প্রিয় শিক্ষার্থীরা, আজ তোমাদের জীববিজ্ঞান ১ম পত্র থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করা হলো
১. উদ্ভিদের পুষ্টির জন্য মাইক্রো এলিমেন্ট কোনটি?
ক. ক্যালসিয়াম খ. কার্বন
গ. সালফার ঘ. কপার
২. গ্লাইকোলাইসিস প্রক্রিয়ায় ব্যয়িত শক্তি কত অণু ATP
ক. ২ অণু খ. ৪ অণু গ. ৬ অণু ঘ. ৮ অণু
৩. C4 চক্রের প্রথম স্থায়ী যৌগ কোনটি?
ক.
খ. অক্সালো অ্যাসিটিক এসিড
গ. পাইরুভিক এসিড
ঘ. ম্যালিক এসিড
৪. ফার্মেন্টেশন প্রক্রিয়ায় নিচের কোন এনজাইমটি সবচেয়ে বেশি ক্রিয়াশীল হয়?
ক. জাইমেজ
খ. কাইনেজ
গ. আইসোমারেজ
ঘ. হাইড্রোজিনেজ
৫. শ্বসনের কোন পর্যায়ে O2-এর প্রয়োজন হয়?
ক. গ্লাইকোলাইসিস
খ. অ্যাসিটাইল Co-A
গ. ক্রেবস চক্র
ঘ. ইলেকট্রন প্রবাহ তন্ত্র
৬. সক্রিয় পরিশোষণের ক্ষেত্রে নিচের কোনটি সঠিক?
ক. এনজাইমের ভূমিকা নেই
খ. শ্বসন হার বৃদ্ধি পায়
গ. বিপাকীয় শক্তির প্রয়োজন হয় না
ঘ. অ্যানায়ন ও ক্যাটায়ন পৃথকভাবে শোষিত হয়
৭. উদ্ভিদ মাটি থেকে কোনটি নেয়?
ক. নাইট্রোজেন খ. হাইড্রোজেন
গ. অক্সিজেন ঘ. কার্বন
৮. ক্রেবস চক্রে গ্রাহক কোনটি?
ক. অক্সালো অ্যাসিটিক এসিড
খ. সাইট্রিক এসিড
গ. ফিউমারিক এসিড
ঘ. ম্যালিক এসিড
৯. কোন আয়ন সবচেয়ে দ্রুতগতিতে শোষিত হয়?
ক. K+ খ. Ca++ গ. SO42- ঘ. NA+
১০. আয়ন বাহক মতবাদ প্রদান করেন কোন বিজ্ঞানী?
ক. Hopeman খ. Steward
গ. Tumer ঘ. Vander Honet
১১. বিষমপৃষ্ঠ পাতার কোন ত্বকে পত্ররন্ধ্র পাওয়া যায়?
ক. ঊর্ধ্বত্বক খ. নিম্নত্বক গ. বহিঃত্বক ঘ. অন্তঃত্বক
১২. পাতায় ক্লোরোফিল অণু সৃষ্টির জন্য কোন মৌলটি অপরিহার্য?
ক. ম্যাগনেশিয়াম খ. ক্যালসিয়াম
গ. সোডিয়াম ঘ. পটাশিয়াম
১৩. কোনটি শক্তি রূপান্তরের অঙ্গাণু?
ক. মাইটোকন্ড্রিয়া খ. ক্লোরোপ্লাস্ট
গ. লাইসোজোম ঘ. রাইবোজোম
১৪. কোন উদ্ভিদে দুই ধরনের ক্লোরোপ্লাস্ট
পাওয়া যায়?
ক. আম খ. পাট গ. আখ ঘ. কলা
১৫. সালোকসংশ্লেষণের আলোক পর্যায়ে ক্লোরোফিল ফোটন শোষণ করে কোনটি তৈরি করে?
ক. ATP খ. কার্বন গ. অ্যাসিড ঘ. NA+
১৬. নিচের কোনটিকে ‘বায়োলজিক্যাল কয়েন’ বলে?
ক. DNA খ. RNA গ. ADP ঘ. ATP
১৭. ট্রাইকার্বোক্সিলিক চক্র নিচের কোনটি?
ক. গ্লাইকোলাইসিস খ. ক্রেবস চক্র
গ. C3 চক্র ঘ. C4 চক্র
১৮. কার্বোহাইড্রেট থেকে ল্যাকটিক এসিড উৎপন্ন হয় কোন প্রক্রিয়ায়?
