ঢাকায় গতকাল রাত অনেকটা আতঙ্কে কেটেছে রাজধানীবাসীর। রোববার রাত ৮টার দিকে ধানমন্ডির শংকরে একদল সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়া সেখানে আতঙ্ক তৈরি হয়। পরে বনশ্রী এলাকায় ব্যবসায়ীকে গুলি করে স্বর্ণালংকার ও টাকা ছিনতাই করে অস্ত্রধারীরা।
গোড়ানে একজনকে কুপিয়ে সবকিছু ছিনিয়ে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। রাত ১টার দিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবিতে ঢাবিতে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এসব ঘটনা নিয়ে রাত ৩টার দিকে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
ধানমন্ডিতে যা ঘটে
রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ধানমন্ডির শংকর আলী হোসেন বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে ১০ থেকে ১২ জনের একদল সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয়। এতে ওই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা মসজিদে মাইকে ঘোষণা দেন যে, মহল্লায় ডাকাতদল প্রবেশ করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দলটি আশপাশের দোকানগুলোতে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছিল। আতঙ্কে ব্যবসায়ীরা দ্রুত দোকান বন্ধ করে দেন এবং সাধারণ মানুষ নিরাপদ স্থানে চলে যান। প্রায় পাঁচ-দশ মিনিট অবস্থান করার পর সশস্ত্র দলটি এলাকা ত্যাগ করে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, এলাকাবাসী নিরাপত্তার জন্য পুলিশের সহযোগিতা চান। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ডিএমপি ধানমন্ডি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার শাহ মোস্তফা তারিকুজ্জামান বলেন, ধানমন্ডি এলাকায় কয়েকটি মোটরসাইকেলে ১৫-২০ জন তরুণ আসে। তবে তাদের হাতে কোনো অস্ত্রশস্ত্র ছিল না। এছাড়া ধানমন্ডি এলাকায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
তিনি আরও বলেন, সন্ধ্যা ৭টার দিকে ১৫-২০ জন তরুণ ধানমন্ডির শংকর এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় হাজী ইউসুফ হাইস্কুলের পাশের গলির মুখে চা খাওয়ার জন্য দাঁড়ান। এ সময় নিজেদের মধ্যে কথা বলছিলেন। এটা দেখে পাশের কোন ব্যক্তি মসজিদের মুয়াজ্জিনকে বলেন এখানে ডাকাত এসেছে। তারপরে সে নিজের মতো করে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেয়। এরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ যাচাই করে। সেখানে দেখতে পায় এসব তরুণদের হাতে কোন ধরনের অস্ত্র নেই। তারা নিজেদের মধ্যে কথা বলতে বলতে চলে যান।
বনশ্রীতে যা ঘটে
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ব্যানার, তদন্তের দাবিতে প্রক্টর অফিসে একদল শিক্ষার্থী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কলাভবনের ‘শ্যাডোতে’ নিষিদ্ধঘোষিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একটি ব্যানারের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এর প্রতিবাদে শুক্রবার রাতে একদল শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেন। তবে শেষ পর্যন্ত মিছিল কর্মসূচি স্থগিত করে ৯-১০ জন শিক্ষার্থীর একটি দল সহকারী প্রক্টরদের সঙ্গে আলোচনা করে।
আলোচনা শেষে রাত ৯টার দিকে প্রক্টর অফিসের সামনে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের ব্যানার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জন্য লজ্জাজনক। তারা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্য সেন হল সংসদের সহসভাপতি (ভিপি) আজিজুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের আনাগোনা আমাদের বারবার ব্যথিত করছে। প্রশাসনের কাছে যখনই জানতে চাই, তারা বলে, তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু সেই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সম্পর্কে আমরা আজও জানতে পারিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী শেখ হাসিনার পক্ষে মিছিল করেছেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন তাঁদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। (২০২৪ সালের) ১৫ জুলাই হামলায় জড়িত ছাত্রলীগের বিচার এখনো পর্যন্ত আমরা দেখতে পাইনি।’
আজিজুল হক বলেন, ‘আমরা দেখতে পাই আমাদের প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা রাতের বেলা কলাভবনে বসে বাদাম খান। তাঁদের কাজ কি বাদাম খাওয়া? নাকি পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা? সেই প্রশ্ন আজকে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে রেখেছি।’
এই ছাত্রনেতা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আশ্বস্ত করেছে, একটি তদন্ত কমিটি গঠন করবে এবং পরবর্তী সময়ে সেই প্রতিবেদন তাঁদের কাছে পেশ করা হবে।