সাবেক কয়েকজন সংসদ সদস্যের (এমপি) আমদানি করা ২৪টিসহ মোট ৪৪ গাড়ি নিলামে উঠেছে। এমপিদের গাড়িগুলো টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার মডেলের। বিলাসবহুল এসব গাড়ির বেশির ভাগেরই দাম শো-রুমে ৮ কোটি টাকার বেশি। নিলামে সর্বোচ্চ তিন কোটি ১০ লাখ টাকা দর উঠেছে মাত্র একটি গাড়ির। সাবেক এমপিদের আমদানি করা ৯টি ল্যান্ড ক্রুজারের দামই দেননি কোনো ক্রেতা। তাদের আনা ২৪ গাড়ির মধ্যে ১৫টিতে আগ্রহী ক্রেতা থাকলেও তারা সংরক্ষিত দামের অর্ধেকেরও কম দর দিয়েছেন।

সোমবার টেন্ডার বাক্স উন্মুক্ত করে এ ঘটনায় হতবাক হন কাস্টমস কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, প্রত্যাশিত দামের চেয়ে অনেক কম দর পাওয়ায় গাড়িগুলো আবার নিলামে তোলা হতে পারে। এসব গাড়ির ভবিষ্যৎ নির্ধারণে সিদ্ধান্ত চাওয়া হবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডেরও (এনবিআর)। 

আমদানি করা পণ্য জাহাজ থেকে খালাস করে বন্দর ইয়ার্ডে রাখার ৩০ দিনের মধ্যে আমদানিকারককে সরবরাহ নিতে হয়। এ সময়ের মধ্যে কোনো আমদানিকারক পণ্য সরবরাহ না নিলে তাকে নোটিশ দেয় কাস্টমস। নোটিশ দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে পণ্য সরবরাহ না নিলে নিয়ম অনুযায়ী সেটি নিলামে তুলতে পারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানি করেছিলেন তৎকালীন এমপিরা। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ৬ আগস্ট সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়। শুল্কমুক্ত সুবিধাও বাতিল করে এনবিআর। তাতে এসব গাড়ি ফেলে যান সাবেক এমপিরা। তাদের ২৪টিসহ এ দফার প্রথম ধাপে মোট ৪৪টি গাড়ি বিক্রির জন্য নিলামে তোলা হয়। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস এ নিলাম করে। আগ্রহী ক্রেতার সংখ্যা বাড়াতে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনলাইনে এবং ঢাকা-চট্টগ্রামে সরাসরি বাক্সে নিলামের মাধ্যমে দর গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে ২ থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গাড়িগুলো নিলামে অংশগ্রহণকারীদের জন্য সরাসরি প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়। 

কাস্টমস কর্তৃপক্ষ গত ২৭ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে সাবেক এমপিদের ২৪টিসহ মোট ৪৪টি গাড়ি নিলামে বিক্রির ঘোষণা দেয়। একইসঙ্গে আগ্রহী ক্রেতাদের কাছ থেকে নিলামের মাধ্যমে প্রস্তাবিত দর নিতে থাকে। ৪৪টির মধ্যে ৩৫টি গাড়ির বিপরীতে ১৪৩টি আবেদন ও দরপ্রস্তাব জমা পড়ে। এর মধ্যে সাবেক এমপিদের ২৪টি গাড়ির মধ্যে টয়োটা ব্র্যান্ডের ৯টি ল্যান্ড ক্রুজারের জন্য কোনো আবেদন ও দরপ্রস্তাব জমা পড়েনি। বাকি ৩৫টি গাড়ির মধ্যে সর্বোচ্চ দর পড়েছে সাবেক এমপি এস এম কামাল হোসেনের আমদানি করা গাড়ির। এটির দর পড়েছে তিন কোটি ১০ লাখ টাকা। শুল্কমুক্ত সুবিধার বাইরে আমদানি করা ২০টি গাড়ির দর উঠেছে দুই লাখ থেকে এক কোটি ৩৭ লাখ টাকার মধ্যে। অথচ কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আমদানি ব্যয় ও শুল্ক মিলিয়ে গাড়িগুলোর সংরক্ষিত দর নির্ধারণ করে ৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। প্রথম নিলামে অংশ নিয়ে গাড়ি কিনতে হলে তাকে রিজার্ভ ভ্যালুর ৬০ শতাংশ বা তার বেশি সর্বোচ্চ দরদাতা হতে হবে। এ হিসাবে প্রতিটি গাড়ি কিনতে ন্যূনতম ৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা দর দিতে হবে। ২৫ শতাংশ করসহ এই গাড়ির সর্বনিম্ন দাম পড়ার কথা ছিল ৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা।

নিলামে অংশ নেওয়া এস এ ট্রেডিং অ্যান্ড কোম্পানির স্বত্বাধিকারী মো.