ক. সালোকসংশ্লেষণ খ. অবাত শ্বসন
গ. প্রস্বেদন ঘ. অভিস্রবণ
সঠিক উত্তর: ১. ঘ ২. ক ৩. খ ৪. ক ৫. ঘ ৬. খ ৭. ক ৮. ক ৯. ক ১০. ঘ ১১. খ ১২. ক ১৩. খ ১৪. গ ১৫. ক ১৬. ঘ ১৭. খ ১৮. খ
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সমান কাজ করেও কম মজুরি পান আদিবাসী নারীরা
দিন যায়, আসে নতুন দিন। প্রযুক্তি আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় বদলে যায় অনেক কিছুই। শুধু বদল হয় না সমাজের পিছিয়ে পড়া কিছু জনগোষ্ঠীর ভাগ্য। বিশেষ করে, আদিবাসী নারী শ্রমিকরা বঞ্চিত হচ্ছেন যুগ যুগ ধরে।
সমালোচনার মুখে ও সময়ের প্রয়োজনে অনেক ক্ষেত্রেই লিঙ্গ বৈষম্য কমেছে। নারী-পুরুষের মজুরি বৈষম্য দিনে দিনে কমছে। কিন্তু, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাঁওতাল পল্লীর নারী শ্রমিকরা ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন আগের মতোই।
দিনাজপুর-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাটামোড় এলাকার সাঁওতাল পল্লী জয়পুর পাড়া। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গ্রামটি দেখতে বেশ সুন্দর। নিরিবিলি পরিবেশ, চারদিকে সবুজের সমারোহ। সবুজ ধানক্ষেত আর কিছু দূর পর পর সাঁওতালদের বাড়ি। কোথাও কোথাও উঁচু টিলার মাঝে বড় বড় পুকুর। পুকুর পাড়ে কিছু সাঁওতাল ঘর বেঁধে থাকছেন। পাশের বড় মাঠে খেলা করছে কিছু আদিবাসী শিশু।
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে পেশা বদলাচ্ছেন অনেক শ্রমিক
ছোট্ট হাতে সংসারের হাল
পল্লীতে গিয়ে দেখা যায়, নারীদের পাশাপাশি পুরুষদের কেউ কেউ বাঁশের চটা তুলছেন, কেউ রান্নার জন্য গাছের ডাল কাটছেন। বাড়িতে পালন গরু-ছাগল দেখভাল করছেন পুরুষ ও নারী উভয়ই। নারীদের অধিকাংশই গরু-ছাগল চড়ানোসহ বিভিন্ন কাজে বাড়ির বাইরে। যদিও ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হয়নি তেমন।
কয়েকজন সাঁওতাল নারীকে কাজের ফাঁকে বিশ্রাম নিতে দেখা যায়। তারদের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তারা রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “আমরাও পুরুষের মতো জমিতে বীজ বপন, চারা উত্তোলন, রোপণ, সার দেওয়া, নিড়ানি ও ধান কেটে ঘরে তোলা পর্যন্ত সব কাজ করি। কিন্তু, এখনো সেই আগের মতোই মজুরি বৈষম্যের শিকার হচ্ছি আমরা।”
গোবিন্দগঞ্জের সাপমারা ইউনিয়নের জয়পুর পাড়া গ্রামের কর্মজীবী সাঁওতাল নারী মমতা হেমব্রম। তিনি বলেন, “পুরুষরা কাজ করে মজুরি পান ৫০০ টাকা আর আমাদেরকে দেওয়া হয় ৪৫০ টাকা। ক্ষেত-খামারের কাজ অনেক কঠিন। পুরুষ-নারী তো সমান কাজ করি। আমরা সমান মজুরি চাই, কিন্তু চাইলেও তো তারা দেন না।”
একই গ্রামের সাবিনা হাসদা। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, “এই অঞ্চলে অধিকাংশ পুরুষ ও নারী ধান-আখ ও মাছ চাষ ও গরু-ছাগল লালনপালন করেন। কাজ একই হলেও আমাদের মজুরি পুরুষের চেয়ে কম। আমরা সমান মজুরি চাই।”
সুরুজ মনি টুডু নামের আরেক নারী বলেন, “আমরা পুরুষের সমান কাজ করি, তাই আমরা এই মে দিবস থেকেই সমান মজুরি চাই। আপনার মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের কাছে সমান মজুরি নিশ্চিত করার দাবি করছি।”
সাপমারা গ্রামের দেলু মারমা বলেন, “আমাদের সব কাজই কৃষিনির্ভর। সে কারণে পুরুষের পাশাপাশি নারীদের কাজ করতে হয়। তা না হলে সংসার চলে না। আমরাও চাই, পুরুষ এবং নারী যেন সমান মজুরি পান।”
পুকুর পাড়েই বাস করেন অমেদা হাজদা। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, “সব জায়গায় পুরুষের দাম বেশি, নারীদের দাম কম। সে কারণে তাদের মজুরি বেশি, আমাদের কম। আমাদেরকেও পুরুষের সমান দাম দেবে, সমান মজুরি দেবে, এটাই আমাদের দাবি।”
সাহেবগঞ্জ-বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে রাইজিংবিডিকে বলেন, “এই এলাকার অধিকাংশ নারী তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন নন। কর্মপরিবেশ, কর্মঘণ্টা বিষয়ে তাদের ধারণাই নেই। অনেকে জানলেও কাজ হারানোর ভয়ে ন্যায্য মজুরির বিষয়ে মুখ খুলতে চান না। সংগঠনের পক্ষ থেকে আমরা সমঅধিকারের জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছি।”
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ গাইবান্ধার সাধারণ সম্পাদক রিকতু প্রসাদ বলেন, “গাইবান্ধার নারীরা আজও মজুরি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে, গোবিন্দগঞ্জের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর নারীরা। নারী-পুরুষ সবাই শ্রমিক, বৈষম্য করতেই তাদের আলাদা চোখে দেখা হয়। মে দিবসে মুখে যতই বলি না কেন, পুরুষশাসিত সমাজে এখনো পরিবর্তন আসেনি। সমাজ থেকে মজুরি বৈষম্য দূর করার জোর দাবি জানাই।”
বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিলুফার ইয়াসমিন শিল্পী রাইজিংবিডিকে বলেন, সব ক্ষেত্রেই নারীরা অবহেলিত এবং বঞ্চিত। মুখে সবাই নারীর অধিকার নিয়ে কথা বলেন, কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় উল্টো। সাঁওতাল তথা আদিবাসী নারীদের সমান মজুরি পাওয়া সাংবিধানিক অধিকার। তারা এ দেশেরই নাগরিক। তাদের সমান মজুরি নিশ্চিত করতে করা প্রয়োজন।
ঢাকা/মাসুম/রফিক