন, সহকারী সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ১৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এছাড়া, ১৭টি আবাসিক হলে ভিপি পদে ৬১, জিএস পদে ৫৮ জন ও এজিএস পদে ৫৭ জন রয়েছেন। এদের মধ্যে মেয়েদের ৬টি আবাসিক হলে ভিপি পদে ১৬ জন, জিএস পদেও ১৬ জন ও এজিএস পদে ১৫ জন লড়ছেন।
ঢাকা/ফাহিম/ইভা