ইব্রাহিম বলেন, এবার খুব অল্প দাম দিয়ে বিড ধরে রাখছি; যেন পরবর্তী নিলামে এবারের দেওয়া দামের চেয়ে কিছু বেশি দিয়ে গাড়িগুলো নিতে পারি।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম শাখার সহকারী কমিশনার সাকিব হোসেন বলেন, সাবেক এমপিদের আনা ২৪টি গাড়ি একবারেই নতুন। আমাদের প্রত্যাশা ছিল নিলামে ভালো দাম মিলবে। প্রত্যাশার অর্ধেক দামও মেলেনি। রিজার্ভ ভ্যালুর ৬০ শতাংশ কাভার করেছে এমন গাড়ি মাত্র ১৪-১৫টি। নিলামে ওঠা গাড়ির ব্যাপারে তাই আলোচনা হবে নিলাম কমিটির পরবর্তী সভায়। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে এনবিআর।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ব ক এমপ দ র আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়েছে, নিম্নমুখী চালের দাম

ঈদের বন্ধের আমেজ কাটতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে চট্টগ্রামের পাইকারি ও খুচরা বাজারগুলো। ক্রেতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারগুলোতে বেড়েছে সবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের সরবরাহ। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কয়েক দিনের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে সবজির দাম। পেঁয়াজ, রসুন ও চালের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও নিম্নমুখী।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার পর নগরের কাঁচাবাজারে সবজির সরবরাহ কমে যায়। ফলে দাম ছিল কিছুটা বাড়তি। গত রোববার ও সোমবারের দিকে নগরের আড়তগুলোতে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৬০ টাকা দরে। অধিকাংশ সবজির দামও ৪০ টাকার আশপাশে ছিল। তবে গত মঙ্গলবার থেকে আবারও বাজারে পুরোদমে সবজির সরবরাহ শুরু হয়েছে। যার কারণে দাম কমতে শুরু করেছে।

আজ শুক্রবার নগরের রিয়াজউদ্দিন বাজারের পাইকারি আড়তে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ২০ থেকে ৪০ টাকা দরে। বেশির ভাগ সবজির দাম প্রতি কেজি ১০ থেকে ৩৫ টাকা। তবে খুচরা বাজারগুলোতে প্রায় দ্বিগুণ দামে সবজি বিক্রি হতে দেখা যায়। নগরের বহদ্দারহাট, চকবাজার, সাব এরিয়া ও কাজির দেউড়ি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব বাজারে অধিকাংশ সবজির দাম ৬০ টাকার বেশি। লাউ, মিষ্টিকুমড়া ও ফুলকপির দাম কিছুটা কম। এসব সবজির দাম ৫০ টাকার আশপাশে। খুচরা বাজারগুলোতে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা কেজি দরে। পরিবহন খরচ ও আগে কেনার অজুহাতে বাড়তি দাম নিচ্ছেন বিক্রেতারা। রিয়াজউদ্দিন বাজারের আড়তদার নুরুল ইসলাম বলেন, বাজারে সব সবজির দাম কম। কিন্তু খুচরা ব্যবসায়ীদের কারণে ভোক্তাদের ভোগান্তি হচ্ছে। আড়তের দামের দ্বিগুণ দামে তাঁরা সবজি বিক্রি করছেন।

সবজির বাজারের পাশাপাশি পেঁয়াজ, রসুন ও চালের দামও নিম্নমুখী। খাতুনগঞ্জের পাইকারি আড়তে আজ পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৫২ টাকা দরে। খুচরা পর্যায়ে দাম ছিল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি। অন্যদিকে রসুনের কেজি আড়তে ছিল ৮৫ থেকে ১১০ টাকা। খুচরায় সেটি ১০০ থেকে ১৩০ টাকা।

পাহাড়তলী চালের আড়তে মোটা চাল (গুটি, স্বর্ণা) কেজিপ্রতি ৪৮ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে জিরাশাইল ৭২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত তিন দিন আগ থেকে চালের বাজার কিছুটা নিম্নমুখী বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) চালের দাম কমেছে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন বলেন, চালের সরবরাহ যথেষ্ট আছে। চালের দাম বাড়ার আশঙ্কা নেই এখন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুপেয় পানির সংকট, কাজে আসছে না কোটি টাকার প্রকল্প
  • নেপাল থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু
  • সুপারম্যানের কাছে আছে পৃথিবীর শক্তি সংকটের সমাধান
  • ইরান হরমুজ প্রণালি বন্ধ করলে কী কী ঘটতে পারে?
  • ইরান–ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলা রূপ নিতে পারে দীর্ঘমেয়াদি সংঘাতে
  • ইরানে হামলার আগে গোপনে ইসরায়েলে হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
  • ভারত থেকে আইফোন রপ্তানি কেন বাড়ছে
  • সুনামগঞ্জে তাজা গ্রেনেড উদ্ধারের পর নিষ্ক্রিয় করল সেনাবাহিনী
  • কমেছে সবজির দাম
  • বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়েছে, নিম্নমুখী চালের দাম